Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Scarecrow Village

মানুষ প্রায় নেই, গ্রাম জুড়ে শুধুই ‘জ্যান্ত’ পুতুল! ভরদুপুরেও ভয় ধরায় এই গ্রাম

চারিদিকে ভাল করে লক্ষ করলে লোকজনও দেখা যায়। কিন্তু তাঁদের কাছে গেলেই অন্য দৃশ্য ধরা পড়ে। এ যে মানুষ নয়, বরং মানুষের পোশাক পরে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি পুতুল।

সংবাদ সংস্থা
টোকিয়ো শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:০১
Share: Save:
০১ ১৬
গ্রামের ভিতর প্রবেশ করলে নির্জন পরিবেশ। চাষবাসের জমি থেকে শুরু করে দোকানপাট, বাসস্ট্যান্ড সবই রয়েছে জাপানের এই গ্রামে। চারিদিকে ভাল করে লক্ষ করলে লোকজনও দেখা যায়। কিন্তু তাঁদের কাছে গেলেই অন্য দৃশ্য ধরা পড়ে। এ যে মানুষ নয়, বরং মানুষের পোশাক পরে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি পুতুল।

গ্রামের ভিতর প্রবেশ করলে নির্জন পরিবেশ। চাষবাসের জমি থেকে শুরু করে দোকানপাট, বাসস্ট্যান্ড সবই রয়েছে জাপানের এই গ্রামে। চারিদিকে ভাল করে লক্ষ করলে লোকজনও দেখা যায়। কিন্তু তাঁদের কাছে গেলেই অন্য দৃশ্য ধরা পড়ে। এ যে মানুষ নয়, বরং মানুষের পোশাক পরে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি পুতুল।

০২ ১৬
পুতুলে ভরা জাপানের এই গ্রামটির নামও অদ্ভুত। জাপানের ইয়া উপত্যকায় নাগোরো গ্রামের নাম দেওয়া হয়েছে স্কেয়ারক্রো গ্রাম। পুতুলগুলি কাকতাড়ুয়ার আকারে তৈরি করা হয়েছে বলেই গ্রামের এমন নাম।

পুতুলে ভরা জাপানের এই গ্রামটির নামও অদ্ভুত। জাপানের ইয়া উপত্যকায় নাগোরো গ্রামের নাম দেওয়া হয়েছে স্কেয়ারক্রো গ্রাম। পুতুলগুলি কাকতাড়ুয়ার আকারে তৈরি করা হয়েছে বলেই গ্রামের এমন নাম।

০৩ ১৬
শিকোকু দ্বীপপুঞ্জের এই গ্রামের একটি জাপানি নামও রয়েছে। স্থানীয়দের কাছে এই গ্রাম কাকাশি নো সাতো নামে পরিচিত।

শিকোকু দ্বীপপুঞ্জের এই গ্রামের একটি জাপানি নামও রয়েছে। স্থানীয়দের কাছে এই গ্রাম কাকাশি নো সাতো নামে পরিচিত।

০৪ ১৬
এই গ্রামে কাকতাড়ুয়ার সংখ্যা দু’শোরও বেশি। গ্রামবাসীদের মতো প্রতিটি কাকতাড়ুয়ার নাম, লিঙ্গ, বয়স নির্ধারণ করে রেজিস্ট্রিতে লিখে রাখা আছে।

এই গ্রামে কাকতাড়ুয়ার সংখ্যা দু’শোরও বেশি। গ্রামবাসীদের মতো প্রতিটি কাকতাড়ুয়ার নাম, লিঙ্গ, বয়স নির্ধারণ করে রেজিস্ট্রিতে লিখে রাখা আছে।

০৫ ১৬
এক একটি কাকতাড়ুয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হয় তারা যেন জীবন্ত। কেউ টেলিফোনের লাইন ঠিক করছে, কেউ আবার বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। কোথাও কোথাও আবার কাকতাড়ুয়ার দলকে আড্ডা মারতেও দেখা যায়।

