Meta has burned 15 Billion trying to build the Metaverse and nobody saying exactly where the money went dgtl
Facebook
কোথায় গেল সাড়ে ১২ লক্ষ কোটি টাকা? মেটাভার্স নিয়ে লেজেগোবরে জ়াকারবার্গ!
বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, মার্ক জ়াকারবার্গের সংস্থা আবারও তাদের অর্থ এমন কোনও জায়গায় বিনিয়োগ করেছে, যেখান থেকে মুনাফা দূরস্থান, লোকসান এড়ানোই রীতিমতো মুশকিলের হবে।
সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্কশেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
ফেসবুকের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘মেটা’র স্বপ্নের প্রকল্প ‘মেটাভার্স’। ফেসবুকের দাবি, মেটাভার্স ইন্টারনেট দুনিয়াকে আমূল বদলে দেবে।
০২১৯
যদিও ‘মেটাভার্স’ প্রকৃতপক্ষে কী, তা নিয়ে এখনও ফেসবুকের তরফে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে ভবিষ্যতের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ‘মেটাভার্সে’র মধ্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা পাবেন বলে দাবি করা হয়েছে সংস্থার তরফে। কিন্তু সেই মেটাভার্স নিয়েই লেজেগোবরে হচ্ছেন জ়াকারবার্গ।
০৩১৯
ফেসবুক সূত্রে খবর, এই ‘মেটাভার্স’ প্রযুক্তি চালু করার জন্য ১,৫০০ কোটি ডলার অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় ১২ লক্ষ ৩ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে সংস্থা। যদিও ঠিক কী কারণে এত বিপুল পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
০৪১৯
বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, মার্ক জ়াকারবার্গের সংস্থা আবারও তাদের অর্থ এমন কোনও জায়গায় বিনিয়োগ করেছে, যেখান থেকে মুনাফা দূরস্থান, লোকসান এড়ানোই মুশকিল হবে।
০৫১৯
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ড্যান ইভেস বলেন, “বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বচ্ছতা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে, ‘মেটাভার্সে’ বিনিয়োগ করে খুব বড় করে ঝুঁকি নিতে চলেছে জ়াকারবার্গের সংস্থা।
০৬১৯
ফেসবুক যখন তাদের বাৎসরিক আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করে, তখনই সংস্থার তরফে অনুমান করা হয়, বিনিয়োগ করা অর্থের মধ্যে প্রায় ১,০০০ কোটি ডলার ফিরে আসার প্রায় কোনও আশাই নেই।
০৭১৯
২০২২ সালের প্রথম ছ’মাসে ৫০০ কোটি ডলার লোকসান করে ফেসবুক। বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান, ২০২৩ সালে লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
০৮১৯
সরকারি ভাবে ‘মেটা’র তরফে অবশ্য এই তথ্যের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। মেটার মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, তাঁরা অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আনেন না।
০৯১৯
জনৈক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মতে, ‘মেটাভার্স’ বলে আদতে কিছু নেই। যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষ চশমা পরে বাকিদের ভিন্গ্রহী বা এমন কিছু দেখবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মেটাভার্সের কোনও অস্তিত্ব নেই।
১০১৯
যদিও আর এক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মতে, ফেসবুক-কর্তা জ়াকারবার্গ দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে কোনও কিছুতে বিনিয়োগ করে থাকেন। তাই তাঁর মতে, ‘মেটাভার্সে’ বিনিয়োগ করেও দীর্ঘমেয়াদে লাভের ফসলই ঘরে তুলবে ফেসবুক।
১১১৯
এ ক্ষেত্রে ওই বিশেষজ্ঞের যুক্তি, ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম অধিগ্রহণ করার সময়েও অনেকে বলেছিলেন, ‘‘এটা অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।’’ কিন্তু ইনস্টাগ্রাম এখনও বিশ্বের সফল বিনিয়োগগুলির মধ্যে অন্যতম।
১২১৯
ফেসবুকের ‘মেটাভার্সে’ বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেলেও, দেড় হাজার কোটি ডলারের রহস্য সমাধান হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে ‘মেটা’ তথা ফেসবুক কর্তৃপক্ষও।
১৩১৯
বলা হয়েছিল মেটাভার্স নাকি এক আশ্চর্য দুনিয়া। ‘ইউনিভার্স’-এর মতো ‘মেটাভার্স’। আর সেই দুনিয়ায় পা রাখতেই নাম বদল করেছিল ফেসবুক। কিন্তু সে দুনিয়া কেমন? কোথায়? স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালের বাইরে তৃতীয় কোনও জগৎ? না, এর কোনও বস্তুগত উপস্থিতি নেই, আছে ‘ভার্চুয়াল’ উপস্থিতি। সেখানে ব্যবহারকারীর পরিচয় আছে নিজস্ব, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আছে অর্থ, আছে সম্পত্তি, সেখানেই তাঁর পরিচয় তৈরি হবে নতুন করে। সেই বৃত্তে ঢুকে পড়েছিল ফেসবুক।
১৪১৯
দাবি করা হয়েছিল, এখানে ব্যবহারকারীদের প্রত্যেকের একটি করে ‘থ্রিডি ভার্চুয়াল’ রূপ থাকবে। সেই ভার্চুয়াল রূপ বাস্তবের মানুষটির প্রতিনিধিত্ব করবে ভার্চুয়াল দুনিয়ায়। সেখানেই ওই থ্রিডি রূপটির মাধ্যমে পরিচয় তৈরি হবে বাস্তবের ব্যবহারকারীর। সেখানে তাঁর মতো আরও অন্য মানুষ থাকবেন। তাঁদের সঙ্গে সেই দুনিয়াতে সম্পর্ক গড়ে উঠবে, কথা চলবে, আড্ডাও হবে।
১৫১৯
শুধু তাই নয়, এই ভার্চুয়াল জগৎ ব্যবহার করে খেলা, কোনও গানের বড় অনুষ্ঠান, সব কিছুই করা যাবে বলে দাবি করা হয়েছিল।
১৬১৯
১৯৯২ সালে নিল স্টিফেনসন প্রথম তাঁর ‘স্নো ক্র্যাশ’ উপন্যাসে ‘মেটাভার্স’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। সেই শব্দটি বর্তমানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ হিসাবে উঠে এসেছে।
১৭১৯
ফেসবুকের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, এত দিন গেম খেলার ক্ষেত্রে কম্পিউটারে পর্দায় ভার্চুয়াল দুনিয়া দেখে তাতে অংশ নিতে হত। কিন্তু ‘মেটাভার্স’ এমন একটি পরিবেশ, যেখানে সেই পরিবেশের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেন ব্যবহারকারী।
১৮১৯
শুধু প্রবেশ করতে পারবেন না, সেখানে এক কল্পনার দুনিয়া বা সমান্তরাল দুনিয়াও তৈরি হবে তাঁর পরিচয়ে। সেই থ্রিডি রূপটির জন্য জামাকাপড় কেনা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের জীবনের প্রয়োজনীয় সব কাজ করতে হবে ব্যবহারকারীকে। নিজেকে গড়ে তুলতে হবে ‘মেটাভার্স’-এর মতো করে।
১৯১৯
কিন্তু সমস্যা হল, এ সংক্রান্ত স্বচ্ছ ধারণা সাধারণের মধ্যে তুলে ধরতে পারেনি ফেসবুক। ফলে এই প্রযুক্তির অনেকখানিই সাধারণের নাগালের বাইরে থেকে গিয়েছে। যার ফলে ওই ক্ষতি বলে মনে করা হচ্ছে।