Mercury has been hiding 15 km thick diamond layer dgtl
Diamond Reserve in Mercury
১৬ কিমি দীর্ঘ আর পুরু হিরের স্তর! পৃথিবীর প্রতিবেশীর গর্ভে লুকিয়ে অমূল্য ভান্ডার!
মেসেঞ্জার মহাকাশযান থেকে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা জানতে পেরেছেন যে, বুধপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০ কিমি নীচে রয়েছে হিরের এই পুরু স্তর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ১৬:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
সৌর পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্যের অন্দরে লুকিয়ে অমূল্য সম্পদ। সম্প্রতি নাসার মেসেঞ্জার মহাকাশযান থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, বুধে থাকতে পারে ১৬ কিমি দীর্ঘ ও পুরু হিরের স্তর। নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কারকে অপ্রত্যাশিত এবং চমকপ্রদ বলছেন গবেষকেরা।
০২১৬
ডেলি এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, নাসার মেসেঞ্জার মহাকাশযান থেকে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা জানতে পেরেছেন যে, বুধপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০ কিমি নীচে হিরের এই পুরু স্তরটি রয়েছে।
০৩১৬
২০০৮ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত নাসার মেসেঞ্জার মহাকাশযানটি বুধকে প্রদক্ষিণ করেছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে ছোট্ট গ্রহটির গঠন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছে মহাকাশযানটি। নতুন এই আবিষ্কারটির ফলে গ্রহটির গঠন সম্পর্কে পূর্ববর্তী যে সব তত্ত্ব নাসার হাতে ছিল, তা খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
০৪১৬
বুধের পৃষ্ঠে গ্রাফাইট প্যাচের উপস্থিতি দেখে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছিলেন যে, গ্রহটিতে একসময়ে কার্বনসমৃদ্ধ ম্যাগমার মহাসাগরের উপস্থিতি ছিল। এই কারণে ম্যাগমা বুধপৃষ্ঠের উপরে গ্রাফাইটের স্তরটি তৈরি করেছে এবং গ্রাফাইটের জন্য বুধের রং কালো।
০৫১৬
নতুন গবেষণার ফলে এটা মনে করে হচ্ছে যে, বুধ গ্রাফাইট গঠিত না-ও হতে পারে। বরং কার্বনের আরও মূল্যবান রূপ হিরে দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। বুধের পৃষ্ঠ এবং কেন্দ্রের সীমানার মধ্যবর্তী প্রবল চাপের ফলে কার্বনসমৃদ্ধ ম্যাগমা হিরেয় পরিণত হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে নাসা।
০৬১৬
নয়া এই আবিষ্কার সূর্যের নিকটতম গ্রহ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি দীর্ঘস্থায়ী রহস্য ব্যাখ্যা করতে পারবে বলে মনে করেছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
০৭১৬
বুধ বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করেছে। এর প্রধান কারণ ঘন অন্ধকারে ঢেকে থাকা বুধপৃষ্ঠ। গ্রহটির কেন্দ্রের ঘনত্ব এবং পৃষ্ঠে থাকা আগ্নেয়গিরিগুলি অসময়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার কারণে সমস্যায় পড়েছেন নাসার গবেষকেরা।
০৮১৬
গবেষকদের মতে, হিরের স্তরটি দু’টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হতে পারে। কার্বন-সমৃদ্ধ ম্যাগমা জমাট বেঁধে স্ফটিকের আকার ধারণ করতে পারে। অথবা বুধের কেন্দ্রের তরল জমাট বেঁধে এই দীর্ঘ ও পুরু হিরের স্তর তৈরি হয়েছে।
০৯১৬
নতুন এই সম্ভাবনাটি কতটা সত্যি, তা জানার জন্য মহাকাশবিজ্ঞানীরা নাসার পরীক্ষাগারে বুধের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। বুধের চরম পরিবেশকে অনুকরণ করে কৃত্রিম সিলিকেটের উপর সাত গিগাপাস্কালেরও বেশি চাপ প্রয়োগ করে পরীক্ষাটি করা হয়েছিল।
১০১৬
নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত এই নতুন গবেষণাটি সৌরজগতে নানা গ্রহের গঠন এবং বিবর্তনের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
১১১৬
এই আবিষ্কারটি থেকে মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, কেন বুধের প্রধান আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ প্রায় ৩৫০ কোটি বছর আগে তুলনামূলক ভাবে দ্রুত শেষ হয়েছিল।
১২১৬
হিরের স্তরের দ্রুত তাপ শুষে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। যার ফলে আগ্নেয়গিরিগুলির অকালসমাপ্তি ঘটেছে বলে মনে করছেন মহাকাশ গবেষকেরা।
১৩১৬
নাসার গবেষক দলটি বুধের ‘ম্যান্টেল-কোর’ সীমানায় হিরের স্তরের তাপীয় প্রভাব নিয়ে আরও বেশি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিকল্পনা করেছে।
১৪১৬
বুধের অভ্যন্তরীণ গঠন এবং বিবর্তন সম্পর্কে আরও বিশদে জানতে ২০২৬ সালের ‘বেপিকলম্বো মিশন’ থেকে নতুন তথ্য আনানোর প্রচেষ্টায় রয়েছে নাসা।
১৫১৬
বুধে হিরের উপস্থিতি নিয়ে মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রে আলোড়ন উঠলেও এই মুহূর্তে তা অধরাই থেকে যাবে।
১৬১৬
যে গভীরতায় এই হিরের স্তরের অস্তিত্ব রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, সেখান থেকে তা খনন করা কার্যত অসম্ভব বলে জানিয়েছে নাসা।