ভারত-বাংলাদেশের মাঝের ছিটমহল নিয়ে জটিলতা ছিল দীর্ঘ দিন ধরে। সীমারেখার অবস্থানের জন্য ওই এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে সমস্যায় পড়ত দু’দেশই। কোনও বাড়ির সদর দরজা বাংলাদেশে তো ঘর ভারতে। আবার কোনও বাড়ির উঠোন ভারতে হলেও রান্নাঘর বাংলাদেশে। এই জটিলতা সামলে দু’দেশের সীমান্ত সমস্যার মিটিয়েছিলেন এই আইএফএস কর্তা।
নাম হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। জন্মসূত্রে সিকিমের মানুষ তিনি। তবে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা মুম্বইয়ে। বাবা হিন্দু, মা বৌদ্ধ। দার্জিলিং নিবাসী এই সিকিমি সন্তানের নাম রাখা হয়েছিল হর্ষবর্ধন শেরিং লা। খটোমটো ঠেকায় মুম্বইয়ের স্কুল সেই পদবি পাল্টে করে দেয় শ্রিংলা! বহু দিন বাংলাদেশে থাকায় ঝরঝরে বাংলায় কথা বলতে পারেন তিনি।
২০০৫ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী মিশনে কর্মরত ছিলেন শ্রিংলা। ইরাকের ‘তেলের বদলে খাদ্য’ প্রকল্পে বিশাল অঙ্কের ঘুষের অভিযোগে একটি স্বাধীন তদন্ত করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। নিউ ইয়র্কের সংশ্লিষ্ট শিবিরে যোগাযোগের সূত্রে এক হাজার শব্দের ওই রিপোর্ট আগেই হাতে পান শ্রিংলা। সেই সময়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রণেন সেনকে সঙ্গে সঙ্গে জানান, তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী নটবর সিংহের নাম রয়েছে ওই রিপোর্টে। বিদেশ মন্ত্রককে কিছু না জানিয়ে রণেন সেন সে সময় সরাসরি যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে। পদত্যাগ করানো হয় নটবরকে।
২০১১ সালে শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সে দেশে ৫০ হাজার আবাসন প্রকল্পে হাত দিয়েছিল ভারত। সে সময় বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণের বিরুদ্ধে ওই প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন শ্রীলঙ্কার দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় যুগ্মসচিব। ওই চাপানউতরের মধ্যেই শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের দায়িত্বে আনা হয় শ্রিংলাকে। যিনি বিতর্ক সরিয়ে সফল ভাবে ওই প্রকল্পের কাজ শেষ করেন। শুধু তাই-ই নয়, তাঁর সময়েই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ক্রমশ ভাল হতে থাকে।
২০১৯ সালে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসাবে আমেরিকায় যান হর্ষবর্ধন। তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শোনা যায় ওয়াশিংটনে পৌঁছনোর দু’দিনের মধ্যে ট্রাম্পের কাছে নিজের পরিচয়পত্র এবং কাজের উদ্দেশ্য সংক্রান্ত খতিয়ান নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি। মাত্র এক বছর তিনি ছিলেন আমেরিকায়। এই এক বছরে আমেরিকার ২১টি প্রদেশ ঘুরেছেন হর্ষবর্ধন।
বাংলাদেশ এবং ওয়াশিংটনে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সফল দৌত্য সেরে আসা হর্ষবর্ধনের পদবি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে বার বারই দেখা গিয়েছে কৌতূহল ও আগ্রহ। সম্প্রতি সিকিমের আইসিএফএআই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্মানিক ডক্টরেট নিতে গিয়ে যে বক্তৃতা দেন শ্রিংলা, তার অনেকটাই নেপালিতে। বলেন, ‘‘আমার ভাষা নেপালি, যা সিকিমেরও একটি ভাষা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy