Nitish Kumar switching side many times and remained in power dgtl
Nitish Kumar
নীতীশ ‘ডিগবাজি’ কুমার! হাতে হ্যারিকেন থেকে পদ্ম, আবার হ্যারিকেন... এক নজরে নীতিবাগীশ ইতিহাস
যত বার জোটের হাত ছেড়েছেন, তত বারই দোহাই দিয়েছেন ‘নীতি’-র। রবিবার চতুর্থ বার বিজেপির হাত ধরে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হলেন নীতীশ। আবার ছাড়লেন আরজেডির হাত।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
বার বার জোট বদলেছেন। বিজেপির হাত ছেড়েছেন। আবার ধরেছেন। আবার ছেড়েছেন। মাঝে ধরেছিলেন অতীতের প্রধান প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর হাত। যত বার জোটের হাত ছেড়েছেন, তত বারই দোহাই দিয়েছেন ‘নীতি’-র। রবিবার চতুর্থ বার বিজেপির হাত ধরে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন নীতীশ। আবার ছাড়লেন আরজেডির হাত।
০২১৫
২০০৫ সালে পদ্মের হাত ধরে প্রথম বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতীশ। ২০১০ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। প্রথম বার জোটবদল ২০১৩ সালে। নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করেছিল বিজেপি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ মানেননি। এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। ১৭ বছরের সম্পর্ক ছিল এনডিএ-র সঙ্গে।
০৩১৫
বিজেপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীই হবেন মুখ। নীতীশ তা মানেননি। এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। বিহারে একা লড়েছিল জেডিইউ।
০৪১৫
২০১৪ সালে বিপুল ভোটে জিতে দেশে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। বিহারে ৪০টির মধ্যে ২২টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। সেখানে নীতীশের জেডিইউ জিতেছিল দু’টি আসনে। হারের দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন নীতীশ।
০৫১৫
মুখ্যমন্ত্রী হন জিতনরাম মাঝিঁ। লালুর দল আরজেডি এবং কংগ্রেসের সমর্থনে বিধানসভায় আস্থাভোটে জিতে ক্ষমতা ধরে রাখে জেডিইউ। সেই জেডিইউ-কংগ্রেস-আরজেডির ‘মহাগঠবন্ধন’ গঠন। কয়েক মাস পর জিতনরামকে সরিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ।
০৬১৫
২০১৫ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয় ‘মহাগঠবন্ধন’। মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন লালুর ছেলে তেজস্বী যাদব।
০৭১৫
কিন্তু এক বছরের মধ্যেই খারাপ হতে থাকে জোটসঙ্গী হ্যারিকেন প্রতীক আরজেডির সঙ্গে নীতীশের সম্পর্ক। ২০১৬ সাল নাগাদ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দলের মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসতে থাকে। নীতীশ ঘনিষ্ঠ মহলে বলতে থাকেন, আরজেডির সঙ্গে তাঁর ‘নীতি’ মিলছে না।
০৮১৫
২০১৬ সালে মোদী সরকার দু’হাজার টাকার নোট বাতিল করে। নীতীশ খোলাখুলি ওই পদক্ষেপকে সমর্থন জানান। কেন্দ্রের জিএসটি নীতিরও প্রশংসা করেন। সে সময়ই লালু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করে সিবিআই।
০৯১৫
সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম ছিল উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীরও। নীতীশ ‘নীতি’-র কথা তুলে তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার কথা বলেন। লালু বা তেজস্বী, কেউই মানেননি। ২০১৭ সালে আবার হ্যারিকেনের হাত ছেড়ে বিজেপির হাত ধরেন নীতীশ। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন। তার পর আবারও এনডিএকে নিয়ে সরকার গড়েন, চতুর্থ বার মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ।
১০১৫
২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হাত ধরেই লড়াই করেন নীতীশ কুমার। জয়ও পান। কিন্তু তাঁর দল জেডিইউ পেয়েছিল ৪৫টি আসন। সেখানে বিজেপির ঝুলিতে ছিল ৭৮। যদিও প্রতিশ্রুতি মতো নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসায় বিজেপি।
১১১৫
কিন্তু বিজেপির আসন বেশি থাকায় নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী হলেও সরকারের নিয়ন্ত্রণ ছিল বিজেপিরই হাতে। শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে বিহারে উপমুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির রেণু দেবী, তারকিশোর প্রসাদ।
১২১৫
এক বছর যেতে না যেতেই বিজেপির সঙ্গে নীতীশের মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসতে থাকে। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে কেন দু’জন, সেই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকেন নীতীশ। বিজেপির জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খোলেন নীতীশ।
১৩১৫
দু’বছর পর ২০২২ সালে বিজেপির সঙ্গে নীতীশের সংঘাত স্পষ্ট হয়। নীতীশ অভিযোগ করেন, বিজেপি তাঁর দলে ভাঙন ধরাতে চাইছে। ওই বছরই বিজেপির হাত ছেড়ে লালুর দলের সমর্থনে আবার মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ। উপমুখ্যমন্ত্রী হন তেজস্বী।
১৪১৫
সে সময় নীতীশ বিজেপির হাত ধরার প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘প্রশ্নই ওঠে না! মৃত্যুবরণ করব, তবু ওদের সঙ্গে জোট করব না।’’ ২০২৩ সালের জানুয়ারি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেছিলেন নীতীশ। আরও বলেছিলেন, বিজেপির সঙ্গে জোটে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সে দিন ভুল ছিল। সেই ভিডিয়ো এখন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
১৫১৫
এক বছর ঘুরতে না ঘুরতে নীতীশ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন। আবার হাত ধরলেন সেই বিজেপির। রবিবার সকালে পটনায় রাজভবনে গিয়ে দিয়ে এলেন ইস্তফা। রবিবার বিকেলেই আবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন তিনি। সঙ্গে সেই বিজেপি, যাদের হাত ধরে ২০০৫ সালে প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি।