Meet the 90's famous television actor and Disney Hour host Vishal Malhotra, know what is he doing now dgtl
Vishal Malhotra
বলিউডে কেরিয়ার শুরু শাহিদের সঙ্গে, সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেও হঠাৎ কেন তিনি উধাও হয়ে যান?
নব্বইয়ের দশকে ছোট পর্দার পরিচিত মুখ ছিলেন বিশাল। সঞ্চালনা থেকে শুরু করে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকমনে কম সময়ে জায়গা করে ফেলেছিলেন তিনি। অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ে তুললেও অভিনয়ের প্রতি কোনও কালেই আগ্রহ ছিল না তাঁর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
কেরিয়ার শুরু করেছিলেন সঞ্চালক হিসাবে। তার পর খুব কম সময়ের মধ্যেই টেলিভিশনজগতের জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন। ছোট পর্দার পর বড় পর্দাতেও নিজের পরিচিতি তৈরি করে ফেলেন। বলিউডে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন শাহিদ কপূরের সঙ্গে। রাতারাতি সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছনোর পর হঠাৎ বলিপাড়া থেকে উধাও হয়ে যান বিশাল মলহোত্র।
০২২০
নব্বইয়ের দশকে ছোট পর্দার পরিচিত মুখ ছিলেন বিশাল। সঞ্চালনা থেকে শুরু করে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকমনে কম সময়ে জায়গা করে ফেলেছিলেন তিনি। অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ে তুললেও অভিনয়ের প্রতি কোনও কালেই আগ্রহ ছিল না তাঁর।
০৩২০
১৯৮০ সালের ২২ জুলাই মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম বিশালের। তাঁর বাবা ছিলেন শিল্পপতি। তবু পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবেন বলে ঠিক করেছিলেন বিশাল। কিন্তু স্কুলে পড়াকালীন তাঁর জীবন অন্য দিকে মোড় নেয়।
০৪২০
কানাঘুষো শোনা যায়, স্কুলে থাকাকালীন এক দিন ক্লাসে অনুপস্থিত থেকে বন্ধুর সঙ্গে বাইরে বসে খাওয়াদাওয়া করছিলেন বিশাল। তাঁকে বসে থাকতে দেখে এক মহিলা তাঁর দিকে এগিয়ে যান। ওই মহিলা নাকি বিশালকে জানান যে তিনি একটি চ্যানেল খুলতে চলেছেন। সেই সংস্থার একটি অনুষ্ঠানের জন্য নতুন মুখের সন্ধান করছেন তিনি। বিশালকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় মহিলার। শোয়ের জন্য বিশালকে অডিশনে যাওয়ার অনুরোধও করেছিলেন তিনি।
০৫২০
অডিশন দেওয়ার পর সকল নির্বাচনী প্রক্রিয়া অতিক্রম করে যান বিশাল। ১৯৯৫ সালে ‘ডিজ়নি আওয়ার’ শোয়ের সঞ্চালক হিসাবে কাজ শুরু করেন তিনি। দুর্দান্ত সঞ্চালনার মাধ্যমে সকলের কাছে প্রশংসা পান বিশাল।
০৬২০
নব্বইয়ের দশকে ‘হিপ হিপ হুররে’ ধারাবাহিকে জন চরিত্রে অভিনয় করার পর বিশালের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। ‘রিস্তে— দ্য লভ স্টোরিজ়’, ‘শরারত’, ‘এলওসি— লাইফ আউট অফ কন্ট্রোল’, ‘ভিকি অ্যান্ড বেতাল’, ‘ধুম মচাও ধুম’, ‘কয়া মস্ত হ্যায় লাইফ’-এর মতো একাধিক হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা যায় বিশালকে।
০৭২০
ছোট পর্দায় জনপ্রিয় হওয়ার পর বড় পর্দাতেও অভিনয়ের সুযোগ পান বিশাল। কানাঘুষো শোনা যায়, বলিপাড়ার ছবিনির্মাতা কেন ঘোষের সঙ্গে পরিচিতি ছিল বিশালের বাবার। এক দিন কেনের সঙ্গে দেখা করতে যান বিশালের বাবা। কথোপকথনের সময় কেন হঠাৎ জানান তিনি একটি হিন্দি ছবি পরিচালনা করবেন যার জন্য নতুন মুখের সন্ধান করছেন।
০৮২০
কেনের কথা শুনে বিশালের বাবা তাঁর বন্ধুকে বিশালের ছবি দেখান। বিশালের ছবি দেখার পর নিজের ছবিতে অভিনয়ের জন্য বন্ধুর পুত্রকে প্রস্তাব দেন কেন। কেনের প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান বিশাল। ২০০৩ সালে কেনের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ইশক ভিশক’ ছবিটি।
০৯২০
‘ইশক ভিশক’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে নিজের কেরিয়ার শুরু করেন শাহিদ। এই ছবিতে শাহিদের বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় বিশালকে। তার পর একের পর এক ছবির প্রস্তাব পেতে থাকেন তিনি।
১০২০
‘কাল’, ‘ডোর’, ‘সালাম-এ-ইশক’, ‘নকাব’, ‘জন্নত’, ‘কিসমত কানেকশন’, ‘আগলি অওর পাগলি’, ‘এক বিবাহ... অ্যায়সা ভি’, ‘অনজানা অনজানি’, ‘তলাশ’, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’-এর মতো বহু ছবিতে অভিনয় করেন বিশাল। শাহরুখ খান, আমির খান, অজয় দেবগন, বিবেক ওবেরয়, শাহিদ কপূরের মতো বলি অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছন বিশাল।
১১২০
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, রাতারাতি সাফল্যের পর নাকি অহংবোধ ঘিরে ফেলে বিশালকে। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে নিজের কেরিয়ারের চড়াই-উতরাই প্রসঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করেছিলেন অভিনেতা। বিশাল জানিয়েছিলেন যে এক সময় তাঁর কাছে বহু ছবির প্রস্তাব এলেও দুই বছর তিনি নিজের ভুলেই বেকার হয়ে বসেছিলেন।
১২২০
সাক্ষাৎকারে বিশাল বলেছিলেন, ‘‘বলিউডের এক নামকরা পরিচালক আমার কাছে একটি বড় বাজেটের ছবির প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। সেই ছবিতে আমাকে মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন তিনি। আমি সে প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলাম। ছবির গল্প আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু ওই ধরনের চরিত্রে আমি আগেও অভিনয় করেছিলাম। নতুন কিছু করতে চাইছিলাম আমি।’’
১৩২০
বিশাল বলেছিলেন, ‘‘আমি যে চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলাম তাতে আমার মাত্র ছ’খানা দৃশ্য ছিল। এমনকি আমি কোনও রকম পারিশ্রমিক ছাড়াই ওই চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হয়েছিলাম। আমার কথা শুনে পরিচালক অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। পরে আর কোনও দিন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি তিনি।’’
১৪২০
বিশাল জানিয়েছিলেন ১২ বছর অভিনয় করার পর তিনি বার বার নিজের পছন্দমতো চরিত্রে অভিনয় করতে চাইতেন। বলিপাড়ার বহু প্রযোজক এবং পরিচালকের কাছে সে ইচ্ছাপ্রকাশও করেছিলেন তিনি। বিশালের দাবি, সকলেই তাঁর পরিকল্পনার প্রশংসা করলেও তাঁকে কেউ আর কাজের সুযোগ দিতেন না।
১৫২০
বিশাল সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, বলিপাড়ার অনেকেই নাকি তাঁকে পাগল ভাবতে শুরু করেছিলেন। অভিনেতার দাবি, তাঁর মন অহঙ্কারে ভরে উঠেছিল। যে ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পাচ্ছিলেন তা মনের মতো না হওয়ার কারণে সে প্রস্তাব খারিজ করে দিচ্ছিলেন। একটি নির্দিষ্ট সময় পর হাতে কোনও কাজ ছিল না বলে জানিয়েছিলেন অভিনেতা।
১৬২০
বিশাল জানিয়েছিলেন, টানা দু’বছর বেকার হয়ে বসেছিলেন তিনি। কেরিয়ারে কোন দিকে এগিয়ে যাবেন তা বুঝতে পারছিলেন না বিশাল। শেষ পর্যন্ত অভিনয় ছেড়ে ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
১৭২০
নিজস্ব একটি বিজ্ঞাপন সংস্থা গড়ে তোলেন বিশাল। সেই ব্যবসায় সাফল্যও অর্জন করেন তিনি। অভিনেতা এক পুরনো সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে মাত্র ৫৫ টাকা দিয়ে তিনি ব্যবসা শুরু করেছিলেন। বর্তমানে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ চার-পাঁচ কোটি টাকা।
১৮২০
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন ভিডিয়ো পোস্ট করতে দেখা যায় বিশালকে। ‘পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান: ডেড মেন টেল নো টেলস’, ‘বোল্ট’ এবং ‘টয় স্টোরি ৩’-এই তিনটি হলিউড ছবিতে হিন্দি ভাষায় ডাবিং করেছেন তিনি।
১৯২০
চলতি মাসে নেটফ্লিক্স ওটিটি প্ল্যাটফর্মে জ়োয়া আখতার পরিচালিত ‘দ্য আর্চিজ়’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর দর্শকের একাংশ দাবি করেন যে বিশাল অভিনীত ‘হিপ হিপ হুররে’ ধারাবাহিক নাকি নব্বইয়ের দশকের ‘দ্য আর্চিজ়’ ছিল।
২০২০
সমাজমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই ছবি বা ভিডিয়ো পোস্ট করেন বিশাল। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে বিশালের অনুরাগীর সংখ্যা দেড় লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে। বর্তমানে স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে মুম্বইয়ে থাকেন বিশাল। অভিনয় নয়, ব্যবসা থেকে উপার্জন করেই দিনযাপন করেন তিনি।