Rescuers prepared to pull out trapped workers in Uttarkashi Tunnel dgtl
Uttarkashi Tunnel Rescue Operation
উত্তরকাশীর আটকে থাকা কর্মীদের উদ্ধার কী ভাবে? চলছে মহড়া, ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়াতে পারে কে?
আর কয়েক মিটারের দূরত্ব। সেই দূরত্ব অতিক্রম করে ফেলতে পারলেই ব্যস! উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন কর্মীর কাছে পৌঁছে যাবেন উদ্ধারকারীরা। তবে দূরত্ব কম হলেও বার বার বাধার মুখে পড়ছে উদ্ধার অভিযান।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
আর কয়েক মিটারের দূরত্ব। সেই দূরত্ব অতিক্রম করে ফেলতে পারলেই ব্যস! উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন কর্মীর কাছে পৌঁছে যাবেন উদ্ধারকারীরা। তবে দূরত্ব কম হলেও বার বার বাধার মুখে পড়ছে উদ্ধার অভিযান। বুধবার রাতের পর বৃহস্পতিবার রাতেও থমকে যায় উদ্ধারকাজ।
০২২০
উত্তরাখণ্ডের প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গ খুঁড়তে আরও ৫-৬ মিটার বাকি রয়েছে। যদিও উদ্ধারকাজ শেষ করতে আর ঠিক কত সময় লাগবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলছে না প্রশাসন। তবে কর্মীদের সুড়ঙ্গের বাইরে বার করে আনার চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি তুঙ্গে। চলছে মহড়াও।
০৩২০
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, কী ভাবে ওই কর্মীদের উদ্ধার করা হবে, তা ঠিক করে ফেলেছেন তাঁরা। বার কয়েক তা অনুশীলনও করে দেখেছেন উদ্ধারকারীরা।
০৪২০
কী ভাবে আটকে থাকা কর্মীদের বাইরে বার করে আনা হবে? প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কর্মীদের বাইরে বার করে আনতে চাকা লাগানো বিশেষ স্ট্রেচার তৈরি করানো হয়েছে।
০৫২০
সেই স্ট্রেচারে শুইয়ে পাইপের মধ্যে দিয়ে গড়িয়ে বাইরে বার করে আনা হবে আটকে থাকা ৪১ কর্মীকে। এমনটাই জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে।
০৬২০
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, এক বার কর্মীদের কাছে পৌঁছে গেলে বিশেষ ভাবে তৈরি সেই স্ট্রেচারগুলি পাইপের সাহায্য সুড়ঙ্গের ভিতরে ঢোকানো হবে।
০৭২০
স্ট্রেচারের এক প্রান্তে দড়ি বাঁধা থাকবে। দড়ির অপর প্রান্ত থাকবে সুড়ঙ্গের বাইরের উদ্ধারকারীদের হাতে। যদি স্ট্রেচার গড়িয়ে আসতে সমস্যা তৈরি হয়, তা হলে সেই দড়ি দিয়ে স্ট্রেচার টেনে উদ্ধারকারীদের বাইরে আনা হবে।
০৮২০
প্রথমে ঠিক ছিল, পাইপের মধ্যে দিয়ে নিজেরাই হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসবেন ওই শ্রমিকেরা। কিন্তু এত দিন ধরে সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে থাকার কারণে অনেক কর্মীই অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তাই ঠিক করা হয়, স্ট্রেচারে শুইয়ে তাঁদের বাইরে বার করে আনা হবে।
০৯২০
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র প্রধান অতুল কারওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কী ভাবে আটকে থাকা কর্মীদের নিরাপদে বার করে আনা যায়, সে বিষয়ে আমরা উদ্ধারকারীদের মহড়া দিয়েছি।’’
১০২০
অতুল আরও বলেন, ‘‘আমরা স্ট্রেচারের নীচে চাকা লাগিয়ে রেখেছি, যাতে সহজেই এক এক করে সুড়ঙ্গের ভিতরে থাকা কর্মীদের বাইরে বার করে আনা যায়।’’
১১২০
প্রশাসনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, বুধবার রাত থেকেই সুড়ঙ্গের বাইরে অপেক্ষা করছে ৪১টি অ্যাম্বুল্যান্স। সুড়ঙ্গ থেকে বার করার পর প্রয়োজন হলে কর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
১২২০
ঘটনাস্থলেও অস্থায়ী স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে তৈরি আছে ৪১টি ‘বেড’। যে কোনও রকম জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত উদ্ধারকারীরা। কোনও কর্মী গুরুতর আহত হলে তাঁদের জন্য বিমানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন এক প্রশাসনিক কর্তা।
১৩২০
অন্য দিকে, জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বাহিনীর আধিকারিক সৈয়দ আতা হাসনাইনের মতে, আটকে পড়া কর্মীদের বার করে আনতে অনুভূমিক ভাবে যে উদ্ধারকাজ চলছে, তা আরও তিন-চার বার বাধার মুখে পড়তে পারে। তাই কর্মীদের উদ্ধার করতে আর কত সময় লাগবে, তা আগে থেকে নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না বলেও জোর দিয়েছেন হাসনাইন।
১৪২০
হাসনাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এটা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি। নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না। যুদ্ধে আপনি জানেন না শত্রু কী করতে চলেছে।’’
১৫২০
কিন্তু সেই ‘পথের কাঁটা’ কে? তার উত্তরও দিয়েছেন হাসনাইন। তিনি বলেন, ‘‘এখানে মাটি আপনার শত্রু। হিমালয়ের ভূতত্ত্ব শত্রু। এটা একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়।’’
১৬২০
হাসনাইন আরও যোগ করেছেন, ‘‘উদ্ধারকারী এবং ভিতরে আটকে থাকা কর্মীরা সমান ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।’’
১৭২০
উল্লেখযোগ্য যে, বিশেষজ্ঞরা উত্তরাখণ্ডে নির্মাণকাজের প্রভাব সম্পর্কে বহু বার সতর্ক করেছেন। সে রাজ্যের বড় অংশ ভূমিধসের ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলেও সাবধান করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
১৮২০
প্রসঙ্গত, গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওয়ের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সেই সুড়ঙ্গ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরিকাঠামো প্রকল্পের অংশ।
১৯২০
সুড়ঙ্গটি সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ। ভাঙা সুড়ঙ্গের ভিতরেই প্রায় ৬০০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে পড়েন সুড়ঙ্গে কর্মরত ৪১ জন কর্মী। সেই ঘটনার ১৩ দিন পেরিয়ে গিয়েছে।
২০২০
রাজ্য এবং কেন্দ্র— উভয় সরকারই কর্মীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে সেই দূরত্ব কমানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু বার বার বাধার মুখে পড়ছে উদ্ধারকাজ।