দিল্লি থেকে ইনদওরের ডাকচাইয়া এলাকায় এসে ঘাঁটি গেড়েছিলেন সলমন এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। সলমনের দাবি ছিল, তাঁর কাছে এক বিশেষ তেল এবং ওষুধ রয়েছে। ওই তেল লাগানোর পাশাপাশি তাঁর দেওয়া ওষুধ খেলেই নাকি টাকে ভরপুর চুল গজাবে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৫ ০৭:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
বিক্রি হচ্ছে ‘জাদু তেল’। কয়েক মাস মাথায় মাখলেই টাকের রুক্ষভূমিতে ঘন চুলের বাগান গজাবে! আর সে তেল কিনতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমালেন মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে।
০২১৪
অনেকে তেল কিনলেন, তেল মাখলেন। কিন্তু ‘জাদু’ কাজ করল না। লাভের লাভ হল না কিছু। আর যিনি বিক্রি করেছিলেন? তিনি পগা়ড়পার।
০৩১৪
এমনই এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে গিয়েছে সারা দেশে। ঘটনার সূত্রপাত, কয়েক দিন আগে। ইনদওর শহরে এক অস্থায়ী তাঁবুতে ভিড় জমাতে দেখা গিয়েছিল টাক পড়ার সমস্যায় ভুগছেন এমন বিভিন্ন বয়সি মানুষ।
০৪১৪
তাঁরা শুনেছিলেন, ওই তাঁবুতে ‘জাদু তেল’ বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি করছেন, দিল্লির বিখ্যাত ‘টাক বিশেষজ্ঞ’ সলমন ভাই। তাঁর তেলের জাদুতে নাকি কম সময়েই রেশমি চুল গজিয়েছে অনেক টেকোর মাথায়।
০৫১৪
আর পায় কে! ‘জাদু তেল’ বিক্রেতার তাঁবুর বাইরে ভিড় জমল। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ের সাক্ষী থাকল ইনদওর। সাক্ষী থাকল এক অসামান্য প্রতারণার কাহিনিরও।
০৬১৪
দিল্লি থেকে ইনদওরের ডাকচাইয়া এলাকায় এসে ঘাঁটি গেড়েছিলেন সলমন এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। সলমনের দাবি ছিল, তাঁর কাছে এক বিশেষ তেল এবং ওষুধ রয়েছে। টাকে তেল লাগানোর পাশাপাশি ওই ওষুধ খেলেই নাকি টাকে ভরপুর চুল গজাবে।
০৭১৪
এই দাবি শুনে প্রতি দিন সকাল ৬টা থেকে হাজার হাজার মানুষ ডাকচাইয়া এলাকায় সলমনের তাঁবুর বাইরে লাইনে দাঁড়াতে শুরু করেন। সেই ভি়ড়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও মহিলাদের সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না।
০৮১৪
৩০ টাকায় ওষুধ এবং ৩০০ টাকায় তেল বিক্রি করছিলেন সলমন ভাই। তেল বিক্রির আগে সেই তেল টাক মাথায় মাখিয়েও দিচ্ছিলেন। তাঁর ওষুধ যে অতীতে কাজ করেছে, তা প্রমাণ করার জন্য কয়েক জনকে জুটিয়েওছিলেন।
০৯১৪
ঘটনাস্থলে এত জনসমাগম হয় যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। অনেকে আবার তেল কিনতে নয়, মজা দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন ওই জায়গায়।
১০১৪
সেই ভিড়ের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ইনদওর ছাড়েন সলমন ভাই। ধরা প়়ড়েন তাঁর সহযোগী রইস আহমদ।
১১১৪
জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারেন যে, এই প্রথম নয়। আগেও একাধিক বার এ ভাবে টাকের সমস্যার নিরাময় করার নামে মানুষকে ‘টুপি’ পরিয়েছেন তিনি। যাঁদের সাক্ষী হিসাবে রাখতেন, তাঁরাও সলমনেরই সঙ্গী।
১২১৪
অভিযোগ, এর আগে মেরঠেও একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন সলমন। লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে রাতারাতি চম্পট দেন এলাকা ছেড়ে। তার পরেই ইনদওরে ফাঁদ পেতেছিলেন। সেখান থেকেও লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে পালালেন তিনি।
১৩১৪
পুলিশ সূত্রে খবর, সলমনের খোঁজ চলছে॥। তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা এর আগে দেশের আর কোন কোন জায়গায় প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১৪১৪
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে সাধারণ মানুষকে সাবধান করেছেন চিকিৎসকেরাও। অনেকেই জানিয়েছেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে টাকের সমস্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু এ ধরনের কোনও ‘জাদু তেল’-এ কাজ হবে না। পুলিশও বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সাবধান করেছে।