Nadia Nadim, A journey of a Footballer from refugee camp to ex-Manchester City star to Denmark's National player dgtl
Nadia Nadim
Nadia Nadim: দাপিয়ে খেলেছেন ম্যান সিটি-তে, তালিবানকে বোকা বানানো নাদিয়া এ বার পাশ করলেন ডাক্তারিও!
তালিবানি রক্তচক্ষুর ভয়ে এককালে দেশ পালানো মেয়েটিই এখন ফুটবল মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
পাঁচ বছরের কঠিন শ্রমের ফল মিলেছে হাতেনাতে! মেডিক্যাল পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উতরে গিয়েছেন। তবে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে মেটানোর আগে নিজের আরও কয়েকটি স্বপ্নপূরণ করে ফেলেছেন নাদিয়া নাদিম!
ছবি: সংগৃহীত।
০২১৮
তালিবানি রক্তচক্ষুর ভয়ে এককালে দেশ পালানো মেয়েটিই এখন ফুটবল মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এককালে ভুয়ো পাসপোর্টে আফগানিস্তান ছাড়া উদ্বাস্তু মেয়েটিকেই সে দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ফুটবলার বলে মেনে নিয়েছেন অনেকে। অনেকে তো আবার ৩৪ বছরের নাদিয়াকে সর্বকালের সেরা আফগান মহিলা ফুটবলারের তকমাও দিয়েছেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩১৮
ক্লাব বা আন্তর্জাতিকস্তরে ফুটবল নিয়ে দৌড়ে বেড়ানোর পাশাপাশি ডাক্তারি পরীক্ষার পড়াশোনাও সমান তালে চালিয়ে গিয়েছেন নাদিয়া। তাতে পাশ করার পর টুইট করে ধন্যবাদ দিয়েছেন অগণিত শুভানুধ্যায়ীকে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪১৮
নাদিয়া লিখেছেন, ‘প্রথম দিন থেকে আমার পাশে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। চলার পথে যে সমস্ত নতুন বন্ধুকে পেয়েছি, তাঁদের সাহায্য ছাড়া এ সব সম্ভব হত না। আমার উপর ভরসা করার জন্য আপনাদের কাছে চিরজীবন কৃতজ্ঞ থাকব!’
ছবি: সংগৃহীত।
০৫১৮
বিপক্ষের কড়া রক্ষণকে ফালাফালা করে গোলরক্ষককে বোকা বানানোর মতোই এককালে তালিবানদের বোকা বানিয়েছিলেন নাদিয়া। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১১! ওই বয়সেই কাবুলের দক্ষিণে হেরাট শহরে তাঁদের ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন নাদিয়ারা।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৮
সাল ২০০০। ১১ বছরের নাদিয়া এক দিন খবর পেলেন, তাঁর বাবা রাবানি নাদিমকে তালিব জঙ্গিরা তুলে নিয়ে গিয়েছে। সে সময় রাবানি ছিলেন আফগান সেনার জেনারেল। সে দিনের পর বাবাকে আর দেখতে পাননি। শুনেছিলেন, কোনও এক মরুভূমিতে বাবাকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিয়েছে তালিবান। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের নিয়ে ভিটে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন নাদিয়ার মা হামিদা। এর পর তালিবান জঙ্গিদের বোকা বানিয়ে ভুয়ো পাসপোর্টে দেশ ছেড়েছিলেন নাদিয়ারা। সঙ্গে মা এবং চার বোন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৮
ভিটেমাটি-সহ নিজেদের প্রায় সমস্ত কিছু বেচে ভুয়ো পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তান পৌঁছন নাদিয়ারা। সেখান থেকে ট্রাকে করে ইটালি। তার পর লন্ডন। শেষমেশ পা রাখেন ডেনমার্কে। ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমে নাদিয়া বলেছিলেন, “আফগানিস্তানের জীবনে যুদ্ধও ছিল, যাতে বাবা খুন হয়েছিল। ওই স্মৃতিগুলো সুখের নয়। বেশ অশান্তির আর বেশির ভাগই ভয়ের। আফগানিস্তানে আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত ছিল না।”
ছবি: সংগৃহীত।
০৮১৮
ডেনমার্কের গ্রামে এসে একটি শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই হয়েছিল নাদিয়াদের। শিবিরের মাঠে ফুটবলের অনুশীলন করত ছোট ছোট মেয়েরা। আর কাঁটাতারের পাশে দাঁড়িয়ে তা-ই দেখতেন ছোট্ট নাদিয়া। সে সময় থেকেই ফুটবলের নেশা ধরে যায় তাঁর।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৮
ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর নাদিয়ার সে সময় মনে হয়েছিল, “মেয়েদের খেলতে দেখে ভেবেছিলাম, আমাকেও এ মাঠে নামতে হবে। মনে হয়েছিল, আমি ফুটবলারই হতে চাই।”
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৮
এক দিন শিবিরের ফুটবল কোচের কাছে নিজের ইচ্ছের কথাটা পেড়ে বসেন নাদিয়া। কয়েক মাস অনুশীলনের পর তাঁর অভিষেক হয় ফুটবল মাঠে। নাদিয়ার কথায়, “হঠাৎই আমার প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। ওয়ার্ম-আপ ম্যাচ খেলছি, ড্রিল করছি, চার পাশে কী ঘটছে তা বুঝতেই সময় লেগে গিয়েছিল। তবে বেশ লাগছিল!”
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৮
এক সময় শরণার্থী নাদিয়াকে ডেনমার্ক সরকার আশ্রয় দেয়। এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ২০০৫ সালে পেশাদার হিসেবে ডেনমার্কের প্রথম শ্রেণিক ক্লাব বি৫২ আলবর্গ দলের জার্সি পরেন। সে বছরের শেষে টিম ভাইবর্গে যোগ দেন। এর পরে প্রায় ১০ বছর সে দেশের একাধিক ক্লাবে খেলেছেন নাদিয়া। সবতেই তিনি দলের ভরসাযোগ্য স্ট্রাইকার।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৮
এর পরের ঘটনা আরও সাড়া জাগানো। ২০০৯ সালে ডেনমার্কের জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামেন নাদিয়া। বস্তুত, নাদিয়াই ডেনমার্কের প্রথম ফুটবলার যিনি জন্মসূত্রে ডেনিশ নন। অন্য দেশকে আপন করে নিয়েছেন নাদিয়া। ডেনমার্কের হয়ে ৯৯টি ম্যাচে করেছেন ৩৮টি গোল।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩১৮
২০১৪ সালে নাদিয়া চলে যান আমেরিকায়। স্কাই ব্লু এফসি ক্লাবের হয়ে খেলতে। এর পরের বছর লোনে তাঁকে নিয়ে নেয় পোর্টল্যান্ড থর্নস।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪১৮
২০১৮ সালে আসে তাঁর ক্লাব ফুটবল কেরিয়ারের সোনালি অধ্যায়। সে বছর উইমেন্স সুপার লিগে ম্যানচেস্টার সিটি-র জার্সি পরেন নাদিয়া।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৮
ম্যান সিটি-তে বছরখানেক কাটিয়ে ২০১৯ সালে প্যারিস সঁ জঁ-তে যোগ দেন নাদিয়া। ভাইস-ক্যাপ্টেনও হন। সঁ জঁ-তে থাকাকালীন প্রথম বার ওই ক্লাবের ইতিহাসে লিগ খেতাব জিতে নেয় তাঁর দল।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৮
সে মরসুমে ২৭টি ম্যাচে ১৮ গোল এসেছিল নাদিয়ার পা থেকে। গত বছরের জুনে অবশ্য আমেরিকার লিগ ফুটবলে রেসিং লুইভিল ক্লাবে চলে গিয়েছেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৭১৮
পায়ের নিপুণ কাজে তেকাঠিতে বল ঠেলতে দক্ষ নাদিয়া খেলার মাঝে মগ্ন ছিলেন মেডিক্যাল পরীক্ষার প্রস্তুতিতে। দুইয়ের মাঝে ফাঁক খুঁজে নাদিয়া হামেশাই সরব হয়েছেন আফগানিস্তানের নারী এবং শিশুকন্যাদের অধিকার রক্ষার দাবিতে।
ছবি: সংগৃহীত।
১৮১৮
আফগানিস্তানের নারী এবং শিশুকন্যাদের অধিকার রক্ষার লড়াইতে গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ নানা স্থানীয় সংগঠনের হয়ে ২৯ হাজার পাউন্ড তোলায় সাহায্য করেন নাদিয়া। তালিবানি শাসনে নিজভূমের মেয়েরা যে ভয়ের পরিবেশে বাস করছেন, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন এই আন্তর্জাতিক তারকা।