Ratan Tata's close actor friend Gufi Paintal, stayed in same hostel, went for picnics with Mahabharata star dgtl
Ratan Tata-Gufi Paintal Friendship
টাটার সহপাঠী, থাকতেন একই হস্টেলে, ‘শকুনি মামা’কে বিশেষ কাজে গাড়িও ধার দিয়েছিলেন রতন
বলিপাড়ার কোনও তাবড় তারকা নন, বরং রতন টাটার গভীর বন্ধুত্ব ছিল হিন্দি ধারাবাহিকের এক জনপ্রিয় অভিনেতার সঙ্গে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
বুধবার রাতে প্রয়াত হয়েছেন শিল্পপতি রতন টাটা। বয়সজনিত সমস্যা নিয়ে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বুধবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
০২১৮
দেশের শিল্পজগতের অনন্য রত্ন রতনের মৃত্যুর পর তাঁর পেশাগত জীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। বলিপাড়ার কোনও তাবড় তারকা নন, বরং রতনের গভীর বন্ধুত্ব হিন্দি ধারাবাহিকের এক জনপ্রিয় অভিনেতার সঙ্গে। টেলিভিশনের ‘শকুনি মামা’ হিসাবেই অধিক পরিচিত ছিলেন তিনি।
০৩১৮
টেলি অভিনেতা একটি ইউটিউব ভিডিয়োয় দাবি করেছিলেন যে, রতনের সহপাঠী ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁদের দু’জনের বন্ধুত্ব ছিল অটুট। কলেজের পড়াশোনা সূত্রে রতনের সঙ্গে একই হস্টেলে থাকতেন। এমনকি, বিশেষ প্রয়োজনে অভিনেতাকে নিজের দামি গাড়িও ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন রতন।
০৪১৮
পরিচালক বিআর চোপড়ার মহাভারতে শকুনি মামার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন গুফি পেন্টাল। নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশনের পর্দায় ‘শকুনি মামা’র চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন গুফি।
০৫১৮
১৯৪৪ সালের ৪ অক্টোবর শিখ পরিবারে জন্ম গুফির। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন বলে জামশেদপুর গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই রতনের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল গুফির।
০৬১৮
১৯৬২ সালে জামশেদপুরের ইঞ্জিরিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন গুফি। ভিডিয়োয় তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি আর রতন একই হস্টেলে থাকতাম। আমি ২২ নম্বর ঘরে থাকতাম। ও ২১ নম্বর ঘরে থাকত।’’
০৭১৮
গুফি জানিয়েছিলেন, আমেরিকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আবার জামশেদপুরের কলেজের হস্টেলে ফিরে গিয়েছিলেন রতন। পাশাপাশি ঘর হওয়ার কারণে গুফির সঙ্গে চটজলদি বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল রতনের।
০৮১৮
গুফির দাবি, পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মাঝেমধ্যেই গুফিকে নিজের ঘরে ডেকে নিতেন রতন। কিন্তু হস্টেলের অন্য কোনও ছাত্রকে ডাকতেন না তিনি। রতন তাঁর গাড়ি চালিয়ে গুফির সঙ্গে বনভোজন সারতেও যেতেন। গাড়ির ভিতরে বসেই খাওয়াদাওয়া করতেন তাঁরা।
০৯১৮
গুফি জানিয়েছিলেন, কলেজে পড়াকালীন প্লাইমাউথ সংস্থার একটি বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে ঘোরাফেরা করতেন রতন। টেলি অভিনেতার দাবি, বিশেষ প্রয়োজনে তাঁকে নিজের গাড়ি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন রতন।
১০১৮
ভিডিয়োয় গুফি বলেছিলেন, ‘‘কলেজে পড়াকালীন আমার সঙ্গে মা দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু জামশেদপুর শহর কী ভাবে মাকে ঘুরিয়ে দেখাব তা বুঝতে পারছিলাম না। মা আসবেন শুনেই রতন তাঁর বিলাসবহুল গাড়ির চাবি আমার হাতে ধরিয়ে দিল। আমার একটা কথাও শুনল না।’’
১১১৮
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর গুফি তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন। তার পর অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। গুফি জানিয়েছিলেন, বহু বছর পর রতনের সঙ্গে আবার দেখা হয়েছিল তাঁর।
১২১৮
মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকা দিয়ে রাস্তা পারাপার করছিলেন গুফি। সেই সময় রতন তাঁর গাড়ি নিয়ে গুফির সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। গুফি বলেছিলেন, ‘‘হঠাৎ দেখলাম আমার সামনে এক বিরাট গাড়ি এসে দাঁড়িয়ে পড়ল। গাড়ির সামনের আসনে বসেছিলেন রতন। গাড়ির পিছনে বসেছিল দু’টি বিশাল কুকুর।’’
১৩১৮
গুফিকে বহু বছর পর রাস্তায় দেখে মন ভরে গিয়েছিল রতনের। গুফি বলেছিলেন, ‘‘রতন আমায় বাড়ি ছেড়ে দিতে চাইছিল। কিন্তু আমার গাড়ি রাস্তার ও পারে দাঁড়িয়েছিল বলে রতনের সঙ্গে গেলাম না। ও এত ভাল মনের মানুষ যে, আমি কখনওই ওর কথা ভুলতে পারি না।’’
১৪১৮
১৯৬৯ সালে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মুম্বই গিয়েছিলেন গুফি।। প্রথম জীবনে বহু হিন্দি ছবিতে সহ-পরিচালনার কাজ করেছিলেন তিনি। তার পর আশির দশক থেকে অভিনয় শুরু করেছিলেন। বেশ কিছু হিন্দি ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছিলেন তিনি।
১৫১৮
‘মহাভারত’ ধারাবাহিকে তাঁর সহ- অভিনেতা পঙ্কজ ধীর ২০১০ সালে মুম্বইয়ে অভিনয় অ্যক্টিং আকাডেমি নামে একটি অভিনয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছিলেন। বেশ কয়েক বছর সেখানকার দায়িত্ব সামলেছিলেন গুফি।
১৬১৮
‘দেশ-পরদেশ’, ‘দিললাগি’, ‘কাল কি আওয়াজ’, ‘ঘুম’, ‘তুফান’, ‘ময়দান-এ-জঙ্ঘ্’, ‘শ্যাম ঘনশ্যাম’-এর মতো বহু হিন্দি ছবিতে কাজ করেছিলেন গুফি। তার পর অবশ্য অভিনয় জগৎ থেকে সরে গিয়েছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের জুন মাসে বয়সজনিত কারণে প্রয়াত হন গুফি। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ৭৮ বছর।
১৭১৮
রবিবার রাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল, রতনকে মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আরও দাবি করা হয়েছিল, আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে।
১৮১৮
কিন্তু সোমবার সকালে সব ‘জল্পনা’ উড়িয়ে দিয়ে শিল্পপতি রতন নিজেই এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে জানিয়েছিলেন, সব খবর ভুয়ো। বরং বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যার কারণে নিয়মমাফিক চেক-আপের জন্যই হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। এর পর বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।