এক একটি কাকতাড়ুয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হয় তারা যেন জীবন্ত। কেউ টেলিফোনের লাইন ঠিক করছে, কেউ আবার বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। কোথাও কোথাও আবার কাকতাড়ুয়ার দলকে আড্ডা মারতেও দেখা যায়।

০৬ ১৬
কিন্তু এই কাকতাড়ুয়াদের জীবদ্দশা ৩ বছরের বেশি নয়। ৩ বছর পার হয়ে গেলেই তাকে গ্রামের বাইরে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার জায়গায় চলে আসে অন্য এক কাকতাড়ুয়া।

কিন্তু এই কাকতাড়ুয়াদের জীবদ্দশা ৩ বছরের বেশি নয়। ৩ বছর পার হয়ে গেলেই তাকে গ্রামের বাইরে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার জায়গায় চলে আসে অন্য এক কাকতাড়ুয়া।

০৭ ১৬
তবে জাপানে এমন এক ভুতুড়ে গ্রাম গড়ে ওঠার পিছনে এক মহিলার হাত রয়েছে। ওই মহিলার নাম সুকিমি আয়ানো। গ্রামের কাকতাড়ুয়াদের মা হিসাবে তিনি অধিক পরিচিত।

তবে জাপানে এমন এক ভুতুড়ে গ্রাম গড়ে ওঠার পিছনে এক মহিলার হাত রয়েছে। ওই মহিলার নাম সুকিমি আয়ানো। গ্রামের কাকতাড়ুয়াদের মা হিসাবে তিনি অধিক পরিচিত।

০৮ ১৬
নাগোরো গ্রামে জন্ম হলেও পড়াশোনা সূত্রে গ্রাম ছেড়ে বাইরে চলে গিয়েছিলেন সুকিমি। ২০০২ সালে আবার ওই গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু গ্রামে আসার পর তিনি হতাশ হয়ে পড়েন।

নাগোরো গ্রামে জন্ম হলেও পড়াশোনা সূত্রে গ্রাম ছেড়ে বাইরে চলে গিয়েছিলেন সুকিমি। ২০০২ সালে আবার ওই গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু গ্রামে আসার পর তিনি হতাশ হয়ে পড়েন।

০৯ ১৬
সুকিমির শৈশব কেটেছিল নাগোরো গ্রামে। পরিবহণের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ছিল না এই গ্রামে। বাস চলাচল করলেও তার সংখ্যা ছিল খুব কম। রেলস্টেশন যেতে হলেও কমপক্ষে ১ ঘণ্টা সময় লাগত।

সুকিমির শৈশব কেটেছিল নাগোরো গ্রামে। পরিবহণের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ছিল না এই গ্রামে। বাস চলাচল করলেও তার সংখ্যা ছিল খুব কম। রেলস্টেশন যেতে হলেও কমপক্ষে ১ ঘণ্টা সময় লাগত।

১০ ১৬
সিএনএন ট্রাভেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুকিমি জানান, নাগোরো গ্রামে আগে ৩০০ জন গ্রামবাসী থাকতেন। কিন্তু তিনি যখন ফিরে এলেন, তখন গ্রামে মাত্র ২৭ জন ছিলেন।

সিএনএন ট্রাভেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুকিমি জানান, নাগোরো গ্রামে আগে ৩০০ জন গ্রামবাসী থাকতেন। কিন্তু তিনি যখন ফিরে এলেন, তখন গ্রামে মাত্র ২৭ জন ছিলেন।

১১ ১৬
এই ২৭ জনের মধ্যে যিনি কনিষ্ঠতম, তাঁর বয়স ৫০ বছর। সুকিমি বলেন, ‘‘নাগোরো গ্রাম ছেড়ে সকলে বাইরে চলে গিয়েছেন। গ্রামটি যেন ফাঁকা ফাঁকা না লাগে, তাই আমি কাকতাড়ুয়া বানাতে শুরু করি।’’

