প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, জাতভিত্তিক সমর্থন, নির্বাচনী প্রচার সভায় ভোটারদের সমর্থন, দলীয় শক্তি-সহ একাধিক কারণের ভিত্তিতে সাট্টা বাজারে বাজির দর ওঠানামা করে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ১৪:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সাত দফার নির্বাচন শেষ। এখন অপেক্ষা শুধু ফলাফলের। তৃতীয় বারের জন্য কি নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার গঠন করবে, নাকি বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ সব হিসাব উল্টে দেবে? ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হতেই চ্যানেলে চ্যানেলে চলছে সেই নিয়ে আলোচনা। বুথফেরত সমীক্ষা নিয়েও কাঁটাছেঁড়া চলছে।
০২২০
একাধিক বুথফেরত সমীক্ষাতেই এগিয়ে এনডিএ। ইঙ্গিত, শরিকদের নিয়ে তৃতীয় বার কেন্দ্রে সরকার গড়তে চলেছেন নরন্দ্র মোদী। তবে ‘৪০০ পার’ হবে কি না তা নিয়েই জল্পনা-কল্পনা চলছে। কয়েকটি বুথফেরত সমীক্ষা এনডিএ-কে ৪০০-এর বেশি আসন দিয়ে রেখেছে। তবে কয়েকটি সমীক্ষা সংশয় প্রকাশ করেছে।
০৩২০
বুথফেরত সমীক্ষার মতো আর একটি জায়গার ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ নিয়ে কৌতূহল রয়েছে মানুষের মনে। সেটি সাট্টা বাজার। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কী বলছে ভারতের অন্যতম সাট্টা বাজার ফলোদী? বুথফেরত সমীক্ষার সঙ্গে কি মিলিয়ে দিচ্ছে ফলাফল নাকি অন্য কোনও আভাস দিচ্ছে?
০৪২০
৫৪৩ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কোন দল সরকার গড়বে? ভবিষ্যৎ আঁচ করে সাট্টা বাজারে বাজি ধরেন বুকিরা।
০৫২০
সাট্টা বাজার ভারতের আইনের চোখে বেআইনি। তবে তাতে পিছপা হন না বুকিরা। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই রমরমিয়ে চলছে এই সব সাট্টা বাজারের কারবার। প্রশাসনের নাকের ডগায় বুকিরা বুক ফুলিয়ে চালিয়ে চলেছেন বাজি ধরার খেলা।
০৬২০
আলোচনার কেন্দ্রে সাট্টা বাজারগুলি এলেই প্রথমেই যে নামটি তা হল রাজস্থানের ফলোদী বাজার। সাট্টা কারবারিদের মতে, ফলোদী বাজারের ভবিষ্যদ্বাণী অধিকাংশ সময়ই মিলে যায়। সাফল্যের হার ৮০-৮৫ শতাংশ। তাই ভোট মিটতে অনেকের নজর ছিল ফলোদীর সাট্টা বাজারের দিকে।
বাজারের পূর্বাভাস, এনডিএ পেতে পারে ৩৫০-৩৫৫ আসন। একা বিজেপি জিততে পারে ৩০৩-৩০৫ আসন। বিজেপি বিরোধী জো়ট ‘ইন্ডিয়া’ ৮০-৮৫টি আসন জিততে পারে এ বারের নির্বাচনে।
০৯২০
রাজ্যভিত্তিক কেমন ফল হতে পারে তার আভাসও দিয়েছে ফলোদীর সাট্টা বাজার। তাদের মতে, গুজরাত, হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের সব লোকসভা আসনই জিতবে বিজেপি।
১০২০
মধ্যপ্রদেশের ২৯টি আসনের মধ্যে ২৫ থেকে ২৭টি আসন পেতে পারে বিজেপি। রাজস্থানের ২৫টি আসনের মধ্যে ১৮-২০টি আসনই ঢুকতে পারে বিজেপির ঝুলিতে।
