Remember Jhumri Telaiya? Know the real story of this Jharkhand town dgtl
Jhumri Telaiya
Jhumri Telaiya: কোনও গল্পকথা নয় ঝুমরি তালাইয়া, এ দেশেই রয়েছে এমন শহর
ঝুমরি তালাইয়া। এই নামটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৯:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
ঝুমরি তালাইয়া। এই নামটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। টেলিভিশন তখনও আসেনি। ধারাবাহিকের রমরমাও অনেক দূর। মনোরঞ্জনের দায়িত্বে তখন একমাত্র রেডিয়ো। রেডিয়োয় ‘বিবিধ ভারতী’-তে গানের অনুষ্ঠান হত। শ্রোতাদের অনুরোধ করা গানই বাজানো হত সেই অনুষ্ঠানে।
০২১১
তখন এই ঝুমরি তালাইয়া থেকেই একের পর এক গানের অনুরোধ ভেসে উঠত। সঞ্চালক বার বার এই জায়গার নাম উচ্চারণ করতেন। এমন একটা অদ্ভুত নাম শুনে অনেকেরই মনে হয়েছিল এটা কোনও সাজানো জায়গা। কিন্তু জানেন কি ঝুমরি তালাইয়া কোনও রূপকথা নয়। এমন জায়গা সত্যিই রয়েছে।
০৩১১
ঝাড়খণ্ডের কোডার্মা জেলার একটি ছোট শহর ঝুমরি তালাইয়া। দামোদর নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল শহরটি। লোকনৃত্য ঝুমর থেকেই ঝুমরি শব্দটি এসেছে। তালাইয়ার অর্থ হল ছোট হ্রদ। শহরের উপকূলে বরাকর নদীবাঁধ রয়েছে। সেই থেকে তালাইয়া।
০৪১১
খুব কম সময়ের মধ্যেই সারা দেশের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল ছোট শহরটি। শহরের মাটির নীচে প্রচুর পরিমাণে খনিজ সম্পদ ছিল। ব্রিটিশরা সেই সম্পদের সন্ধান পেয়ে সেখানে বসতি স্থাপন করেছিল। খনি থেকে আকরিক উত্তোলন করার কারখানা খুলেছিল।
০৫১১
সারা দেশ যখন দারিদ্রে ডুবে ছিল, একরের পর একর জমিতে খনিজের খোঁজ ওই এলাকার ভাগ্য বদলানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। ফুলে ফেঁপে উঠছিলেন ব্যবসায়ীরা। বিশালাকার প্রাসাদ। দামি গাড়ি সবই ছিল ঝুমরি তালাইয়াতে।
০৬১১
১৯৫০- ১৯৬০ এই সময়ে দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষের কাছেই পরিচিত নাম হয়ে ওঠে ঝুমরি তালাইয়া। এটা এমন একটা সময় ছিল যখন রেডিয়ো শোনার ঝোঁক প্রায় সকলেরই ছিল।
০৭১১
রেডিয়োর গানের অনুষ্ঠানে ঝুমরি তালাইয়ার বাসিন্দা রামেশ্বর প্রসাদ বার্নওয়ালের নাম বার বার শোনা যেত। তিনি রোজ অন্তত ২০ থেকে ২৫টি গানের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখতেন।
০৮১১
ক্রমে ঝুমরি তালাইয়ার অন্য বাসিন্দাদের কাছে বিষয়টি ঈর্ষার হয়ে ওঠে। এক জন, দু’জন করে ঝুমরির প্রচুর লোক গানের অনুরোধ পাঠাতে শুরু করেন। রেডিয়োর ওই অনুষ্ঠানে বার বারই সঞ্চালককে তাই এই জায়গার নাম উচ্চারণ করতে হত। তাঁরা সকলেই চাইতেন যাতে তাঁদের নাম সবচেয়ে বেশি বার সঞ্চালক মুখে উঠে আসে।
০৯১১
ওই অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তায় শহরে একটি ক্লাবও গড়ে ওঠে। ক্লাবের প্রতিটি সদস্য গানের অনুরোধ চিঠিতে লিখে পাঠাতেন আর তার পর নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় নামতেন কার কতগুলি গান সঞ্চালক বাজালেন তা নিয়ে।
১০১১
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, তখন নাকি স্থানীয় পোস্টম্যান-কেও ঘুষ দেওয়া শুরু হয়েছিল। যাতে তিনি আর কারও চিঠি না পৌঁছে দেন। ঝুমরি তালাইয়া একেবারেই অপরিচিত ছিল অন্য শ্রোতাদের কাছে। তাই একটা সময় অনেকের মনে হয়েছিল, এমন জায়গার কোনও অস্তিত্বই নেই। পুরোটাই সাজানো।
১১১১
যত দিন টেলিভিশন সে ভাবে জনপ্রিয়তা পায়নি, ওই অনুষ্ঠানে গানের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি যেত এই শহর থেকে। ধীরে ধীরে তা কমতে শুরু করে। কিন্তু তত দিনে ঝাড়খণ্ডের সেই ছোট শহরকে সারা দেশের লোক চিনে ফেলেছিল। এমনকি একাধিক বলিউড ছবিতে ঝুমরি তালাইয়ার উল্লেখও রয়েছে। ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া রণবীর কপূরের ছবি ‘জগ্গা জাসুস’-এও এই জায়গার কথা উল্লেখ রয়েছে।