রাজেশ খন্নার কেরিয়ারের মতো একই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল অমিতাভ বচ্চনের অভিনয় জীবনে। কিন্তু রাজেশের মতো সিদ্ধান্ত নেননি অমিতাভ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৩ ১২:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
হিন্দি সিনেমাজগতের প্রথম সুপারস্টার ছিলেন রাজেশ খন্না। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে অভিনয় শুরু করেছিলেন তিনি। পাঁচ দশকের কাছাকাছি ইন্ডাস্ট্রিতে থেকেছেন তিনি। কিন্তু রাজেশের জনপ্রিয়তার স্থায়িত্ব বেশি দিনের ছিল না।
০২১৯
অন্য দিকে বর্ষীয়ান অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন এখনও বলিপাড়ায় তাঁর জনপ্রিয়তা বজায় রেখেছেন। প্রায় একই সময় কেরিয়ার শুরু করলেও অমিতাভ কী এমন করেছিলেন যে রাজেশকে টেক্কা দিয়ে ফেললেন? টিনসেল নগরীর এক অভিনেতা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি খোলসা করেছেন।
০৩১৯
রাজেশ তাঁর কেরিয়ারে দর্শককে শতাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কেরিয়ারে জনপ্রিয়তার সূর্য অস্ত গিয়েছিল দ্রুত।
০৪১৯
অন্য দিকে ১৯৬৯ সালে বলিপাড়ায় প্রথম পা রাখেন অমিতাভ। পাঁচ দশকে ২০০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। হিন্দি ফিল্মজগতে দ্বিতীয় সুপারস্টার এবং পরবর্তী কালে মেগাস্টার হিসাবে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন অমিতাভ।
০৫১৯
নিজের কারণেই রাজেশ তাঁর কেরিয়ারজীবনে জনপ্রিয়তা বজায় রাখেতে পারেননি। এমনটাই দাবি করেন বলি অভিনেতা প্রেম চোপড়া। একই পেশায় থাকার সূত্রে রাজেশ এবং অমিতাভ দুই তারকাকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
০৬১৯
প্রেমের দাবি, রাজেশ তাঁর কেরিয়ারে যে ভুল করেছিলেন, সেই ভুল অমিতাভ করেননি বলেই আজও বলিপাড়ায় জনপ্রিয় তারকাদের মধ্যে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।
০৭১৯
প্রেম সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান, ফিল্মজগতে একের পর এক নবাগত অভিনেতাদের আগমনের কারণে রাজেশের কেরিয়ারের রেখচিত্র ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হতে শুরু করে। কিন্তু সঠিক সময়ে রাশ ধরতে ব্যর্থ হন রাজেশ।
০৮১৯
রাজেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি কখনও কোনও ছবিতে দ্বিতীয় অভিনেতার ভূমিকা অথবা পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করবেন না। সুপারস্টার হওয়ার কারণে মুখ্য চরিত্রেই অভিনয় করবেন তিনি।
০৯১৯
রাজেশ তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। ফলে ধীরে ধীরে তাঁর কাছে কাজের সুযোগ আসা কমে যায়। প্রেমের দাবি, এই সিদ্ধান্তই রাজেশের পতনের মূল কারণ।
১০১৯
রাজেশের কেরিয়ারের মতো একই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল অমিতাভের অভিনয় জীবনে। অমিতাভ সুপারস্টার হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার কয়েক বছরের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন মুখ আসতে শুরু করে।
১১১৯
অমিতাভ তখন মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলেও সেই ছবিগুলি হিট হচ্ছিল না। অমিতাভ বুঝতে পেরেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে তাঁকে দ্বিতীয় অভিনেতার ভূমিকার পাশাপাশি পার্শ্বচরিত্রেও অভিনয় শুরু করতে হবে।
১২১৯
প্রেম জানান, কেরিয়ারে একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হলেও রাজেশের মতো সিদ্ধান্ত নেননি অমিতাভ। নবাগত অভিনেতাদের সঙ্গেও পর্দা ভাগ করেছিলেন তিনি।
১৩১৯
শুধুমাত্র মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের কেরিয়ারে দাঁড়ি টেনে দেননি অমিতাভ। পাঁচ দশক ইন্ডাস্ট্রিতে কাটানোর পরেও এখনও একচেটিয়া ভাবে অভিনয় করে যাচ্ছেন তিনি।
১৪১৯
প্রেম জানান, রাজেশের সিদ্ধান্তের কারণে নিজের কেরিয়ারে বড় সুযোগ পেয়েছিলেন প্রেম। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘উপকার’ ছবিতে প্রেমকে যে চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে সেই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব প্রথমে রাজেশকে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।
১৫১৯
শুটিং শুরুর এক দিন আগে রাজেশ ‘উপকার’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব খারিজ করে দেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে নির্মাতারা মুশকিলে পড়ে যান।
১৬১৯
রাজেশের শরীরের গড়ন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জামাকাপড়ও বানিয়ে ফেলা হয়েছিল বলে জানান প্রেম। তিনি বলেন, ‘‘রাজেশ শেষ মুহূর্তে ছবি থেকে সরে যান বলে ওই কাজ আমি পাই। আমার জীবন তার পর নতুন দিকে মোড় নেয়।’’
১৭১৯
প্রেমের দাবি, অন্য ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ হারানোর ভয়ে ‘উপকার’ ছবির কাজ শেষ মুহূর্তে ছেড়ে দেন রাজেশ। আর রাজেশের ছেড়ে দেওয়া সেই চরিত্রে কাজ করেন প্রেম।
১৮১৯
প্রেমের দাবি, ‘উপকার’-এর সঙ্গে একই সময় অন্য একটি হিন্দি ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান রাজেশ। সেই ছবির নির্মাতারা নাকি রাজেশকে জানান, তিনি যদি দ্বিতীয় অভিনেতার ভূমিকায় ‘উপকার’ ছবিতে অভিনয় করেন, তবে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ হারাবেন।
১৯১৯
রাজেশ কিছুতেই মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ হারাতে চাইছিলেন না। তাই উপায় না দেখে ‘উপকার’ ছবি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। এর ফলে প্রেমের কেরিয়ারে নতুন মোড় এলেও রাজেশের কেরিয়ার আরও ধ্বংসের পথে এগিয়ে যায় বলে মনে করেন প্রেম।