১১২০
হরিয়ানায় বিজেপি পেতে পারে ৫-৬টি আসন, ওড়িশায় ১১-১২টি আসন, তেলঙ্গানায় পেতে পারে ৫-৬টি আসন। ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীসগঢ়ে ১০-১১টি করে আসন জিততে পারে বিজেপি। দিল্লিতে পদ্মশিবির পেতে পারে ৫-৬টি আসন।
১২২০
উত্তরপ্রদেশ নিয়ে কৌতূহল রয়েছে অনেকের মনেই। প্রথম দিকে ফলোদী সাট্টা বাজারের অনুমান ছিল, যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে বিজেপি ৭০-৭৫টি আসন পাবে। ‘ইন্ডিয়া’র জন্য সম্ভাব্য আসন ধরেছিল ৫–১০টি আসন। তবে পরে ফলোদীর সাট্টা বাজার সংশোধন করে। সেখানে বিজেপির আসন কমে দাঁড়িয়েছে ৫৫-৬৫ আসনে। বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে রয়েছে ১৫-২৫টি আসন।
১৩২০
রাজস্থানের জোধপুরের কাছে একটি ছোট শহর ফলোদী। বাইরে থেকে আর পাঁচটা শহরের মতো হলেও এই শহরের মধ্যেই রয়েছে বিখ্যাত সাট্টা বাজার। ভারতীয় আইনের চোখে সাট্টা বা বাজি ধরা বেআইনি। তাই ফলোদী বাজারের কারবার চলে অন্তরালে। চাইলেই এই বাজারে ঢোকা যায় না।
১৪২০
ফলোদীর সাট্টা বাজার হল এক খোলা রহস্য, যা সব সময়ই শহরটিকে আলোকবৃত্তে নিয়ে আসে। কিন্তু এই সাট্টা বাজারকে বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, সেখানে প্রতি দিন কোটি কোটি টাকার কারবার চলে।
১৫২০
আপনি যদি ফলোদী বাজারে নিয়মিত যাতায়াত করেন কিংবা স্থানীয় হন বা বুকিদের পরিচিত হন, তবে আগে থেকে টাকা জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে আপনি যদি বাইরের লোক হন অবশ্যই নগদ জমা রাখতে হবে।
১৬২০
টিনের চালের কয়েক ডজন ছোট ছোট কিয়স্ক। চার-পাঁচ জনের বেশি এক একটা কিয়স্কে থাকার উপায় নেই। তবুও সেখানেই জুয়ার বাজার সাজিয়ে বসেছেন কারবারিরা। সেই সব কিয়স্কের বাইরে থাকে উৎসাহী জনতার ভিড়।
১৭২০
প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, জাতভিত্তিক সমর্থন, নির্বাচনী সভায় ভোটারদের সমর্থন, দলীয় শক্তি-সহ একাধিক কারণের ভিত্তিতে সাট্টা বাজারে বাজির হার ওঠানামা করে।
১৮২০
২০১৪ ও ২০১৯ সালে দেশ জুড়ে ৭০ আসনের গণ্ডি পেরোবে না কংগ্রেস— ফলোদীর সাট্টা বাজারের এই পূর্বাভাস মিলে গিয়েছিল। এখন দেখার ২০২৪ সালেও সেই ধারা বজায় থাকবে কি না।
১৯২০
ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাস বলছে, বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত যে সব সময় মেলে, এমন নয়। বুথফেরত সমীক্ষা একেবারে ভুল প্রমাণিত হওয়ার উদাহরণও অসংখ্য। বুথফেরত সমীক্ষার মতোই সাট্টা বাজারের পূর্বাভাস কখনও মেলে, আবার কখনও মেলে না।
২০২০
এই বাজারের ফলাফলের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই। কোনও ভাবেই এটা জনমত সমীক্ষা নয়। এই বাজারের ফলাফলের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের কোনও সম্পর্ক নেই।