Patanjali Row: Ramdev ready for death penalty if their claim is fake after Supreme Court rebuked dgtl
Ramdev
রামদেব চাইলেন মৃত্যুদণ্ড, দিতে রাজি ১০০০ কোটি টাকা! সত্য ঢেকেছে তাঁর সংস্থার বিজ্ঞাপন?
রামদেবের অভিযোগ, কয়েক জন চিকিৎসক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁর সংস্থাকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছেন। এবং সেই চেষ্টাই তাঁরা ক্রমাগত করে আসছেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ১০:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
আবার বিতর্কে স্বঘোষিত যোগগুরু বাবা রামদেব। সে ‘করোনার ওষুধ’ হোক কিংবা কোনও আয়ুর্বেদিক জড়িবুটি, বিভিন্ন সময়ে রামদেবের আয়ুর্বেদিক সংস্থা ‘পতঞ্জলি’র বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। আগেও বিজ্ঞাপনী প্রচারে ‘ভুল বার্তা’ দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে আদালতে। তবে এ বার সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের পর রামদেবও পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন। তাঁর দাবি, যদি তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়ানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তিনি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত।
০২১৫
গত ২১ নভেম্বর ওই সংস্থার উদ্দেশে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, বিভিন্ন রোগের নিরাময় হিসাবে তাঁর সংস্থার বিজ্ঞাপনে ‘মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর দাবি’ বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, প্রতিটি দাবির জন্য জরিমানা হিসাবে ১ কোটি টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে রামদেবের সংস্থাকে।
০৩১৫
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লাহ এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চ মামলা শুনছিল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মিথ্যা বিজ্ঞাপনী প্রচার পিছু রামদেবের সংস্থাকে ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হতে পারে। আদালত এটা মৌখিক ভাবে জানানোর পর তেড়েফুঁড়ে উঠেছে রামদেবের সংস্থা।
০৪১৫
রামদেবের অভিযোগ, কয়েক জন চিকিৎসক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁর সংস্থাকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছেন। এবং সেই চেষ্টাই তাঁরা ক্রমাগত করে আসছেন। শুধু তাঁর সংস্থাই নয়, রামদেবের দাবি, ওই চিকিৎসকেরা আসলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন। রামদেবের পাল্টা অভিযোগ, তাঁর সংস্থার নামে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।
০৫১৫
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এবং মন্তব্যের পর উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন রামদেব। সেখানে স্বঘোষিত যোগগুরু বলেন, ‘‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এখন একটি খবরই ভাইরাল। সেটা হল, সুপ্রিম কোর্ট পতঞ্জলিকে ভর্ৎসনা করেছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, যদি মিথ্যা প্রচার চালানো হয় তবে জরিমানা দিতে হবে।’’
০৬১৫
সাংবাদিক বৈঠকে রামদেব দাবি করেন, তাঁরা কোনও মিথ্যা প্রচার করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে কয়েক জন চিকিৎসক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। তার পর সুর চড়িয়ে রামদেব বলেছেন, ‘‘যদি আমরা মিথ্যাবাদী হই, তবে ১০০০ কোটি টাকা জরিমানা করুন। আমরা মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত।’’
০৭১৫
বস্তুত, গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-‘ঘনিষ্ঠ’ এই যোগগুরুর সংস্থার নাম যেমন বিতর্কে জড়িয়েছে, তেমনই উল্টো দিক থেকে তাঁর সংস্থার শ্রীবৃদ্ধিও ঘটেছে। সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে রামদেব বলেন, ‘‘আমরা যদি মিথ্যাবাদী না হই, তা হলে যাঁরা যাঁরা মিথ্যা ছড়িয়েছেন, প্রত্যেককে শাস্তি দিন।’’ রামদেবের সংযোজন, ‘‘গত ৫ বছর ধরে রামদেব এবং পতঞ্জলিকে নিশানা করা হচ্ছে।’’
০৮১৫
কী নিয়ে এত বিতর্ক? আসলে বিতর্কের শুরু দেশের করোনা পর্বে। তখন ‘কোভিড প্রতিরোধী’ ওষুধ ‘করোনিল কিট’ বাজারে এনেছিল পতঞ্জলি। অভিযোগ ওঠে, কোভিড প্রতিরোধী না-হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে রামদেবের সংস্থা।
০৯১৫
২০২০ সালের ২৩ জুন প্রথম বার বাজারে আসে ‘করোনিল কিট’। করোনিল এবং শ্বাসারি বটি নামে দু’ধরনের ট্যাবলেট এবং ‘অণু তেল’ নামের ২০ মিলিলিটারের একটি তেলের শিশি নিয়ে তৈরি ওই কিটের দাম রাখা হয় ৫৪৫ টাকা।
১০১৫
চাইলে আলাদা ভাবে ট্যাবলেট এবং তেল কেনা যাবে বলেও রামদেবের সংস্থা জানিয়েছিল। বিপুল বিক্রি হয় ওই ওষুধ। রামদেবের সংস্থা হিসাব দিয়ে জানায়, গত অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২৩ লক্ষ ৫৪ হাজার করোনিল কিট বিক্রি করেছে তারা।
১১১৫
কিন্তু একই সময়েই করোনিল-বিতর্ক শুরু হয়। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মিথ্যা বিজ্ঞাপনী প্রচারের অভিযোগ এনেছিল আইএমএ। সেই প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে রামদেবের সংস্থা।
১২১৫
রামদেবের সংস্থার বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে সরকারের উদ্দেশেও বেশ কিছু বার্তা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়েছে, এমন মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনী প্রচার বন্ধ করতে সরকারের কোনও নির্দেশিকা থাকলে ভাল হয়।
১৩১৫
সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের পর রামদেব কিন্তু ঝুঁকতে নারাজ। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘যত রকম খারাপ এবং অপশক্তি রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংস্থার লড়াই চলছে এবং চলবে।’’
১৪১৫
বিতর্ক এবং রামদেব অবশ্য পাশাপাশি চলেন। সে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়েই হোক বা বিভিন্ন সময়ে ‘যোগগুরু’র আলটপকা মন্তব্য। কিছু দিন আগে যেমন রামদেবের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল। যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মেয়েদের শাড়ি পরলে দেখতে ভালই লাগে, সালোয়ার পরলেও ভাল লাগে। কিছু না পরলেও ভাল লাগে।’’
১৫১৫
অ্যালোপ্যাথি ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে মন্তব্য করেও বিতর্ক তৈরি করেছেন রামদেব। এ জন্যও তাঁর সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ তো সাফ জানিয়ে দেয়, রামদেব আয়ুর্বেদশাস্ত্র জনপ্রিয় করার জন্য প্রচার চালাতেই পারেন। কিন্তু তার জন্য তাঁর অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থার সমালোচনা করা উচিত নয়।