Mohammed Shami may not be able to play cricket world cup, but one decision changes his life dgtl
Mohammed Shami
বিশ্বকাপে ‘শত্রু’ নিধন করতে পারতেন না শামি! গ্রেফতার হতে পারতেন ‘আসামি’ হয়ে
এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচে ভারতের প্রথম একাদশে জায়গা পাননি শামি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চতুর্থ ম্যাচে হার্দিক পাণ্ড্য চোট পাওয়ায় পঞ্চম ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পান শামি। তার পর প্রতি ম্যাচেই উইকেট পাচ্ছেন তিনি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৩৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
ক্রিকেট বিশ্বকাপে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দিচ্ছেন ভারতীয় জোরে বোলার মহম্মদ শামি। একাধিক নজিরও গড়ে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। তা-ও প্রথম চার ম্যাচে সুযোগ না পেয়েই।
০২২১
তবে বিশ্বকাপের ময়দানে শামির এত যে দাপট, এত যে হুঙ্কার তা নাকি দেখাতেই পারতেন না তিনি। প্রথম চার ম্যাচে কেন, একটি ম্যাচও খেলতে পারতেন না।
০৩২১
২০১৮ সালের ৮ মার্চ শামি এবং তাঁর দাদার বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ তুলে যাদবপুর থানায় এফআইআর করেছিলেন শামির স্ত্রী হাসিন জাহান।
০৪২১
২০১৯ সালের ২৯ অগস্ট শামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আলিপুরের এসিজেএম কোর্ট। ওই বছর ৯ সেপ্টেম্বর আলিপুর জেলা দায়রা আদালত ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়।
০৫২১
এই অবস্থায় প্রায় চার বছর ধরে মামলাটি সেখানে বিচারাধীন রয়েছে। পরে জেলা দায়রা বিচারকের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন হাসিন।
০৬২১
বিচারপতি শম্পা সরকার নিম্ন আদালতের নির্দেশ বহাল রাখলে ক্রিকেটারের স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টে যান।
০৭২১
গত মাসে শীর্ষ আদালত জানায়, এক মাসের মধ্যে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে দায়রা বিচারককে মামলাটির নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই মতো জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আলিপুর জেলা আদালতে মামলাটির শুনানি হয়।
০৮২১
সেই মামলার শুনানিতেই শামিকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। প্রসঙ্গত, স্ত্রীর করা মামলায় তার আগে আগাম বা অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেননি শামি।
০৯২১
আইনজীবীদের মতে, অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য জেলা দায়রা বিচারক, হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে তাঁকে সশরীরে যেতে হত না। কিন্তু ট্রায়াল কোর্ট থেকে জামিন নিতে গেলে সশরীরে আদালতে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না শামির।
১০২১
১৯ সেপ্টেম্বর বধূ নির্যাতনের মামলায় প্রথম বার আদালতে সশরীরে হাজিরা দেন শামি। সঙ্গে ছিলেন দাদা মহম্মদ হাসিমও। দু’জনেই জামিনের আবেদন করেন। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করে দু’জনকেই জামিন দিয়েছিলেন। এর পরেই বিশ্বকাপে যোগ দিতে যান শামি।
১১২১
আইন বলছে, জামিনের জন্য ট্রায়াল কোর্টে সশরীরে উপস্থিত থাকা ছাড়া উপায় ছিল না শামির। আগেই শামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়ে গিয়েছিল। শামি যদি সশরীরে ওই দিন আদালতে হাজিরা না দিতেন, তা হলে তাঁর গ্রেফতার হওয়ারও সম্ভাবনা থাকত। চুরমার হয়ে যেতে পারত তাঁর বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নও।
১২২১
কিন্তু তা হয়নি, সঠিক সময়ে আদালতে হাজিরা দেন শামি। জামিন পেয়ে যান তিনি। তাঁর আদালতে হাজিরা দেওয়ার সেই সিদ্ধান্তই তাঁকে নতুন নজির গড়ার দরজা খুলে দিয়েছে।
১৩২১
তবে বিশ্বকাপ খেলা দলে যোগ দিয়েও প্রথম দিকে বিশেষ সুবিধা হয়নি তাঁর। প্রথম চার ম্যাচে শামিকে থাকতে হয়েছিল মাঠের বাইরে। মনে করা হচ্ছিল চলতি বিশ্বকাপে মহম্মদ সিরাজ দলে এন্ট্রি নেওয়ার পর থেকে শামির জায়গা একটু নড়বড়ে হয়েছিল। ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার কাছে প্রথমে পছন্দের তালিকায় ছিলেন না তিনি। ছিলেন যশপ্রীত বুমরা এবং সিরাজ। শামি ছিলেন তার পরে।
১৪২১
তবে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে ভাল বল করার সুবাদে ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার পছন্দের তালিকায় বুমরা এবং সিরাজকে ছাপিয়ে একেবারে এক নম্বরে উঠে এসেছেন শামি। বাংলার জোরে বোলারের উপরই বেশি ভরসা করছেন ক্যাপ্টেন।
১৫২১
এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচে ভারতের প্রথম একাদশে জায়গা পাননি শামি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চতুর্থ ম্যাচে হার্দিক পাণ্ড্য চোট পাওয়ায় লিগের পঞ্চম ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পান শামি। তার পর প্রতি ম্যাচেই উইকেট পাচ্ছেন তিনি। জাত চেনাতে শুরু করেছেন খেলতে নেমেই। একটি বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে সব থেকে বেশি উইকেট রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
১৬২১
চলতি বিশ্বকাপে শামির উইকেটের সংখ্যা ৬ ম্যাচে ২৩টি। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে জাহির খান ২১টি উইকেট নিয়েছিলেন। জাহিরকে ছাপিয়ে গিয়েছেন শামি।
১৭২১
প্রথম ভারতীয় বোলার হিসাবেও শামি বিশ্বকাপের কোনও ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়েছেন। প্রথম বোলার হিসাবে এক দিনের বিশ্বকাপে চার বার কোনও ম্যাচে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক তিন বার এই কীর্তি করেছেন। এই বিষয়ে শামি ছাপিয়ে গিয়েছেন আশিস নেহরার বিশ্বকাপের এক ম্যাচে ৬ উইকেট নেওয়ার নজিরকেও।
১৮২১
শামি বিশ্বকাপে ৫০ উইকেট নেওয়া প্রথম ভারতীয় বোলার হয়েছেন। বিশ্বকাপে সব থেকে কম ম্যাচে (১৭) এই কীর্তি করেছেন তিনি। প্রথম ভারতীয় বোলার হিসাবে বিশ্বকাপের নক আউটে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন।
১৯২১
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বুধবার মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন শামি। দেশের হয়ে ১০০টি এক দিনের ম্যাচ খেলা হয়ে গেল তাঁর। মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে বিশ্বকাপেও একাধিক নজির গড়লেন বাংলার জোরে বোলার।
২০২১
৫০ ওভারের ক্রিকেটে জীবনের সেরা বোলিং করেছেন নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলতে নেমে। একে একে সাত ‘শত্রু’ নিধন করেছে তাঁর বল।
২১২১
শামি একমাত্র নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে উইকেট পাননি। এ বারের বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ২৩টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। বুধবারের ম্যাচের পর প্রতিযোগিতায় তিনিই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।