Meet Nigar Saji the woman behind ISRO’s Sun Mission Aditya-L1 dgtl
Nigar Saji
সাধারণ কৃষকের কন্যা থেকে ইসরোর বিজ্ঞানী, নিগারের তত্ত্বাবধানেই সূর্য জয়ে ছুটছে সৌরযান
পৃথিবী থেকে ১০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সূর্যকে ‘কাছ’ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে ইসরোর সৌরযান। খোঁজ নেবে সূর্য সংক্রান্ত নানা খুঁটিনাটি অজানা তথ্যের। আর এই অভিযানেরই মাথায় রয়েছেন নিগার।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৫১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সূর্যের উদ্দেশে বীরবিক্রমে রওনা হয়েছে ভারতের যে সৌরযান, তার সুতো বাঁধা এক মহিলা বিজ্ঞানীর হাতে।
০২২০
শনিবারই সূর্যের রহস্যভেদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে ইসরোর আদিত্য-এল১। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে যখন তাকে নিয়ে সফল ভাবে আকাশে উড়ল পিএসএলভি রকেট, তখন উত্তেজনায় জ্বলজ্বল করছিল তাঁর চোখ।
০৩২০
মুখে অবশ্য সেই উত্তেজনা খুব একটা প্রকাশ করেনননি ওই মহিলা বিজ্ঞানী। তিনি শুধু বলেছেন, ‘‘স্বপ্ন সত্যি হওয়ার অনুভূতি হচ্ছে।’’
০৪২০
কিসের স্বপ্ন? যে স্বপ্ন গত ৩৬ বছর ধরে মনের ভিতর লালন করেছেন ওই মহিলা বিজ্ঞানী। এই স্বপ্ন এক অধরা সাফল্যকে ছুঁয়ে দেখার। গত ২ সেপ্টেম্বর সেই স্বপ্ন সবে সাফল্যের প্রথম পর্যায় পেরিয়েছে। যদিও ইতিমধ্যেই ওই সাফল্যের মাথায় জ্বলজ্বল করতে শুরু করেছে একটি নাম— নিগার শাজী।
০৫২০
নিগারই ইসরোর সেই মহিলা বিজ্ঞানী। ভারতের প্রথম সৌর-সফরের নেত্রীর শিরোপাও দেওয়া যেতে পারে তাঁকে। তিনি আদিত্য-এল১ সৌর অভিযানের প্রজেক্ট ডিরেক্টর।
০৬২০
পৃথিবী থেকে ১০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সূর্যকে ‘কাছ’ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে ইসরোর এই সৌরযান। খোঁজ নেবে সূর্য সংক্রান্ত নানা খুঁটিনাটি অজানা তথ্যের। আর এই অভিযানেরই উৎক্ষেপণের সমস্ত কিছু নিজে দেখাশোনা করেছেন নিগার।
০৭২০
আদিত্য-এল১ উৎক্ষেপণের পর তিনি বলেছেন, ‘‘এই সৌর অভিযান শুধু ভারতের নয়, বিশ্ব মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও একটি সম্পদ হতে চলেছে।’’
০৮২০
গলার উচ্ছ্বাসে কিশোরীর উত্তেজনা। কে বলবে তাঁর বয়স ৫৯। দুই সন্তান আছে তাঁর। নিগারের দুই সন্তানই কৃতী। পুত্র নেদারল্যান্ডসে গবেষণা করছেন। কন্যা চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করছেন স্নাতকোত্তর স্তরে।
০৯২০
কৃষক পরিবারের সন্তান নিগার। তবে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন ছোট থেকেই।
১০২০
তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তেনকাশী জেলার শেনগোট্টই শহরে জন্ম নিগারের।
১১২০
বাবা শেখ মীরান ছিলেন কৃষক, মা সাইতুন বিবি গৃহবধূ। ছোট থেকেই লেখাপড়ায় মেধাবী ছিলেন নিগার।
১২২০
সংবাদমাধ্যমকে তাঁর ভাই এস শেখ সালিম জানিয়েছেন, শেনগোট্টইয়েরই সরকারি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন নিগার। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় জেলায় প্রথম হয়েছিলেন তিনি।
১৩২০
তিরুনেলাভেলি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়েন। স্নাতকোত্তর করেন রাঁচীর বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে। সব পরীক্ষাতেই ভাল ফল করেছিলেন মেধাবী ছাত্রী নিগার।
১৪২০
এর পরেই ১৯৮৭ সালে ইসরোয় যোগ দেন তিনি। প্রথমে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ন মহাকাশকেন্দ্রে যোগ দেন। পরে আসেন বেঙ্গালুরুর ইউ আর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারে।
১৫২০
ধীরে ধীরে কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরির প্রযুক্তিতে সেরা হয়ে ওঠেন নিগার। তাঁর বিশেষত্ব নজর কাড়ে ইসরোর পদস্থ বিজ্ঞানীদেরও।
১৬২০
সৌর অভিযানের আগে রিসোর্সস্যাট-২এ নামের একটি রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট প্রকল্পের সহকারী অধিকর্তার পদে ছিলেন নিগার। এর পাশাপাশি, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং, ইমেজ কমপ্রেশন-সহ একাধিক বিষয়ে গবেষণাপত্রও প্রকাশ করেছেন।
১৭২০
বাবা মীরান অবশ্য কন্যার এই সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। ৩০ বছর আগে মৃত্যু হয় তাঁর।
১৮২০
আপাতত বেঙ্গালুরুতে নিজের মা সাইতুন বিবি এবং কন্যার সঙ্গে থাকেন নিগার। তাঁর স্বামী দুবাইয়ে প্রযুক্তিবিদ হিসেবে কর্মরত। সব সামলেই নিজের বিজ্ঞানসাধনা নিয়ে মেতে থাকেন নিগার।
১৯২০
আট বছর আগে আদিত্য-এল১ অভিযানের দায়িত্ব পান নিগার। শনিবার সফল উৎক্ষেপণের পরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘‘আট বছর ধরে এই অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প চলেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সঠিক ভাবে কক্ষপথে পৌঁছে গিয়েছে সৌরযান।’’
২০২০
কিছু দিন আগেই ইসরোর আরও একটি সফল মহাকাশ অভিযান তৃতীয় চন্দ্রযানের নেপথ্যে থাকা মহিলা বিজ্ঞানীদের ভূমিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন সকলে। নিগার ইসরোর সেই নারীশক্তির জয়গাথায় আরও একটি উজ্জ্বল নাম।