Rajiv Gandhi loyalist, KL Sharma who handed crushing defeat to Smriti Irani in UP’s Amethi dgtl
Amethi Lok Sabha
অমেঠীতে স্মৃতিকে হারালেন রাজীব-ঘনিষ্ঠ, সনিয়ার প্রথম বার জয়ের নেপথ্য কারিগর ছিলেন তিনি
অমেঠীতে স্মৃতিকে হারালেন রাজীব-ঘনিষ্ঠ, সনিয়ার প্রথম বার জয়ের নেপথ্য কারিগর ছিলেন তিনি
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪ ১২:১৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
৫৫ হাজারের কিছু বেশি ভোটে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে হারিয়ে অমেঠীতে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন স্মৃতি ইরানি। কিন্তু পাঁচ বছরেই সেই চিত্র পুরো পাল্টে গেল। সেই অমেঠীতে এ বার স্মৃতির হার হল লাখ খানেকের বেশি ভোটে। তিনি হারলেন গান্ধী পরিবারের কারও কাছে নয়। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ কিশোরীলাল শর্মার কাছে হারতে হল স্মৃতিকে।
০২১৫
কে এই কিশোরীলাল? মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকেই এই প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় রাজনীতিতে। গুগ্লে ‘কিশোরীলাল শর্মা’ লিখে সার্চও হচ্ছে দেদার। কেন এ বার কংগ্রেস তাঁকে প্রার্থী করল? অমেঠীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী? গান্ধী পরিবারের সঙ্গে কী ভাবে যুক্ত? এই সব নিয়েই কৌতূহল রয়েছে সাধারণের মনে।
০৩১৫
পঞ্জাবের লুধিয়ানাতে জন্মগ্রহণ করেন কিশোরীলাল। সেখানেই বেড়ে ওঠা। পরিবার ছিল গান্ধীপন্থী। ছোট থেকেই কংগ্রেসি ভাবনাচিন্তায় বড় হওয়া। ছাত্র বয়স থেকে রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিগত ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে কংগ্রেস দলের সঙ্গে যুক্ত এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ।
০৪১৫
কংগ্রেসের পাশাপাশি গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন কিশোরীলাল। রাজীব গান্ধী থেকে সনিয়া গান্ধী হয়ে রাহুল গান্ধী— সকলের সঙ্গেই তাঁর সংযোগ নিবিড়। শুধু অমেঠী নয়, উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলীর সঙ্গেও কিশোরীলালের সম্পর্ক অটুট।
০৫১৫
কিশোরীলালকে অমেঠীতে এনেছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। সালটা ১৯৮৩। তখন রাজীব অমেঠীর সাংসদ। নিজের সংসদীয় এলাকায় কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় কিশোরীলালকে।
০৬১৫
রাজীবের জমানাতেই অমেঠীর পাশাপাশি রায়বরেলী এবং সুলতানপুরের কংগ্রেস সংগঠন দেখভাল করতেন কিশোরীলাল। ১৯৯১ সালের লোকসভা ভোটপর্বের মাঝে এলটিটিই-র মানববোমায় রাজীব খুন হওয়ার পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর সতীশ শর্মাকে অমেঠীর প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছিল কংগ্রেস। সেই সতীশকে জেতানোর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন কিশোরীলাল।
০৭১৫
১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সতীশই অমেঠীর সাংসদ ছিলেন। ১৯৯৮ সালে হেরে যান তিনি। তবে ঠিক তার এক বছর পর, ১৯৯৯ সালে এই অমেঠী থেকেই সনিয়া গান্ধী সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী হন তিনি।
০৮১৫
সেই সময় সনিয়ার ‘ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট’-এর দায়িত্ব ছিল কিশোরীলালের উপর। নির্বাচনে জিতে সাংসদ হন সনিয়া। শুধু অমেঠী নয়, রায়বরেলীর সঙ্গেও গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক অনেক দিনের। গত দু’দশক ধরে এই দুই কেন্দ্রের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের ‘যোগসূত্র’ ছিলেন কিশোরীলাল।
০৯১৫
সনিয়ার পর অমেঠী থেকে লড়েন রাহুল। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস জয় পেয়েছে। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের বিরুদ্ধে এই আসনে জয় পান বিজেপির স্মৃতি। কংগ্রেস দুর্গে ফোটে পদ্ম!
১০১৫
কী ভাবে নিজেদের পুরনো দুর্গ ফেরানো যায়, তা নিয়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে থেকেই অঙ্ক কষতে শুরু করে কংগ্রেস। কে এ বার ওই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে জোর জল্পনা ছিল। হাওয়ায় ভেসেছিল প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এবং তাঁর স্বামী রবার্ট বঢরার নামও।
১১১৫
নির্বাচন শুরুর একেবারে শেষ লগ্নে এসে অমেঠীতে প্রার্থীঘোষণা করেছিল কংগ্রেস। এ বার রাহুলকে অমেঠীতে প্রার্থী করেনি তারা। সনিয়ার ছেড়ে যাওয়া আসন রায়বরেলীতে রাহুলকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। আর অমেঠীতে নিয়ে আসা হয় সেই কিশোরীলালকে।
১২১৫
বিজেপি এ বার ওই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ স্মৃতিকে প্রার্থী করেছিল। পদ্মশিবির আশা করেছিল, গত বারের থেকে বেশি ব্যবধানে জয় পাবেন স্মৃতি। সে ভাবে প্রচারও চালিয়েছে বিজেপি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিসাব পাল্টে যায়।
১৩১৫
অমেঠীর মানুষ গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন কিশোরীলালকে বেছে নেন। তবে এই কেন্দ্রে প্রচারের দায়িত্ব ছিল প্রিয়ঙ্কার উপর। নির্বাচনী প্রচারের সূত্রে বার বার অমেঠীতে ছুটে গিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। পড়ে থেকেছেন সেখানে। কংগ্রেস এবং কিশোরীলালের হয়ে প্রচারও করেছেন।
১৪১৫
অমেঠীর সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক অনেক পুরনো। ১৯৭৭ সালে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের এই আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন রাজীবের ভাই সঞ্জয়। দিল্লির মসনদে তখন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার।
১৫১৫
তবে ইন্দিরার গদি ছিল টলমল। দেশ জুড়ে বইতে শুরু করে ইন্দিরা-বিরোধী হাওয়া। সেই হাওয়ায় ধাক্কা খান সঞ্জয়। হেরে যান তিনি। তবে তিন বছর পর ১৯৮০-র লোকসভা ভোটে অমেঠীর সাংসদ হয়েছিলেন সঞ্জয়। বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয়ের অকালমৃত্যুর পরে ১৯৮১-তে উপনির্বাচন হয় অমেঠীতে। সেই নির্বাচনে জয় পান রাজীব। তার পর রাজীবের সূত্র ধরেই অমেঠীর রাজনীতিতে আবির্ভাব হয় কিশোরীলালের। এত দিন পর সেই অমেঠী থেকে জিতে সংসদে যাচ্ছেন তিনি।