Nitish Kumar might return as the CM of Bihar with BJP as per sources dgtl
Nitish Kumar
বিহারের মসনদে আবার বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে থাকবেন নীতীশ? ‘ইন্ডিয়া’র অন্দর নিয়ে জোর জল্পনা
এনডিএ-র নেতা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন জেডিইউ প্রধান। তাঁর সঙ্গেই বিহারের নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী হতে পারে বিজেপি নেতা সুশীল মোদী।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
গত এক দশকে চতুর্থ বার নীতীশ ফিরছেন বিহারের মসনদে? বলাই বাহুল্য বিহার রাজনীতির কেন্দ্রে এখন তিনি, তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই সকলের মনোযোগ। তবে এ বার কী জোট বদলের কানাঘুষো সত্যি করে দিয়ে বিজেপির সঙ্গে ফিরছেন তিনি? জল্পনা তুঙ্গে বিহারে।
০২২৪
প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর রাজনৈতিক মহলে জল্পনা আগামী রবিবার (২৮ জানুয়ারি) এনডিএ-র নেতা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন জেডিইউ প্রধান। তাঁর সঙ্গেই বিহারের নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী হতে পারে বিজেপি নেতা সুশীল মোদী। বিহার রাজনীতিতে যিনি, ‘নীতীশ ঘনিষ্ঠ’ হিসাবেই পরিচিত।
০৩২৪
জেডিইউ-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত পেলেই বিহারে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’ ছেড়ে ফের এনডিএ-তে যোগ দেবেন নীতীশ। তবে জাতীয় স্তরের বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতারা এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাইছেন না।
০৪২৪
বিজেপি এবং জেডিইউর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পশুপতি পারসের ‘রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি’ (আরএলজেপি) এবং প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের সাংসদ-পুত্র চিরাগের দল ‘লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)’ এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝিঁর ‘হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা’ (হাম)-ও নতুন সরকারে শামিল হতে পারে বলে জল্পনা।
০৫২৪
যদিও জিতনরাম এবং বিহারের এনডিএর আর এক শরিক ‘রাষ্ট্রীয় লোক জনতা দল’ (আরএলজেডি)-র নেতা উপেন্দ্র কুশওয়াহার সঙ্গে নীতীশের সম্পর্ক মসৃণ নয়। চিরাগও নীতীশের ‘কট্টর সমালোচক’ বলেই পরিচিতি। তবে জামুইয়ের ওই তরুণ সাংসদ বৃহস্পতির রাতেই দিল্লি গিয়েছেন।
০৬২৪
সূত্রের খবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার তলবেই চিরাগের দিল্লি যাত্রা। এমনকি, বিহারের ১৯ জন কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ১২ জন দল ভেঙে নয়া সরকারের সমর্থন করতে পারে বলে কানাঘুষো চলছে।
০৭২৪
ওই সূত্রের দাবি, নীতীশই প্রথম জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোটে যে ভাবে তাঁকে গুরুত্বহীন করে রাখা হয়েছিল, তা মোটেই ভাল ভাবে নেননি। সূত্রের মতে, নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখতে নীতীশ তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। জেডিইউয়ের একাংশও দীর্ঘ দিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিল নীতীশের উপরে।
০৮২৪
২০২০ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে লড়ে জিতলেও ২০২২ সালের অগস্টে এনডিএ ছেড়ে বিহারে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের সমর্থন নিয়ে ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার গড়েছিলেন নীতীশ।
০৯২৪
কেন আবার তিনি বিজেপির সঙ্গী হতে চাইছেন? জেডিইউ-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, ‘ইন্ডিয়া’ সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে তাঁর। তাই আবার ফিরতে চান এনডিএতে। এ প্রসঙ্গে উঠে আসছে তিনটি ‘কারণ’।
১০২৪
প্রথমত, দেশের সব রাজ্যে ঘুরে ঘুরে জোটের পটভূমিকা তৈরি করেছিলেন নীতীশ। জোটের প্রথম বৈঠকও হয়েছিল তাঁরই ব্যবস্থাপনায় পটনায়।
১১২৪
কিন্তু পরে বেঙ্গালুরু, মুম্বই ও দিল্লিতে জোটের বৈঠকে তাঁকে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। জোটের নাম ‘ইন্ডিয়া’ করাতেও তাঁর আপত্তিকে অগ্রাহ্য করা হয়। একই সঙ্গে নীতীশ নিজেই বিরোধী জোটের আহ্বায়ক হতে আগ্রহী হলেও কয়েকটি শরিক দলের আপত্তিতে তা কার্যকর হয়নি।
