জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা রাষ্ট্রনেতা এবং তাঁদের পরিবারকে কী কী খাবার সাজিয়ে আপ্যায়ন করল আয়োজক দেশ ভারত?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে নয়াদিল্লিতে উপস্থিত ১৯টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, প্রতিনিধি-সহ বিশিষ্টেরা। আপ্যায়নে কোনও ত্রুটি রাখেনি আয়োজক দেশ ভারত। শনিবার রাতে বিদেশি অতিথিদের নৈশভোজের ব্যবস্থা করেছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। বিদেশি নেতা এবং প্রতিনিধিদের কী কী পদে আপ্যায়ন করলেন রাষ্ট্রপতি?
০২২০
জি২০ সম্মেলন বসেছে রাজধানীর প্রগতি ময়দানে তৈরি ভারত মণ্ডপমে। সেখানেই শনিবার আয়োজন করা হয় নৈশভোজের। তালিকার শুরুতেই লেখা ছিল, বৈচিত্র সত্ত্বেও কী ভাবে ‘স্বাদ’-এর মাধ্যমে জুড়েছে ভারত।
০৩২০
খাদ্যতালিকায় শুরুতে লেখা, ‘‘রীতি, প্রথা, জলবায়ু, বিভিন্ন বিষয়ে ভারতে প্রচুর বৈচিত্র রয়েছে। স্বাদই আমাদের সংযোগ ঘটিয়েছে।’’ আরও জানানো হয়েছে, শরৎ ঋতুর উদ্যাপন চলছে। খাদ্যতালিকাতেও রয়েছে তার প্রভাব। সারা ভারত জুড়ে নানা ধরনের যে খাবার পাওয়া যায়, তা-ই স্থান পেয়েছে খাদ্যতালিকায়। এ সব ভারতের রন্ধন ঐতিহ্যকে তুলে ধরে।
০৪২০
শনিবার রাষ্ট্রনেতাদের পরিবেশন করা বেশির ভাগ খাবার তৈরি হয়েছে বাজরা দিয়ে। খাদ্যতালিকায় বিশেষ ভাবে উল্লেখ রয়েছে বাজরা (মিলেট)-এর। বাজরার খাদ্যগুণেরও উল্লেখ রয়েছে।
০৫২০
শুরুতে ছিল ‘পত্রম’। ফক্সটেল মিলেট (হিন্দিতে বলে কাকুম)-এর পাতা মুড়মুড়ে করে ভেজে দই আর চাটনি দিয়ে পরিবেশন করা হয় এই পদ।
০৬২০
মেন কোর্সে ছিল ‘বনবর্ণম’ (মাটির শক্তি)। কাঁঠালের গ্যালেট (ময়দা দিয়ে তৈরি এক ধরনের ফরাসি কেক), তার সঙ্গে মাশরুম, বাজরার পাঁপড়, কারিপাতা দিয়ে কেরলের লাল ভাত।
০৭২০
মেন কোর্সে সঙ্গে ছিল নানা রকম রুটি। যেমন মুম্বই পাও (কালো জিরে দেওয়া নরম পাউরুটি), বাখরখানি (এলাচ দেওয়া মিষ্টি চ্যাপ্টা রুটি)।
০৮২০
শেষ পাতে ছিল ‘মধুরিমা’। এটি এলাচ দেওয়া বাজরার পুডিং, চিনির রসে ডোবানো ফিগ এবং পিচ ফলের কম্পোট, চালের পাঁপড়।
০৯২০
খাবারের সঙ্গে পানীয় হিসাবে ছিল কাশ্মীরি কাওয়া, ফিল্টার কফি, দার্জিলিং চা। সব শেষে চকোলেট স্বাদের পান।
১০২০
একটি সূত্র বলছে, রাতের সব খাবার পরিবেশন করা হয়েছে স্টিল বা কাঁসা বা দুই ধাতুর মেশানো পাত্রে। অন্য একটি সূত্র আবার বলছে, রুপোর থালায় পরিবেশন করা হয়েছে সব খাবার।
১১২০
নৈশভোজে আমন্ত্রিত অতিথিদের অনেকেরই পোশাকে ছিল ভারতীয়ত্বের ছোঁওয়া। কেউ আবার পরে এসেছিলেন নিজের দেশের পোশাক।
১২২০
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পরেছিলেন তাঁদের দেশের নিজস্ব ঢাকাই শাড়ি। শাড়ির রং ছিল লাইল্যাক অর্থাৎ একেবারে হালকা বেগুনি।
১৩২০
মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জুগনৌথ পরেছিলেন কালো রঙের বন্ধগলা। আর তাঁর স্ত্রী পরেছিলেন সাদা শাড়ি। সঙ্গে জড়ি বসানো কালো ব্লাউজ।
১৪২০
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক পরেছিলেন কালো স্যুট-মেরুন টাই। স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি পরেছিলেন আধুনিক আর সাবেকের মিশেলে এক উজ্জ্বল পোশাক।
১৫২০
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা পরেছিলেন কালো স্যুট, নীল টাই। তাঁর স্ত্রী য়ুকো কিশিদার পরনে ছিল ভারতীয় পোশাক। তিনি পরেছিলেন সবুজ শাড়ি। সঙ্গে গোলাপি ব্লাউজ।
১৬২০
শনিবার দুপুরে বিশ্বনেতারা যখন প্রগতি ময়দানে জরুরি বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন, তখন তাঁদের স্ত্রীর জন্যও ছিল হরেক রকম ব্যবস্থা। ঢালাও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন।
১৭২০
ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট (এনজিএমএ) এই মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিল। সঙ্গে ছিল প্রদর্শনী। নৈশভোজের আগে সেই প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন রাষ্ট্রনেতাদের স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যেরা।
১৮২০
মধ্যাহ্নভোজের খাদ্যতালিকায় মূলত ছিল দিল্লির ‘স্ট্রিট ফুড’। বিদেশি নেতাদের স্ত্রী এবং পরিবারের অভ্যর্থনায় ছিল দিল্লির চাট আর তড়কা ডাল।
১৯২০
তার পাশাপাশি ছিল কুমড়ো আর নারকেলের শোরবা, নাগা কালো চালের ভেল, বিট আর পিনাট বাটারের টিক্কি, আনার কুলফি সরবেত, ধীরে ধীরে রোস্ট করা কুমড়ো আর নারকেলের কারি, আপ্পালাম, ওয়াইন্ড নেটল রায়তা, জোয়ারের রুটি, নারকেল আর কারি পাতা দেওয়া পোলাও।
২০২০
শেষ পাতে ছিল আতার ক্রিম। হাজি আলির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মিষ্টি।