Sela Tunnel in Arunachal Peradesh is the new reason for India China Tension dgtl
India China Border Tension
১৩ হাজার ফুট উঁচুতে দুর্গম সুড়ঙ্গ! চিনকে জবাব দিতে ‘সেলা’ কি দিল্লির তুরুপের তাস?
সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশে সেলা সুড়ঙ্গের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার মাধ্যমে তাওয়াংয়ের মতো দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সুরক্ষিত হবে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
অরুণাচল প্রদেশে সম্প্রতি নতুন একটি সুড়ঙ্গের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার নাম সেলা টানেল। এই সুড়ঙ্গের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সুরক্ষিত হবে বলে দাবি।
০২১৯
অরুণাচল প্রদেশে চিনের সীমান্ত সংলগ্ন শহর তাওয়াং। ওই এলাকা অত্যন্ত দুর্গম। সেলা সুড়ঙ্গের মাধ্যমে সেই তাওয়াংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা আরও সহজ হয়েছে। যে কোনও আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতিতেই এই সুড়ঙ্গের মাধ্যমে তাওয়াংয়ের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করা যাবে।
০৩১৯
অরুণাচল সীমান্তে চিনের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ লেগেই থাকে। সেলা সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
০৪১৯
ইতিমধ্যে উত্তর-পূর্ব সীমান্তে চাপা উত্তেজনার আভাস মিলেছে। ভারত ওই এলাকায় সীমান্ত সুরক্ষিত করার জন্য বহু সৈন্য মোতায়েন করেছে। যার কড়া জবাব দিয়েছে চিন।
০৫১৯
প্রধানমন্ত্রী সেলা সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের এক দিন আগে চিন জানায়, সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন করে বিরোধের মোকাবিলা করা যাবে না। তবে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখাই তাদের উদ্দেশ্য বলে দাবি করে বেজিং।
০৬১৯
অসমের তেজপুর এবং অরুণাচলের তাওয়াংয়ের সংযোগরক্ষাকারী সড়কে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় সেলা সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে। সড়কপথে এই অংশের দূরত্ব ৩২৭ কিলোমিটার।
০৭১৯
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেলা সুড়ঙ্গের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কিন্তু তার পর থেকে নানা কারণে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজে দেরি হয়েছে। করোনা অতিমারি হয়ে উঠেছিল এই প্রকল্পের অন্যতম প্রতিবন্ধক।
০৮১৯
সেলা সুড়ঙ্গ প্রকল্পের জন্য মোট ৮২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রকল্পের অধীনে দু’টি সুড়ঙ্গ এবং একটি প্রায় নয় কিলোমিটারের রাস্তা রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার।
০৯১৯
দু’টি সুড়ঙ্গের মধ্যে প্রথমটি ৯৮০ মিটারের একটি ছোট সিঙ্গল-টিউব সুড়ঙ্গ। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য দেড় কিলোমিটার। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গের সঙ্গে জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে একটি সহকারী সুড়ঙ্গও রাখা হয়েছে।
১০১৯
অরুণাচল প্রদেশের সেলা সুড়ঙ্গ ভারতের কূটনীতিগত অবস্থানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি) কাছাকাছি।
১১১৯
অরুণাচলের প্রান্তে অবস্থিত তাওয়াংয়ের সঙ্গে এত দিন বাকি দেশের যোগাযোগের একমাত্র পথ ছিল সেলা পাস। সঙ্কীর্ণ ওই গিরিখাতের মাধ্যমেই তাওয়াংয়ে যেতে হত।
১২১৯
সেলা পাস হামেশাই তুষারপাত এবং ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। সে সময়ে তাওয়াং বাকি অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই সেলা পাসেরই ৪,২০০ মিটার গভীরে সেলা সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছে।
১৩১৯
দুর্গমতা এবং আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে তাওয়াংয়ের যে সমস্ত এলাকা বছরের বেশির ভাগ সময়েই অলক্ষ্যে থেকে যায়, সেলা সুড়ঙ্গ সেখানেও ভারতীয় জওয়ানদের পৌঁছে দেবে। ফলে ওই সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় চিনের বাড়বাড়ন্ত কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৪১৯
সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সীমান্তে নতুন করে ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। ওই জওয়ানেরা এর আগে পশ্চিম দিকের সীমান্তে নিযুক্ত ছিলেন। চিন সংলগ্ন সীমান্ত সুরক্ষিত করার উদ্দেশ্যেই দিল্লির এই পদক্ষেপ।
১৫১৯
এত দিন অরুণাচলে ন’হাজারের কাছাকাছি জওয়ান নিযুক্ত ছিলেন। এ বার থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার সৈন্যের বাহিনী উত্তর-পূর্ব সীমান্তের দীর্ঘ ৫৩২ কিলোমিটার এলাকা পাহারা দেবে।
১৬১৯
ভারতের এই পদক্ষেপের পর চিন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, যে সীমান্ত এলাকায় দুই দেশ যৌথ ভাবে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছে, সেখানে ভারতের আরও সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত আপত্তিকর।
১৭১৯
সেলা সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের পর চিনের পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) অরুণাচলকে ‘চিনা ভূখণ্ডের অংশ’ বলে চিহ্নিত করেছিল। ভারতও পাল্টা তার কড়া জবাব দেয়।
১৮১৯
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, চিনের দাবি অযৌক্তিক। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণবীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চিন ক্রমাগত যুক্তিহীন কথাবার্তা বলে চলেছে। আমরা চিনা সামরিক বিভাগের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলি নজরে রেখেছি।’’
১৯১৯
চিন এবং ভারতের এই বার্তালাপ অরুণাচল প্রসঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাওয়াংয়ে সেলা সুড়ঙ্গকে কেন্দ্র করে যে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তাতেও ইন্ধন জুগিয়েছে এই কথোপকথন।