১২২৪
দ্বিতীয়ত, ৭৯ বিধায়কদের দল আরজেডি বেশ কিছু দিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে চাপ দিচ্ছে তাঁকে। লালু চান তাঁর পুত্র তথা উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীর হাতে পটনার কুর্সি তুলে দিতে।
১৩২৪
২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১২২ বিধায়কের সমর্থন। নীতীশের দলের বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ৪৫। ফলে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে হলে বিজেপির ৭৮ বিধায়কের সমর্থন তাঁর প্রয়োজন।
১৪২৪
সূত্রের মতে, লোকসভার আগে নীতীশের এনডিএ অন্তর্ভুক্তিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিশেষ কোনও আপত্তি নেই। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ফের এক বার নীতীশের হাত ধরতে সমস্যা নেই।
১৫২৪
কারণ তাঁরা মনে করেন, এতে ওই রাজ্যে দলের ফল ভাল হবে। যদিও সম্রাট চৌধুরী, গিরিরাজ সিংহের মতো বিহার বিজেপির কট্টর নেতারা নীতীশের অতীত বিশ্বাসঘাতকতার কারণে তাঁকে এনডিএ-তে নেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়েছেন। কিন্তু লোকসভা ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে তাতে বেশি আমল দিতে নারাজ মোদী-শাহেরা।
১৬২৪
তৃতীয়ত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে জোটে ১৭টি আসনে লড়াই করে ১৬টিতে জয় পেয়েছিলেন নীতীশ। বিজেপি ১৭টিতে লড়ে সবগুলি এবং প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) ছ’টিতে লড়ে সবগুলি জিতেছিল।
১৭২৪
৪০টি আসনের মধ্যে বিরোধী জোটের একমাত্র কংগ্রেস একটি আসনে জিতেছিল। লালুর দলের ঝুলি ছিল শূন্য! স্বাভাবিক ভাবেই নিজেদের দখলে থাকা ১৬টি আসন ছাড়তে চান না নীতীশ। কিন্তু সেই ১৬টির মধ্যে এমন ৪-৫টি আসন রয়েছে, যা দাবি করছে আরজেডি এবং বামেরা!
১৮২৪
বস্তুত, নীতীশ যে ইন্ডিয়া জোট ছাড়তে পারেন, সেই আশঙ্কা ছিলই কংগ্রেস শিবিরের। আগামী ৩০ জানুয়ারি বিহারের পূর্ণিয়াতে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার জনসভা হওয়ার কথা রয়েছে।
১৯২৪
ওই সমাবেশে নীতীশকে আমন্ত্রণ জানানো হলে, তিনি জানিয়ে দেন, ওই দিন পটনায় সরকারি সভা রয়েছে। সেই কারণে তিনি রাহুলের পূর্ণিয়ার সভায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কিন্তু ৩ ফেব্রুয়ারি বিহারের বেতিয়াতে নরেন্দ্র মোদীর যে সভা রয়েছে, তাতে নীতীশ থাকতে পারেন বলে জেডিইউ সূত্রের খবর।
২০২৪
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে বিজেপির সঙ্গে নীতীশের হাত মেলানোর সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করা হচ্ছে। সেটা বুঝেই রাহুলের এ দফার যাত্রা শুরু হওয়ার আগে নীতীশকে ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক পদ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাতে রাজিও হয় অধিকাংশ দল।
২১২৪
কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় সর্বসম্মতিতে ওই প্রস্তাব পাশ হওয়া আটকে যায়। কেন মমতার অনুপস্থিতি সত্ত্বেও তাঁর নাম প্রস্তাব করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ক্ষুব্ধ নীতীশ।
২২২৪
পাশাপাশি নীতীশের পক্ষ থেকে আরজেডি এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে বিধানসভা ভেঙে দিয়ে লোকসভার সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তাবও আসে। কিন্তু আরজেডি ও কংগ্রেস সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। ফলে ক্ষোভ বাড়ে তাঁর।
২৩২৪
নীতীশ কুমার আবার এনডিএতে ফিরলেও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়ার বিষয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে বিহারের বিজেপি নেতাদের বড় অংশেরই। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী পদে ‘সম্ভাব্য’ কিছু নাম নিয়ে জল্পনাও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।
২৪২৪
আর সেই তালিকার প্রথমে রয়েছে বেতিয়ার বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী রেণু দেবীর নাম। ঘটনাচক্রে যিনি হাওড়ার বধূ!