বাসের জানলা থেকে মার্চের লন্ডন উপভোগ করছে সে। বহু বছর পর বোজির দেখা পাওয়ায় পুরনো স্মৃতি জেগে ওঠে অনেকের।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
মনিবের মৃত্যু হয়েছে। তবুও তাঁর ফেরার আশায় নিত্য দিন স্টেশনের সামনে অপেক্ষা করত হাচিকো। এই বাস্তব ঘটনা নিয়ে বড় পর্দায় সিনেমাও তৈরি হয়। বছর দুয়েক আগে পর্যন্ত তেমনই এক পোষ্যের দেখা পাওয়া যেত ইস্তানবুলে। তার নাম বোজি।
০২১৫
সম্প্রতি লন্ডনে দেখা গিয়েছে বোজিকে। বাসের জানলা থেকে মার্চের লন্ডন উপভোগ করছে সে। বহু দিন পর বোজির দেখা পাওয়ায় পুরনো স্মৃতি জেগে উঠেছে অনেকের। এক সময় ইস্তানবুল শহরের সকলের নয়নের মণি হয়ে উঠেছিল বোজি।
০৩১৫
অফিস যাওয়ার ব্যস্ততা। মেট্রোর জন্য অপেক্ষা করছেন নিত্যযাত্রীরা। ঠিক সেই সময় তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াল একটি কুকুর। সকলের মতো সে-ও নিয়ম মেনে হলুদ লাইনের এ পারে দাঁড়িয়ে থাকল। কারণ প্ল্যাটফর্মে দাগ কাটা হলুদ রেখা পার করা নিষেধ।
০৪১৫
মেট্রো যথা সময়ে স্টেশনে এসে পৌঁছলে কুকুরটিও ধীর ভাবে মেট্রোয় উঠে পড়ল। চুপচাপ মেট্রোয় ওঠার পর নীচে বসে পড়ল। এক মুহূর্তের জন্যও সে চিৎকার করল না। যাত্রীদের কেউ কেউ আবার তার ছবিও তুলে ফেললেন।
০৫১৫
শুধু মেট্রোতেই নয়, ফেরিঘাটে এমনকি বাস স্ট্যান্ডেও বোজিকে দেখা যেত। ফেরি, বাস, মেট্রোয় চড়ে কোথায় যেত সে?
০৬১৫
যানবাহনে প্রায়ই বোজিকে চড়তে দেখতেন ইস্তানবুলের নাগরিকেরা। বোজি শান্ত স্বভাবের। তাই বাস-ট্রাম-মেট্রো সব জায়গায় তাকে উঠতে দেওয়া হত। কিন্তু নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য বোজিকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
০৭১৫
বোজি যে প্রায়শই ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ে এবং একই পথে যাতায়াত করে তা লক্ষ করেছিলেন পুলিশকর্মীরাও। বোজির গতিবিধির উপর নজর রাখতে তার শরীরে জিপিএস ট্র্যাকার লাগিয়ে দেওয়া হয়।
০৮১৫
জিপিএস দেখে জানা যায়, বোজি প্রথমে একটি নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে মেট্রোয় ওঠে। তার পর ২৯টি স্টেশন পার করে মেট্রো থেকে নেমে পড়ে সে। যাতায়াতের পথে মেট্রোর ভিতর এক জায়গায় শান্ত ভাবে বসে থাকে বোজি।
০৯১৫
মেট্রো থেকে নামার পর কখনও বাস, কখনও বা ট্রামে চড়ত বোজি। কিছু দূর যাওয়ার পর ফেরিঘাটে চলে যেত সে। পর পর দু’টি ফেরি পরিবর্তন করে একটি দ্বীপে পৌঁছত। কিছু ক্ষণ সেখানে কাটিয়ে আবার একই পথে ফিরে আসত সে।
১০১৫
ইস্তানবুলের একটি মেট্রো স্টেশনে বোজির জন্য আলাদা ভাবে ছোট ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। বোজি সেখানে ফিরলে তাকে খেতে দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল।
১১১৫
বোজি ধীরে ধীরে সকলের কাছে এতই প্রিয় হয়ে যায় যে সমাজমাধ্যমে তার নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। বোজির যাবতীয় ছবি এবং ভিডিয়ো সেই অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হত।
১২১৫
ইস্তানবুলে কোনও খাবারের দোকানে অথবা কোনও রেস্তরাঁর সামনে বোজি দাঁড়ালে তাকে খেতে দিতেন সেই দোকানের মালিক। পথের কুকুর ভেবে কেউ বোজিকে তাড়ালে বাধাও দিতেন তাঁরা।
১৩১৫
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মারা গিয়েছিলেন বোজির মালিক। তিনি নাকি সপ্তাহান্তে এক বার অন্তত বোজিকে নিয়ে একটি দ্বীপে ঘুরতে যেতেন। মেট্রো-বাস-ট্রাম-ফেরিতে চেপেই সেই দ্বীপে যেতেন তিনি।
১৪১৫
মালিকের মৃত্যুর পর সেই পথ ধরে দ্বীপে ঘুরতে যেত বোজি। ৩০ কিলোমিটার পথ একা গিয়ে দ্বীপে কিছু ক্ষণ ঘোরার পর আবার একই পথে ফিরে আসত সে। যেন বাস্তবের ‘হাচিকো’র কাহিনি।
১৫১৫
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ইস্তানবুলের এক ব্যবসায়ী বোজিকে ২০২২ সালে দত্তক নেন। তার পর থেকে সেই ব্যবসায়ীর সঙ্গেই রয়েছে বোজি।