
সমুদ্রের রহস্য মানুষকে চিরকালই আকর্ষণ করেছে। বিশেষ করে সমুদ্রের নীচে বাসরত জীবদের নিয়ে কৌতূহল এক দিকে যেমন বহু অজানা অভিযানে নিয়ে গিয়েছে, তেমনই নেহাত ডাঙায় বসেও অসম্ভব জীবদের কল্পনা করেছে মানুষ। রূপকথার মৎস্যকন্যা, গ্রিক পুরাণে উল্লিখিত সাইরেন, উত্তর ইউরোপের কিংবদন্তির দানবিক ক্রাকেন থেকে শুরু করে আধুনিক বিশ্বে আমেরিকান সাহিত্যিক হাওয়ার্ড ফিলিপ লাভক্র্যাফট কল্পিত থুলু বা ডাগোন— সকলেই সামুদ্রিক। তবে, প্রাচীন দুনিয়ায় কল্পিত সমুদ্রদানবদের মধ্যে সব থেকে বৃহৎ হল লেভিয়াথান। বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে জ্ঞানদীপ্তির কালের ইউরোপে, এমনকি আধুনিক সাহিত্যেও বার বার উঠে এসেছে লেভিয়াথানের প্রসঙ্গ। কখনও কিংবদন্তি হিসাবে, কখনও বা রূপকার্থে।

লেভিয়াথান আসলে এক সমুদ্রসর্প। তার আকৃতি বিশাল। ইহুদি পুরাণে জল, স্থল ও অন্তরীক্ষের তিন দানবের কথা রয়েছে। আকাশে জ়িজ়, ডাঙায় বেহেমোথ আর জলে লেভিয়াথান। পুরাণের ভাষ্যকারেরা পরবর্তী কালে এদের ‘কেওস মনস্টার’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। অর্থাৎ, আদিতে বিশ্ব এক বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছিল। সেখানে এই সব দানব দাপটের সঙ্গে রাজত্ব চালাত। এদের দমন করেই ঈশ্বর পৃথিবীতে নিয়মের রাজত্ব বা শৃঙ্খলা স্থাপন করেন। লেভিয়াথান সেই বিশৃঙ্খল জগতের অন্যতম খলনায়ক।