মহিলাদের আকৃষ্ট করতে পেশিতে ‘বিষ ইঞ্জেকশন’! ভয়ঙ্কর পরিণতির পর হাত কামড়াচ্ছেন ‘পপাই’
পেশির ‘শক্তি’ বৃদ্ধি করতে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে হাতে পেট্রোলিয়াম জেলি প্রবেশ করিয়েছিলেন তিনি। অবিমৃশ্যকারিতার ভয়ঙ্কর ফল ভুগতে হয়েছিল তাঁকে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪ ০৯:৩৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
হাতের পেশি স্ফীত করতে অদ্ভুত এক পন্থা নিয়েছিলেন কিরিল। তার ফল যে এ ভাবে ভুগতে হবে, ভাবতেও পারেননি। প্রাণ যেতে বসেছিল যুবকের। এখন আফসোস হয় নিত্য দিন।
০২১৬
কিরিল টেরেশিন রাশিয়ার বাসিন্দা। তাঁকে ‘রুশ পপাই’ বলা হয়। পপাই এক কার্টুন চরিত্র, যার হাতের পেশিগুলো (বাইসেপ) অস্বাভাবিক রকমের স্ফীত। কিরিলেরও তা-ই। সে কারণেই তাঁকে ‘রুশ পপাই’ বলা হয়।
০৩১৬
পেশির ‘শক্তি’ বৃদ্ধি করতে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে হাতে পেট্রোলিয়াম জেলি প্রবেশ করিয়েছিলেন তিনি। অবিমৃশ্যকারিতার ভয়ঙ্কর ফল ভুগতে হয়েছিল তাঁকে। একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল তাঁর শরীরে।
০৪১৬
হাতে তিন লিটার পেট্রোলিয়াম জেলি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়েছিলেন কিরিল। সরাসরি। এর ফলে তাঁর পেশিতে রক্তের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পেশির কিছু কলা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।
০৫১৬
এর পর একের পর এক অস্ত্রোপচার, চিকিৎসার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিরিলের হাতে অস্ত্রোপচার করে প্রচুর পরিমাণ জেলি বার করা হয়।
০৬১৬
ওই বিপুল পরিমাণ জেলি অপসারণ করা না হলে কিরিলের হাত কেটে বাদ দিতে হত চিকিৎসকদের। যদিও সেই জেলি বার করার পরেও সমস্যা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি।
০৭১৬
গত কয়েক বছর ধরে একের পর এক অস্ত্রোপচার হয় তাঁর হাতে। পেট্রোলিয়াম জেলির পাশাপাশি মৃত কলাও বার করা হয়। কিরিল জানিয়েছেন, দিনগুলি তাঁর কাছে ছিল ‘দুঃস্বপ্নের মতো’।
০৮১৬
বছরের পর বছর চিকিৎসা করেও কিরিলের বাইসেপের খুব একটা সঙ্কোচন হয়নি। এখনও অস্বাভাবিক রকমের স্ফীত সেগুলি। সম্প্রতি কিরিল সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এই হাত দুটো থেকে মুক্তি পেতে চাই।’’
০৯১৬
হাতের পর মুখেও কারিকুরির অন্ত রাখেননি কিরিল। স্ফীত বাইসেপের পাশাপাশি নিজের মুখকেও আকর্ষণীয় করে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিরিলের মুখেও একাধিক অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ৪০ মিলিলিটার ‘ফিলার’ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়েছে, যাতে মুখ ভরাট দেখায়।
১০১৬
এ সবে যে কিছু হওয়ার নয়, অবশেষে বুঝেছেন কিরিল। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘‘আর কিছু করে কিছু হবে না। এ বছর ২৭-এ পা দেব। শারীরিক গঠন পরিণত হয়েছে।’’
১১১৬
কেন শরীর নিয়ে এতটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন কিরিল? কেন হাতে তেল ভরা ইঞ্জেকশন নিয়েছিলেন? নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। তাঁর কথায়, ‘‘সুন্দরী মহিলাদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, আমার মতো সাধারণ চেহারার কাউকে মহিলারা পছন্দ করবেন না। সে কারণেই ও সব করা।’’
১২১৬
এ সব ভেবেই বাইসেপ স্ফীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে তিনি জানান, প্রথমে উদ্ভিজ্জ তেল ফুটিয়ে শরীরে ইঞ্জেকশন দিতে শুরু করেন। প্রতি দিন ৫ মিলিলিটার করে শরীরে ওই তেল প্রবেশ করাতেন তিনি।
১৩১৬
কিরিল বলেন, ‘‘দু’সপ্তাহ পর বুঝতে পারি, তেল আমার পেশি থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। কোনও কাজ হচ্ছে না।’’ এর পরেই তিনি পেট্রোলিয়াম জেলি হাতে প্রবেশ করাতে শুরু করেন।
১৪১৬
ছ’মাসের মধ্যে তিনি খেয়াল করেন, হাতে পেশিগুলো স্ফীত হয়েছে। ওজনও বেড়েছে। কিন্তু তার পরেই শুরু হয় সমস্যা। চিকিৎসকেরা জানান, এই পেট্রোলিয়াম জেলি তাঁর কিডনির ক্ষতি করতে পারত। তাঁর প্রাণও যেতে পারত।
১৫১৬
এত কিছুর পরেও দমেননি কিরিল। এর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন মুখের উপর। মুখের অস্ত্রোপচার করান তিনি। খরচ করেন ১৫ হাজার আমেরিকান ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ লক্ষ টাকা।
১৬১৬
তার ফলও হয় উল্টো। কিরিল জানান, এত খরচ করে এখন তাঁকে ‘জোকার’-এর মতো লাগছে। যদিও সমাজমাধ্যমে কিরিলের অনুগামীরা উদ্বিগ্ন তাঁর শরীর নিয়ে। অদ্ভুত খেয়ালের জন্য এই বয়সে প্রাণ হারাতে পারতেন! যদিও কিরিল রয়েছেন আপন খেয়ালে। অনুগামীরা উদ্বেগে, আবার কী করে বসেন ‘পপাই’! ছবি: সংগৃহীত, ইনস্টাগ্রাম থেকে।