Pakistan Crisis: Prices of necessary items skyrocketed dgtl
Pakistan Crisis
পাকিস্তান জুড়ে হাহাকার, খাবারের তীব্র সঙ্কট এবং আকাশছোঁয়া দামে নাভিশ্বাসের ছবি
বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় জেরবার পাকিস্তানের অর্থনীতি। সঙ্গে বিদেশি ঋণে জর্জরিত। তার মধ্যেই ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা সে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডকে একেবারে ভেঙে দিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
চরম আর্থিক সঙ্কট আর খাদ্যসঙ্কটে জেরবার পাকিস্তান। পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ— সব প্রান্তেই শুধু হাহাকারের ছবি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। পাকিস্তান জুড়ে পথেঘাটে শুরু হয়েছে ক্ষোভ-বিক্ষোভের ঝড়।
ছবি সংগৃহীত।
০২১৬
বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায়, অনেক কাল ধরেই জেরবার পাকিস্তানের অর্থনীতি। সঙ্গে বিদেশি ঋণে জর্জরিত। তার মধ্যেই ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা সে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডকে একেবারে ভেঙে দিয়েছে। পিঠ ঠেকে গিয়েছে দেওয়ালে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩১৬
আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানে নতুন সঙ্কট হিসাবে জুড়ে গিয়েছে তীব্র খাদ্যসঙ্কট। বন্যায় ফসলের বিপুল ক্ষতি হওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু-হু করে বাড়তে শুরু করে। যা সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান সরকার। আর এই ঘটনাই দেশ জুড়ে হাহাকারের পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
গমের আকাল চলছে দেশ জুড়ে। আর তার সঙ্গে লাফিয়ে বেড়েছে গম এবং ময়দার দাম। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, করাচিতে এক কেজি ময়দা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ পাক রুপিতে। ইসলামাবাদ এবং পেশোয়ারে ১০ কেজি ময়দার বস্তা বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার পাক রুপিতে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৬
এক দিকে ময়দার আকাল, অন্য দিকে আকাশছোঁয়া দামে দিশাহারা হয়ে ভর্তুকির ময়দা পাওয়ার জন্য মারামারি করছেন পাক নাগরিকরা। গত দু’সপ্তাহে ১৫ কেজি ময়দার দাম ৩০০ পাক রুপি বেড়েছে বলে অ্যারি নিউজ-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৬
সব মিলিয়ে, এই মুহূর্তে দেউলিয়া হওয়ার পথে পাকিস্তানে অর্থনীতি। ইতিমধ্যেই সে দেশের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার তলানিতে এসে ঠেকেছে। বর্তমানে তাদের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার রয়েছে ৫০০ কোটি ডলার।
ছবি: সংগৃহীত।
০৮১৬
ইমরান খান পরিচালিত সরকারের আমলে সে দেশের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ছিল ১ হাজার কোটি ডলার। কিন্তু ২০২৩ অর্থবর্ষের শুরুতেই ভয়ানক ভাবে তা কমতে শুরু করেছে। বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার ৩ সপ্তাহেই নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৬
পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে বর্তমানে রয়েছে ৫০০ কোটি ডলার। কিন্তু ২০২১-এর হিসাব বলছে, সে দেশের ঋণ ছিল প্রায় ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি পাক রুপি। যা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। আর এ থেকেই ছবিটা স্পষ্ট যে পাকিস্তানের অর্থনীতির হাল কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। পাকিস্তানের মোট বিদেশি ঋণের ৩০ শতাংশই চিনের কাছে।
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৬
প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতায় এসে তাঁর পূর্ববর্তী সরকারগুলিকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, দেশকে ঋণে জর্জরিত করেছে আগের সরকার। দেশবাসীকে এই ঋণের বোঝা থেকে উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তথ্য বলছে, তেহরিক-ই-ইনসাফ সরকারেরই ৪৩ মাসে ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ হয়েছিল। গত বছরের এপ্রিলে ইমরান যখন প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরেন, তখন সরকারের নতুন ঋণ যোগ হওয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি পাক রুপি।
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৬
সম্প্রতি পাকিস্তান সঙ্কটের বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো এবং ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও লুটপাট চলছে, কোথাও খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি, মারামারি। কোথাও আবার খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটেছে।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৬
শুধু গম বা ময়দা নয়, পাকিস্তান ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিক্স (পিবিএস)-এর তথ্য বলছে, যে পেঁয়াজের দাম ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রতি কেজি ৩৬ পাক রুপি ছিল, এ বছরের জানুয়ারিতে সেই পেঁয়াজের দামই পৌঁছেছে কেজিপ্রতি ২২০ পাক রুপিতে। অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৫০০ শতাংশের উপর।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩১৬
পিবিএস-এর তথ্য বলছে, এক কেজি মুরগির মাংসের দাম গত বছরের জানুয়ারিতে ছিল ২১০ পাক রুপি। এ বছর তা ৮২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৮৩ পাক রুপি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪১৬
সর্ষের তেলের দাম ৩৭৪ পাক রুপি থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৩২। এক বছরে দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। দুধ, রুটি, কলার দাম গত বছরের জানুয়ারিতে ছিল যথাক্রমে ১১৪, ৬৫, ৮২ পাক রুপি। এ বছরে সেই দাম ছুঁয়েছে ১৪৯, ৮৯, ১১৯ পাক রুপি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৬
চাল, ডাল এবং গমের দাম এক বছরে বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ডিজেল ৬১ শতাংশ এবং পেট্রলের দাম ৪৮ শতাংশ বেড়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৬
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান-এর তথ্য বলছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ১২.৩ শতাংশ। যা ২০২২-এর ডিসেম্বরের মধ্যে বেড়ে দ্বিগুণ (২৪.৫ শতাংশ) হয়েছে। সার্বিক ভাবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ২০২১-এর ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২২-এর ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। ২০২১ সালে যা ছিল ১১.৭ শতাংশ, ২০২২ সালে তা হয়েছে ৩২.৭ শতাংশ।