Padma Setu construction was delayed because of deep conspiracy, said Sheikh Hasina dgtl
Padma Bridge
Padma Setu: ‘গভীর ষড়যন্ত্রের’ ফলে পিছিয়ে যায় পদ্মা সেতুর কাজ! কেন এমন মন্তব্য স্বয়ং হাসিনার
দু’বছর আগেই তৈরি হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের ‘স্বপ্ন-সেতু’র। কিন্তু হয়নি। ‘অজানা কারণে’ সেতু নির্মাণের কাজ পিছিয়েছিল। এমটাই জানালেন হাসিনা।
সংবাদ সংস্থা
ঢাকাশেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২২ ১৩:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১৩০
দু’বছর আগেই তৈরি হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের ‘স্বপ্ন-সেতু’র। কিন্তু তা হয়নি। কোনও ‘অজানা কারণে’ না কি এই সেতু নির্মাণের কাজ পিছিয়েছিল।
০২৩০
কিন্তু কেন পিছিয়ে যায় পদ্মা সেতু তৈরির কাজ? সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ উভয় দেশের মানু্ষের মনেই।
০৩৩০
তবে কেন সেতু তৈরির কাজ পিছিয়েছিল, তার উত্তর মিলল খোদ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেই।
০৪৩০
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘গভীর ষড়যন্ত্রের’ কারণেই পিছিয়ে যায় পদ্মা সেতু তৈরির কাজ।
০৫৩০
বুধবার বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কথা জানিয়েছেন। সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতেই প্রশ্নোত্তর পর্বে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।
০৬৩০
প্রথম আলো জানিয়েছে, হাসিনার কাছে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ মেরিনা জাহান।
০৭৩০
উত্তরে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেন, ‘‘এই সেতুর সঙ্গে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহসিকতা, সহনশীলতা এবং আমাদের প্রত্যয় জড়িয়ে আছে। আমরা এই সেতু তৈরি করবই, সেই জেদ ছিল।’’
০৮৩০
হাসিনা আরও বলেন, ‘‘ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের সেতু নির্মাণ দুই বছর পিছিয়ে যায়। কিন্তু এতে আমরা হতাশ হইনি। শেষে অন্ধকার ভেদ করে আলোর মুখ দেখেছি আমরা। দেশি ও বিদেশি সব ষড়যন্ত্র এবং বাধাবিপত্তি পেরিয়ে পদ্মা সেতুর স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ পেয়েছে।’’
০৯৩০
মুজিব-কন্যা আরও দাবি করেন, পদ্মা সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহা-কংক্রিটের একটি পরিকাঠামো নয়। এই সেতু বাংলাদেশের মানুষের অহংকার, গর্ব, সক্ষমতা এবং মর্যাদার প্রতীক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
১০৩০
পদ্মা সেতুর প্রশংসা করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সবুজ, সোনালি আলোর ঝলকানি। ৪২টি স্তম্ভ যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি।’’
১১৩০
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়া পয়েন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন হাসিনা।
১২৩০
বিএনপি-জামাত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়। পদ্মা সেতু অন্য কোথাও তৈরি করা যায় কি না, তার জন্য তারা জাপান সরকারকে সমীক্ষা চালাতে বলে।
১৩৩০
দ্বিতীয় সমীক্ষার পর জাপান জানায় পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মাওয়া পয়েন্টে স্থানটি উপযুক্ত।
১৪৩০
এর পর ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু নির্মাণকেই সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার দেন বলে হাসিনা জানান। এর পর খুব অল্প সময়ে এই সেতুর নকশা তৈরি করে নির্মাণকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার।
১৫৩০
২০১১ সালে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কের সঙ্গে হাত মেলায় বাংলাদেশ। লক্ষ্য ছিল, এই সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এই সব ব্যাঙ্কগুলি থেকে ঋণ নেওয়া।
১৬৩০
হাসিনার দাবি, এর পর ঠিকাদার নিয়োগ করে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরই ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
১৭৩০
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের বিভিন্ন নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শ দেওয়া সংস্থা নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাঙ্ক, এডিবি, জাইকা ও আইডিবি ঋণ চুক্তি স্থগিত করে।
১৮৩০
২০১৭ সালে কানাডার টরন্টোর একটি আদালতে দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এর পর বিশ্বব্যাঙ্ক এই প্রকল্পে আবার ফিরে আসার কথা ঘোষণা করলেও দেশ ও জনগণের স্বার্থে এই ঋণ না নেওয়ারই সিদ্ধান্ত নেয় হাসিনা সরকার।
১৯৩০
এর পরই বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেন হাসিনা।
২০৩০
প্রায় দু’দশকের পরিকল্পনার পর তৈরি হয়েছে পদ্মা সেতু। ২০০৭ সালে পদ্মা সেতুর জন্য প্রথম বাজেট পাশ করা হয়। সেই সময় দাঁড়িয়ে এই সেতু তৈরির জন্য ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা খরচ হবে বলে বাজেটে উল্লেখ করা হয়।
২১৩০
সেতুর মূল নকশা এবং দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির কারণে ২০১১ সালে খরচের হিসেব বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।
২২৩০
২০১৬ সালে আরও ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা যোগ হয় পদ্মা সেতুর বাজেটে। চতুর্থ দফার বাজেটে এই সেতুর বাজেট বাড়ে আরও ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২৩৩০
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করতে প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তবে বাজেটের পুরো টাকা এখনও খরচ হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
২৪৩০
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য এলাকার রেল সংযোগ তৈরি হবে।
২৫৩০
পদ্মা সেতু তৈরির ফলে সে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের পাশাপাশি কৃষি, কুটিরশিল্প-সহ বহু ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলেও হাসিনা জানিয়েছেন।
২৬৩০
সংসদে হাসিনা আরও জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর ফলে সে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় উন্নতি হবে। এর ফলে বেকারত্ব কমার পাশাপাশি বাংলাদেশের দারিদ্র্য কমবে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
২৭৩০
পদ্মা সেতু নিয়ে আবেগ এই পর্যায়ে যে, সেতু নিয়ে গান ও কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছেন সরকারি দলের দু’জন সংসদ। জাতীয় সংসদে ২০২২–২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করেন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নুর। কয়েকটি গানের অংশবিশেষ গেয়ে শোনান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।
২৮৩০
সেতুর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত বাংলাদেশের প্রশাসন। সেতু উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেতুতে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
২৯৩০
প্রথম আলো জানিয়েছে, ঢাকা ও ফরিদপুরের ভাঙ্গার মধ্যে ৫৫ কিলোমিটার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে সড়ক ও জনপথ দফতর।
৩০৩০
সড়কের টোল আদায়ের দায়িত্ব পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন। তারা রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ, যানবাহন থেকে টোল আদায়, যানবাহনের আধুনিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম।