সবচেয়ে সস্তায় মদ্যপান করে কোন রাজ্য? দাম বাংলার চেয়েও কম, আবার বেশিও
পানীয়ের বোতল হাতে দিন কতক অবকাশ যাপন। কোন রাজ্যে যাবেন? কোথায় গেলে সস্তা পড়বে পানীয়? কোথায়ই বা দামি?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
দিন কয়েক সমু্দ্রে পাড়ে বসে নিশ্চিন্ত যাপন। সঙ্গে একটু গলা ভেজানো। এ রকম একটা অবকাশের স্বপ্ন দেখলে দেশের কোন জায়গার কথা মনে পড়ে? আমজনতার একটা বড় অংশই নাম নেবে গোয়ার। রিপোর্ট বলছে, তার যথেষ্ট কারণও রয়েছে।
০২২০
গোটা দেশের মধ্যে গোয়াতেই পানীয়ের দাম সব থেকে কম। এই রাজ্যে পানীয়ের উপর কর সব থেকে কম। কোথায় সব থেকে বেশি?
০৩২০
গোয়ার প্রতিবেশী রাজ্য কর্নাটকে পানীয়ের দাম সব থেকে বেশি। সে রাজ্যে মদের উপর রাজস্ব সব থেকে বেশি।
০৪২০
কোন রাজ্যে পানীয়ের দাম কেমন, তার উপর রাজস্বই বা কত, এই নিয়ে সমীক্ষা করেছিল ভারতের আন্তর্জাতিক স্পিরিটস অ্যান্ড ওয়াইন অ্যাসোসিয়েশন।
০৫২০
তাদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হুইস্কি, রাম, ভোদকা বা জিনের একটি বোতলের দাম গোয়ায় যদি হয় ১০০ টাকা, তা হলে দিল্লিতে হবে ১৩৪ টাকা।
০৬২০
গোয়ায় কোনও পানীয়ের বোতলের দাম ১০০ টাকা হলে হরিয়ানায় হবে ১৪৭ টাকা। উত্তরপ্রদেশে হবে ১৯৭ টাকা। রাজস্থানে হবে ২১৩ টাকা। মহারাষ্ট্রে হবে ২২৬ টাকা। তেলঙ্গানায় হবে ২৪৬ টাকা।
০৭২০
গোয়ায় এক বোতল পানীয়ের উপর রাজস্বের পরিমাণ ৪৯ শতাংশ। এই রাজস্ব নেহাত কম নয়। তবে অন্যান্য রাজ্যে পানীয়ের উপর যা রাজস্ব রয়েছে, তার থেকে কম। সে কারণেই গোয়ায় পানীয় অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় সস্তা।
০৮২০
কর্নাটকে এক বোতল পানীয়ের উপর রাজস্বের পরিমাণ ৮৩ শতাংশ। কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর সিদ্দারামাইয়া সরকার ভারতে তৈরি পানীয়ে শুল্ক বৃদ্ধি করেছে ২০ শতাংশ। আর বিয়ারে শুল্ক বৃদ্ধি করেছে ১০ শতাংশ।
০৯২০
বৃদ্ধি করা হয়েছে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও। যদিও পানীয় বিক্রেতাদের সংগঠনের দাবি, এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে অগস্টের শুরুতে ধাক্কা খেয়েছে বিক্রি।
১০২০
পশ্চিমবঙ্গের পানীয় বিক্রয়কারী সংগঠনগুলি জানিয়েছে, এ রাজ্যে মদের উপর প্রায় ৭১ শতাংশ রাজস্ব নেয় রাজ্য সরকার।
১১২০
মহারাষ্ট্রে এক বোতল পানীয়ের উপর রাজস্বের পরিমাণ ৭১ শতাংশ। তেলঙ্গানায় রাজস্বের পরিমাণ ৬৮ শতাংশ।
১২২০
রাজস্থানে এক বোতল পানীয়ের উপর রাজস্বের পরিমাণ ৬৯ শতাংশ। উত্তরপ্রদেশে ৬৬ শতাংশ, হরিয়ানায় ৪৭ শতাংশ, দিল্লিতে রাজস্বের পরিমাণ ৬২ শতাংশ।
১৩২০
১৯৬১ সাল থেকে গুজরাতে মদ নিষিদ্ধ। নীতীশ কুমার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে বিহারেও মদ নিষিদ্ধ করেছেন।
১৪২০
দীর্ঘ দিন ধরে বিদেশি সংস্থাগুলি দাবি জানিয়ে আসছে, দেশে আমদানি শুল্ক কমানো হোক। ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করে শুল্ক কমানোর পক্ষপাতী তারা।
১৫২০
এই স্থানীয় শুল্কের কারণে এক বোতল বিদেশি স্কচের দাম বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম হয়। দিল্লিতে এক বোতল ব্ল্যাক লেভেল স্কচের দাম ৩,১০০ টাকা। মুম্বইয়ে ওই বোতলের দাম ৪,০০০ টাকা।
১৬২০
দেশে বিভিন্ন পণ্য এবং পরিষেবার উপর জিএসটি কর রয়েছে। একমাত্র মদ এবং পেট্রোলিয়াম এর আওতায় পড়ে না। সে কারণে দেশের এক এক রাজ্যে মদের উপর শুল্কের হার এক এক রকম।
১৭২০
জিএসটির কারণে রাজ্যগুলি একাধিক পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের ক্ষমতা হারিয়েছে। এখন অ্যালকোহল, ডিজ়েল, পেট্রল এবং সম্পত্তির উপর তাদের কর আরোপের ক্ষমতা রয়েছে।
১৮২০
পণ্যের উপর জিএসটির মাধ্যমে যে রাজস্ব আদায় করে কেন্দ্র, তার একটি অংশ পায় রাজ্য। যে হেতু বিভিন্ন পণ্যের উপর নিজেদের মতো কর আরোপ করে রোজগারের পথ ধাক্কা খেয়েছে, সে হেতু পানীয়ের উপর রাজস্ব এবং পেট্রল, ডিজ়েলের উপর ভ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়েছে বেশির ভাগ রাজ্য।
১৯২০
বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়েছে, পেট্রল এবং ডিজ়েলকেও জিএসটির আওতায় আনা হোক। সে ক্ষেত্রে সব রাজ্যে জ্বালানির দাম এক হবে। এই নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
২০২০
তবে অ্যালকোহলকে জিএসটির আওতায় আনা নিয়ে আপাতত কোনও আলোচনা শুরু হয়নি। তাই আপাতত পানীয়ের দাম বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকমই থাকতে চলেছে। গোয়ায় যতটা সস্তা, কর্নাটকে ততটাই দামি। সে কারণেই প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করে চলেছেন গোয়ায়।