Sangeeta Kalia: An IPS officer who is called the Singham of Haryana dgtl
IPS Officer
Sangeeta Kalia: মন্ত্রীর সঙ্গে পাঙ্গা, বারবার বদলি, ছুতোর মিস্ত্রির আইপিএস মেয়ের আড়ালে নাম ‘সিংহী’
মন্ত্রীর ধমক খেয়েও অন্য কোনও আমলা তাঁর ঘরে দাঁড়িয়ে থাকতেন কি না জানা নেই, তবে সঙ্গীতা মন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করেছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ১৭:৩৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
আমলা হয়ে রাজ্যের মন্ত্রীর সঙ্গে ‘যুদ্ধে’ নেমেছিলেন হরিয়ানার এক মহিলা আইপিএস কর্তা। নাম সঙ্গীতা কালিয়া। যদিও হরিয়ানা পুলিশ বিভাগে তাঁকে চেনে ‘সিংহম’ নামে।
০২১৪
বয়স ৩১। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। একঝলক দেখলেই আঁচ পাওয়া যায়, সমঝে চলতে বলছেন। এই সঙ্গীতাকেই একবার সর্বসমক্ষে চূড়ান্ত অপমান করেছিলেন হরিয়ানার এক প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অনিল ভিজ।
০৩১৪
অনিল তখন হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছিলেন সঙ্গীতা। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। আইপিএস কর্তাকে তাঁর ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন অনিল।
০৪১৪
মন্ত্রীর ধমক খেয়েও অন্য কোনও আমলা তাঁর ঘরে দাঁড়িয়ে থাকতেন কি না জানা নেই, তবে সঙ্গীতা মন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করেছিলেন। এক পাও পিছু না হটে মুখের উপর সপাট জবাব দিয়েছিলেন মন্ত্রীকে।
০৫১৪
২০১৬ সালে তখন সঙ্গীতা হরিয়ানার ফতেহাবাদের দায়িত্বে। মদের চোরাচালান নিয়ে সে সময় উত্তাল হরিয়ানার রাজনীতি। ওই বিষয়েই মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ছিল সঙ্গীতার। মন্ত্রী বলেছিলেন, পুলিশ চোরাচালানকারীদের রক্ষাকবচের কাজ করছে। দোষারোপ সহ্য না করে জবাব দিয়েছিলেন সঙ্গীতা। তা থেকে কথা কাটাকাটি। সর্বসমক্ষে অপমান।
০৬১৪
সঙ্গীতা অবশ্য পাল্টা মন্ত্রীকে বলেছিলেন, তাঁর পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করছে। আড়াই হাজার মামলাও দায়ের করেছে। কিন্তু কোনও অজানা শক্তি বলে একের পর এক অপরাধী জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রী এর জবাব দিতে পারেননি।
০৭১৪
তবে জবাব পরে পেয়েছিলেন সঙ্গীতা। কিছু দিনের মধ্যেই তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়।
০৮১৪
বদলি হয়ে পানীপতে আসেন সঙ্গীতা। তবে এখানে আবার অনিলের মুখোমুখি হন। ২০১৮ সালের ৩০ জুন পানীপতে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন অনিল। সঙ্গীতা তখন পানীপতের পুলিশ সুপার। সঙ্গীতা-সহ আট জন পুলিশ কর্তা ওই বৈঠকে যোগ দেননি। ক্ষিপ্ত অনিল সঙ্গীতার নামে নালিশ করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। পাঁচ দিনের মাথায় ফের বদলি। প্রথম ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাটেলিয়নের দায়িত্ব দিয়ে পানীপত থেকে তাঁকে গুরুগ্রামের ভোন্ডসিতে সরিয়ে দেওয়া হয়।
০৯১৪
তবে সঙ্গীতা দমে যাননি। আসলে তাঁকে দমানো শক্তও। বহু কষ্ট করে আইপিএসের চাকরি পেয়েছিলেন। তাই হাল ছাড়েননি।
১০১৪
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের কন্যা। হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলার বাসিন্দা সঙ্গীতার বাবা ধর্মপাল ছিলেন পেশায় ছুতোর মিস্ত্রী। ফতেহাবাদের একটি থানায় তিনি ঠিকাদারি কাঠের কাজ করতেন। তবে ধর্মপালের বরাবর ইচ্ছে ছিল মেয়েকে পুলিশ অফিসার বানানোর।
১১১৪
পড়াশোনায় মেধাবী সঙ্গীতা স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেই আইপিএস হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। বাবার স্বপ্ন তো ছিলই। সঙ্গীতা জানিয়েছেন, টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ‘উড়ান’ নামে একটি ধারাবাহিক দেখার পর তাঁরও পুলিশ হওয়ার ইচ্ছা পেয়ে বসে।
১২১৪
২০০৫ সালে ইউপিএসসিতে বসেন। সফল হননি। বদলে রেলে চাকরি পান। কিন্তু সঙ্গীতা পণ করেছিলেন আইপিএস হবেনই। তাই একের পর এক সরকারি-বেসরকারি চাকরির সুযোগ ফেরাতে থাকেন। এ ভাবে ৬টি চাকরির সুযোগ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন সঙ্গীতা। ২০০৯ সালে ইউপিএসসিতে সাফল্য আসে।
১৩১৪
মেয়েকে পুলিশ অফিসার বানানোর স্বপ্ন দেখা বাবা ধর্মপাল সে বছরই ফতেহাবাদের থানা থেকে অবসর নেন। অদ্ভুত ভাবে সঙ্গীতাও নিজের কর্মজীবন শুরু করেন সেই ফতেহাবাদের পুলিশ সুপার হয়ে।
১৪১৪
সঙ্গীতার সহকর্মীরা বলেন, বরাবর সাহসী এই পুলিশ কর্তা কখনও চাপের মুখে মাথা নোয়াননি। তবে তার মাসুলও দিতে হয়েছে। বদলি হয়েছেন বারংবার। কিন্তু তারপরও তাঁকে দমিয়ে দেওয়া যায়নি। এক জায়গায় চেপে বসানো হলে, অন্যত্র মাথা তুলেছেন। বর্তমানে রেলপুলিশের সুপার হিসেবে কর্মরত তিনি।