এই ২৭ জনের মধ্যে যিনি কনিষ্ঠতম, তাঁর বয়স ৫০ বছর। সুকিমি বলেন, ‘‘নাগোরো গ্রাম ছেড়ে সকলে বাইরে চলে গিয়েছেন। গ্রামটি যেন ফাঁকা ফাঁকা না লাগে, তাই আমি কাকতাড়ুয়া বানাতে শুরু করি।’’

১২ ১৬
সুকিমি তাঁর বাবার আদলে প্রথম কাকতাড়ুয়া বানিয়েছিলেন। কাকের উৎপাত থেকে বাঁচার জন্য তা নিজের বাড়ির জমিতে রেখে দেন তিনি।

সুকিমি তাঁর বাবার আদলে প্রথম কাকতাড়ুয়া বানিয়েছিলেন। কাকের উৎপাত থেকে বাঁচার জন্য তা নিজের বাড়ির জমিতে রেখে দেন তিনি।

১৩ ১৬
কিন্তু সুকিমি লক্ষ করেন যে, জমির সামনে দিয়ে যখন কেউ যেতেন, কাকতাড়ুয়াকে দেখে হাত নাড়াতেন। এই দৃশ্য দেখে সুকিমির মাথায় এক অভিনব পরিকল্পনা আসে। তিনি ভাবেন সমস্ত গ্রামেই তাঁর হাতের তৈরি কাকতাড়ুয়া দিয়ে ভরিয়ে দেবেন।

কিন্তু সুকিমি লক্ষ করেন যে, জমির সামনে দিয়ে যখন কেউ যেতেন, কাকতাড়ুয়াকে দেখে হাত নাড়াতেন। এই দৃশ্য দেখে সুকিমির মাথায় এক অভিনব পরিকল্পনা আসে। তিনি ভাবেন সমস্ত গ্রামেই তাঁর হাতের তৈরি কাকতাড়ুয়া দিয়ে ভরিয়ে দেবেন।

১৪ ১৬
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। ২০১৩ সালের মধ্যে মোট ৩৫০টি কাকতাড়ুয়া তৈরি করে ফেলেছিলেন সুকিমি। দূর থেকে এই কাকতাড়ুয়াগুলি দেখলে মনে হয় যেন গ্রামবাসীরাই গ্রাম জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

যেমন ভাবা, তেমন কাজ। ২০১৩ সালের মধ্যে মোট ৩৫০টি কাকতাড়ুয়া তৈরি করে ফেলেছিলেন সুকিমি। দূর থেকে এই কাকতাড়ুয়াগুলি দেখলে মনে হয় যেন গ্রামবাসীরাই গ্রাম জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

১৫ ১৬
প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম রবিবার নাগোরো এলিমেন্টারি স্কুলের কাছে স্কেয়ারক্রো উৎসব হয়।

প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম রবিবার নাগোরো এলিমেন্টারি স্কুলের কাছে স্কেয়ারক্রো উৎসব হয়।

১৬ ১৬
সুকিমিকে এই কাকতাড়ুয়াদের মা হিসাবে মানা হয়। প্রতি মাসের চতুর্থ বুধবার সুকিমি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে থাকেন। সেরামিকের কাজ থেকে শুরু করে নিজের হাতে কাকতাড়ুয়া বানানো শেখান সুকিমি। কিন্তু ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই ওয়ার্কশপ বন্ধ থাকে।

সুকিমিকে এই কাকতাড়ুয়াদের মা হিসাবে মানা হয়। প্রতি মাসের চতুর্থ বুধবার সুকিমি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে থাকেন। সেরামিকের কাজ থেকে শুরু করে নিজের হাতে কাকতাড়ুয়া বানানো শেখান সুকিমি। কিন্তু ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই ওয়ার্কশপ বন্ধ থাকে।

ছবি: সংগৃহীত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy