Mystery of Shangri la valley, does it really exist dgtl
Shangri la valley
সেখানে গেলে কেউ নাকি ফিরে আসেন না! সময় থমকে রয়েছে ‘স্বর্গ-মর্ত্যের মাঝের’ ওই উপত্যকায়
সত্যিই কি রয়েছে এই রহস্যময় উপত্যকা? তা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। তবু বছরের পর বছর এই উপত্যকা খুঁজে চলেছেন অনুসন্ধানকারীর দল। কী পেয়েছেন তাঁরা?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ১৬:৪৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ঠিক কোথায় রয়েছে সাংগ্রিলা উপত্যকা? রয়েছে হাজারও ধন্দ। আদৌ কি রয়েছে এই উপত্যকা? তা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। তবু বছরের পর বছর এই উপত্যকা খুঁজে চলেছেন অনুসন্ধানকারীরা। জনশ্রুতি, যাঁরা খুঁজে পেয়েছেন, তাঁরা নাকি আর ঘরে ফেরেননি।
০২২০
রহস্যে মোড়া এই উপত্যকাকে অনেকেই ‘পূর্বের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ বলে থাকেন। তাঁরা বলেন, বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো এই উপত্যকাতেও লুকিয়ে রয়েছে অনেক অজনা তথ্য। এখানে এলেও নাকি মানুষ হারিয়ে যান। কোথায়? তার জবাব মেলেনি।
০৩২০
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম দিকে রয়েছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। সেখানে বহু জাহাজ আর বিমান রহস্যজনক ভাবে হারিয়ে গিয়েছে। প্রায় উবে গিয়েছে বলা চলে। ওই জাহাজ আর বিমানগুলির কোনও চিহ্নই মেলেনি।
০৪২০
সাংগ্রিলাও অনেকটা সেই বারমুডা দ্বীপের মতোই। সেখানেও নাকি রয়েছে অজানা এক শক্তি। অনেকে বলে থাকেন, সেখানে বাস করে ‘আত্মারা’। মর্ত্য আর স্বর্গের মধ্যে নাকি সংযোগ রক্ষা করে এই উপত্যকা।
০৫২০
মনে করা হয়, তিব্বত এবং অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তে কোনও এক জায়গায় রয়েছে সাংগ্রিলা উপত্যকা। এই উপত্যকা নাকি অন্য জগতে যাওয়ার দরজা। সত্যিই কি তা সম্ভব?
০৬২০
এই সাংগ্রিলা উপত্যকাকে ‘শম্ভলা’ বা ‘সিদ্ধ আশ্রম’ও বলা হয়ে থাকে। এই নিয়ে বই লিখেছিলেন অরুণ শর্মা। তাঁর বইয়ের নাম ‘দ্যাট মিসটেরিয়াস ভ্যালি অফ টিবেট’।
০৭২০
লেখক অরুণের মতে, সাংগ্রিলা উপত্যকার অস্তিত্ব রয়েছে। সেখানে গেলে মন, মস্তিষ্ক, চিন্তাভাবনা নাকি অন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে যায়। তবে কী হয়, তা বলার জন্য কেউ আর সেখান থেকে ফেরেননি।
০৮২০
তবে অরুণ একা নন। আরও অনেকেই মনে করেন, রহস্যজনক ওই উপত্যকায় সময় কোনও প্রভাব ফেলতে পারে না। সময় নাকি সেখানে থমকে রয়েছে। তাই ওই উপত্যকার উপর দিয়ে বিমান এখনও উড়ে যেতে পারে না। সেখানে যাঁরা পৌঁছতে পেরেছেন, তাঁদের নাকি বয়সও বাড়ে না।
০৯২০
জনশ্রুতি, ভিন্জগতে পৌঁছনোর দরজা নাকি রয়েছে এই উপত্যকায়। সেখানে পৌঁছলে নাকি মানুষ ইহজগৎ থেকে উবে যান কর্পূরের মতো। আর কোনও দিন ফিরে আসেন না। কোথায় যান? রয়েছে রহস্য।
১০২০
চিনের লাল ফৌজ নাকি এই উপত্যকা হন্যে হয়ে খুঁজেছে বছরের পর বছর। তবু খুঁজে পায়নি এই সাংগ্রিলা উপত্যকা।
১১২০
শুধু চিনা সেনা নয়, বিভিন্ন দেশের বহু মানুষ এই সাংগ্রিলা উপত্যকার অনুসন্ধান চালিয়েছে। বিশেষত যাঁরা তন্ত্রসাধনা বা পরলোক চর্চা করেন, তাঁরা এই জায়গার খোঁজ করে চলেছেন। তবে এখন পর্যন্ত সফল হননি। মহাভারত, রামায়ণ, বেদেও নাকি এর উল্লেখ রয়েছে।
১২২০
অনেকে মনে করেন, যোগী শ্যামচরণ লাহিড়ীর গুরু মহাবতার বাবা নাকি এই সাংগ্রিলা উপত্যকাতেই রয়েছেন। শতাধিক বছর ধরে। এই শ্যামচরণ ক্রিয়াযোগের জনক। তাঁর গুরু নাকি আদি শঙ্করাচার্যকেও প্রভাবিত করেছিলেন।
১৩২০
সাংগ্রিলাতে মহাবতার বাবার সিদ্ধ আশ্রমে রয়েছেন বলেও মনে করেন তাঁর ভক্তরা। সেখানে গিয়ে নাকি তাঁর বয়স থমকে গিয়েছে। তাই শতাধিক বছর ধরে সুস্থ শরীরে রয়ে গিয়েছেন।
১৪২০
এই উপত্যকার কথা বিশদে লেখা রয়েছে ‘কাল বিজ্ঞান’ বইতে। তিব্বতি ভাষায় লেখা হয়েছে সেই বই। বইটি তিব্বতের তাওয়াং মঠে রাখা রয়েছে।
১৫২০
প্রাচীন বই, বেদ, উপনিষদে যে সব ভেষজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সে সবই নাকি পাওয়া যায় সাংগ্রিলাতে।
১৬২০
রামায়ণে যুদ্ধ চলার সময় লক্ষ্মণ যখন জ্ঞান হারিয়েছিলেন, তখন নাকি হনুমান এই সাংগ্রিলা উপত্যকা থেকে গন্ধমাদন পর্বত তুলে এনেছিলেন। যেখানে ছিল সঞ্জীবনী।
১৭২০
জনশ্রুতি, ওই সাংগ্রিলাতে নাকি তিনটি মঠ রয়েছে। ‘জ্ঞানগঞ্জ মঠ’, ‘সিদ্ধ বিজ্ঞান আশ্রম’, ‘যোগ সিদ্ধাশ্রম’। সেখানে নাকি থাকেন যোগীরা। কখনও তাঁরা দেহ ধারণ করেন। তাঁদের ‘আত্মা’ নাকি সেখানে ঘুরে বেড়ায়। সেখানে কাপালিক, শাক্তরাও নাকি বাস করেন।
১৮২০
ওই উপত্যকার মঠের সাধুরা নাকি যোগ্য শিষ্যের খোঁজে থাকেন। পৃথিবীতে কোনও যোগ্য শিষ্যের খোঁজ পেলে তাঁকে ডেকে পাঠান সাংগ্রিলাতে। তার পর প্রশিক্ষণ দিয়ে আবার পাঠিয়ে দেন ধরাধামে। উদ্দেশ্য, পৃথিবীবাসীর মধ্যে জ্ঞান বিতরণ। তবে অনেকেই আবার মনে করেন, এক বার ওই উপত্যকায় গেলে কেউ ফিরেই আর আসেন না।
১৯২০
ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক জেমস হিল্টনও এই উপত্যকা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। নাম ‘লস্ট হরাইজ়ন’। তিনি দাবি করেছেন, আদতে এ রকম কোনও জায়গার অস্তিত্বই নেই পৃথিবীতে। ওই জায়গায় কেউ গিয়েছেন বলে এখন পর্যন্ত জানাতে পারেননি। তা হলে সেই জায়গার অস্তিত্ব থাকে কী ভাবে?
২০২০
১৯৩০ সাল নাগাদ প্রথম এই সাংগ্রিলার কথা শোনা যেতে থাকে। ভারত থেকে পেশোয়ারগামী একটি বিমান ভেঙে পড়ে পথে। চার জন নিখোঁজ হন। সেই নিখোঁজেরাই নাকি সন্ধান পেয়েছিলেন সাংগ্রিলা উপত্যকার। দেখেছিলেন, ওই উপত্যকার নিবাসী সাধুদের বয়স থমকে রয়েছে। তার পর সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন তাঁরা। আর কখনও ফিরে আসেননি তাঁরা। তবে জনশ্রুতি হয়ে ফিরে এসেছে এই উপত্যকার গল্প, যা নিয়ে আজও ধোঁয়াশা।