North Korea bans sunglasses and wedding dresses as well as slangs dgtl
Kim Jong Un
বিদেশি গান শুনলেই মৃত্যুদণ্ড, নিষিদ্ধ ভিন্দেশি গালি! কিমের আজব খেয়ালে ভয়ে কাঁপছে উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ায় পর পর বেশ কিছু জিনিস নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদেশি কোনও জিনিসই সেখানকার মানুষ ব্যবহার করতে পারেন না। মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবই দেশ থেকে মুছে ফেলতে চান কিম।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন আরও কঠোর হচ্ছেন। তাঁর দেশের আইনকানুন আরও সর্বনেশে হয়ে উঠছে। বাইরের জগতের জন্য দরজা একেবারেই বন্ধ করে দিতে চাইছেন কিম। তাঁর সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্তে সেই ইঙ্গিত মিলেছে।
০২১৮
বিবিসির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ায় পর পর বেশ কিছু জিনিস নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদেশি কোনও জিনিসই সেখানকার মানুষ ব্যবহার করতে পারেন না। এমনকি, বিদেশি গান শোনাও সেখানে ‘মহাপাপ’।
০৩১৮
বিদেশি অর্থে মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবই দেশ থেকে মুছে ফেলতে চান কিম। গত কয়েক বছর ধরে উত্তর কোরিয়ার প্রশাসনে সেই চেষ্টা চোখে পড়ছে। নাগরিকদের সাধারণ চলাফেরাতেও হস্তক্ষেপ করছে প্রশাসন।
০৪১৮
বিবিসির প্রতিবেদনে দাবি, উত্তর কোরিয়ায় নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে সাদা রঙের বিয়ের পোশাক। সাধারণত, সেখানে কোনও বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেকে সাদা গাউন পরতে দেখা যেত। তা আর করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন কিম।
০৫১৮
কিম প্রশাসনের বক্তব্য, বিয়েতে কনের সাদা পোশাকের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ান সংস্কৃতির প্রভাব। বিদেশি প্রভাব ঠেকাতে তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশে নিজস্ব সংস্কৃতি লালন করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রশাসক কিম।
০৬১৮
শুধু বিয়ের পোশাকেই নয়, বিয়ের রীতিতেও নেমে এসেছে সরকারি ফতোয়া। প্রচলিত প্রথা ছিল, বিয়ের দিন কনেকে কাঁধে তুলে নেন বর। এই রীতিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দাবি, এতেও রয়েছে দক্ষিণী প্রভাব।
০৭১৮
দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি, বিয়ের অনুষ্ঠানে সব ধরনের আড়ম্বর নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন কিম। বিয়ে নামক অনুষ্ঠানটিতে আনন্দের কোনও কারণ নেই বলে মনে করেন তিনি। এটি অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি সামাজিক রীতি।
০৮১৮
বিবিসি জানিয়েছে, গত বছর উত্তর কোরিয়ায় ২২ বছরের এক যুবককে বিদেশি গান শোনার জন্য শাস্তি দেওয়া হয়। ওই যুবককে মৃত্যুদণ্ড দেন কিম। সকলের সামনে প্রকাশ্যে সেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
০৯১৮
যুবক পেশায় কৃষক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ৭০টি বিদেশি গান শুনেছেন। তিনটি বিদেশি ছবি দেখেছেন। শুধু তা-ই নয়, ওই ছবিগুলি তিনি অন্যদের মধ্যে বিলিও করেছিলেন।
১০১৮
বিবিসির দাবি, তাঁদের এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখে গত বছর প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা অস্বীকার করেছিল কিমের দেশ। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার একাধিক সংবাদমাধ্যমেও সেই খবর প্রকাশিত হয়।
১১১৮
২০২০ সালে কিমের দেশে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করা হয়। তাতে বলা হয়েছিল, দক্ষিণ কোরিয়ার কোনও বিনোদনমূলক উপাদান দেখা অথবা প্রচার করা উত্তর কোরিয়ায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তার শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।
১২১৮
ওই আইনের ভিত্তিতেই যুবককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এর পর একই অপরাধে উত্তর কোরিয়ার আরও দুই কিশোরকে কঠোর শ্রমের শাস্তিও দেওয়া হয়েছিল।
১৩১৮
শুধু বিনোদন নয়, বিদেশি গালিগালাজও নাকি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিমের দেশে। কেউ যদি প্রকাশ্যে এমন কোনও গালি দেন, যার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার যোগ রয়েছে, তবে তা-ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে।
১৪১৮
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, কিমের দেশে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা স্বীকার করা হয় না। প্রশাসনের তরফে যখন তখন যে কারও বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালানো হয়।
১৫১৮
বাড়ি বাড়ি তল্লাশির এই প্রবণতা ২০২১ সাল থেকে বেড়ে গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিবেদনে। বিদেশি সংস্কৃতির কোনও ছোঁয়া কোনও বাড়িতে রয়েছে কি না, তার খোঁজে দিনের পর দিন কার্যত চিরুনিতল্লাশি চালিয়েছেন কিমের আধিকারিকেরা।
১৬১৮
উত্তর কোরিয়ায় সাধারণ মানুষের মোবাইল ফোনেও সরকারি নজরদারি চালানো হয় বলে অভিযোগ। সরকার মানুষের ব্যক্তিগত মেসেজ পড়ে, ফোনে আড়ি পাতে। এমনকি, যে কোনও সময়ে ফোন সার্চও করা হয়।
১৭১৮
সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ায় সানগ্লাস পরা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সানগ্লাসকে দেশের সংস্কৃতির বিরোধী বলে দেগে দিয়েছেন কিম। যদিও তাঁকে সানগ্লাস পরতে দেখা গিয়েছে একাধিক বার।
১৮১৮
কিমের এই ধরনের বিদেশি সংস্কৃতিবিরোধী কার্যকলাপে তটস্থ সে দেশের মানুষ। অভিযোগ, বিদেশি সংস্কৃতির বিরোধিতা করার নামে কিম আসলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় আরও হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন। এই ধরনের নীতির সমালোচনা চলছে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমেও।