None can stay more than six hours in world’s scariest haunted house dgtl
Scariest House
কেউ বেশি ক্ষণ থাকতে পারেন না, প্রবেশে লাগে ‘ফিট সার্টিফিকেট’! পৃথিবীর ‘সবচেয়ে ভয়ের বাড়ি’তে স্বাগত
বাড়ির মালিক রাস ম্যাকাকামে। তিনি নৌসেনায় কাজ করেছিলেন ২৩ বছর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সেধে ভয় পেতে কারও ইচ্ছা করে? এমন মানুষের সংখ্যা নাকি এ পৃথিবীতে নেহাত কম নয়। সে কারণে নিজের আস্ত একটা বাড়িতে লোক ডেকে ভয় দেখানোর কাজ শুরু করেছিলেন এক ব্যক্তি। আর সেই ভয় এতটাই মারাত্মক যে, ছ’ঘণ্টার বেশি বাড়িতে কেউ টিকতে পারেননি।
০২২০
আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো শহরে রয়েছে সেই বাড়ি। নাম ম্যাককামে ম্যানর। এটিকে বলা হয় ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ের বাড়ি’। যাঁরা সেখানে গিয়েছেন, বলেন, ওই বাড়ি আসলে ‘দুঃস্বপ্ন’।
০৩২০
২০১৭ সালে সেই ‘ভয়ের বাড়ি’ চলে আসে আমেরিকার টেনিসিতে। এখন সেখানেই রমরমিয়ে চলছে ভয় দেখানোর কাজ।
০৪২০
বাড়ির মালিক রাস ম্যাককামে। তিনি নৌসেনায় কাজ করেছিলেন ২৩ বছর। নিজের বাড়িতে ২০০০ সালে বাচ্চাদের জন্য হ্যালোউইন পার্টির আয়োজন করেন তিনি।
০৫২০
ক্রমে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য হ্যালোউইন পার্টি আয়োজন করতে শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর মনে হল, নাহ্। আরও ভয় দেখাতে হবে মানুষকে। অন্তত যাঁরা ভয় পেতে চান।
০৬২০
নিজের বাড়িতে শুরু করে ফেলেন ভয় দেখানোর কারবার। এর জন্য কোনও টাকা নিতেন না তিনি। তবে পরিকল্পনা, ভবিষ্যতে টাকা নিয়েই চালাবেন ভয়ের বাড়ি।
০৭২০
কেন হঠাৎ এ রকম ভাবনা এসেছিল রাসের? একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি মানুষকে ভয়ের সিনেমার মতো অভিজ্ঞতা বাস্তবে দিতে চাই। তবে তা সিনেমার মাধ্যমে সম্ভব নয়। সিনেমা আর বোকা বানাতে পারে না আমাদের।’’
০৮২০
সে কারণে নিজের বাড়িতে এ রকম ভয়ের আবহ তৈরি করেন রাস। তাঁর দাবি, মানুষের মন থেকে সব আবেগ তিনি বার করে আনতে চান। একমাত্র ভয় পেলেই নাকি সেটা সম্ভব।
০৯২০
রাসের দাবি, তাঁর থেকে বেশি ভয় কেউ দেখাতে পারে না। প্রতি বছর তাঁর বাড়ি ‘ম্যাককামে ম্যানরে’ ভয়ের মাত্রা বৃদ্ধি করেন রাস। তাঁর কথায়, ‘‘এই একটি বিষয়ে পৃথিবীতে আমার থেকে ভাল কেউ নেই।’’
১০২০
কী ভাবে ভয় দেখান রাস? তিনি নিজে কিছু করেন না। শুধু বুদ্ধি দেন। বাকি কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবীরা, যাঁরা অতীতে নিজেরা সেই বাড়িতে এসে ভয় পেয়েছিলেন।
১১২০
মোট আট ঘণ্টা ভয় দেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে সেই বাড়িতে। কিন্তু এক-দু’ঘণ্টা পর মানুষ অস্থির হয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। আট ঘণ্টা কেউই নাকি কাটাতে পারেননি ম্যাককামের বাড়িতে।
১২২০
ম্যাককামের বাড়িতে সর্বোচ্চ ছ’ঘণ্টা থাকার রেকর্ড রয়েছে এক তরুণীর। ২০১৪ সালে সারা পি নামে এক তরুণী সেই বাড়িতে ছিলেন ছ’ঘণ্টা। আজ পর্যন্ত তাঁকে কেউ টপকে যেতে পারেননি বলে দাবি ম্যাককামের।
১৩২০
২০০৮ সালে ওই বাড়িতে এক ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। তার পর শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই ম্যাককামের বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি পেতেন ইচ্ছুকেরা। চিকিৎসকদের দেওয়া ফিট সার্টিফিকেট দেখাতে হত তাঁদের।
১৪২০
যাঁরা ভয় পেতে চাইতেন, তাঁদের নির্দিষ্ট কোনও জায়গা থেকে চোখ বেঁধে তুলে আনা হত ম্যাককামের বাড়িতে। তার পর শুরু হত ভয় দেখানোর পালা। গলায় জড়িয়ে দেওয়া হত সাপ। যা আদতে ছিল নকল। কিন্তু ভয় পেতে যাঁরা আসতেন, তাঁরা বুঝতেন না।
১৫২০
যাঁদের ভয় পাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাঁরা দাবি করেছেন, গায়ে ইঁদুর, ট্যারান্টুলা (মাকড়সা) ছেড়ে দেওয়া হত। কামিয়ে দেওয়া হত মাথা। কাউকে আবার মাস্ক পরিয়ে মুখ ডুবিয়ে দেওয়া হত জলে।
১৬২০
বাড়ির ভিতরের বেশ কিছু ভিডিয়ো মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, নকল রক্ত ঢেলে দেওয়া হচ্ছে লোকজনের গায়ে। মুখ, হাত বেঁধে বিকট শব্দের মধ্যে বসিয়ে রাখা হচ্ছে দীর্ঘ ক্ষণ।
১৭২০
যাঁরা ভয় পেতে এসেছেন, তাঁদের গলা টিপে থাকছেন মুখোশ পরা স্বেচ্ছাসেবীরা। ভয়ে চিৎকার করছেন তাঁরা। কাউকে আবার ফ্রিজে ঢুকিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে দরজা। অভিযোগ, লোকজনকে মেরে হাড়ও ভেঙে দেওয়া হয়েছে সেই বাড়িতে। টেনে হিঁচড়ে ঘোরানো হয়েছে প্রায় এক কিলোমিটার।
১৮২০
বাড়িতে ক্রমাগত হয় ভূতুড়ে শব্দ। চোখের উপর ফেলা হয় আলো। এ সবের বদলে লোকজনের থেকে টাকা নিতেন না ম্যাককামে। কুকুরের জন্য খাবার দান করে যেতে বলতেন।
১৯২০
এই নিয়ে বিভিন্ন সময় ম্যাককামের দিকে আঙুল উঠেছে। অনেকে তাঁর মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। অভিযোগ করেছেন, তিনি ‘স্যাডিস্ট’। অনেক মামলাও হয়েছে। তথ্যচিত্র, সিনেমা, সিরিজ়— সবই হয়েছে এই বাড়ি নিয়ে।
২০২০
২০২৩ সালে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে টেনিসির আদালত। জানিয়েছে, এই বাড়িতে সত্যিই ‘ক্রেতা সুরক্ষা আইন’ লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, দেখতে হবে। সেই তদন্ত এখনও চলছে।