Mahatma Gandhi was not the first choice for Indian currency notes dgtl
Indian Currency
প্রথম পছন্দ ছিল না তাঁর ছবি! কী ভাবে ভারতীয় নোটের মুখ হয়ে ওঠেন মহাত্মা গান্ধী?
ভারতীয় নোটে রয়েছে মহাত্মা গান্ধীর ছবি। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, ভারত স্বাধীন হওয়ার পর প্রাথমিক ভাবে ভারতীয় নোটে গান্ধীর ছবি ব্যবহারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
একটি দেশের মুদ্রা নিঃশব্দে সে দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের গল্প বলে। মুদ্রা জুড়ে থাকে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক এবং চিত্র।
০২১৭
বিশ্বের অনেক দেশই আবার সে দেশ তৈরির নেপথ্যে থাকা নায়ক বা দেশের কোনও বড় নেতাকে সম্মান জানাতে নোটে তাঁদের ছবি ব্যবহার করে। সে আমেরিকার নোটে জর্জ ওয়াশিংটন হোক, পাকিস্তানের নোটে মহম্মদ আলি জিন্না হোক বা চিনের নোটে মাও জে দং।
০৩১৭
ভারতীয় নোটে রয়েছে মহাত্মা গান্ধীর ছবি। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, ভারত স্বাধীন হওয়ার পর প্রাথমিক ভাবে ভারতীয় নোটে গান্ধীর ছবি ব্যবহারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
০৪১৭
কিন্তু কেন প্রথমে গান্ধীর ছবি ব্যবহারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল এবং কী ভাবেই বা পরে তা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?
০৫১৭
ব্রিটিশরাজের শিকল থেকে ভারতকে মুক্ত করতে মহাত্মা গান্ধীর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা আলাদা করে বলার দরকার প়ড়ে না। তবে স্বাধীনতার পরে ভারতীয় নোটে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘জাতির জনক’-এর ছবি প্রথম পছন্দ ছিল না। তবে পরবর্তী কালে গান্ধীই হয়ে ওঠেন ভারতীয় নোটের মুখ।
০৬১৭
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) বর্ণনা করেছে, স্বাধীনতার পর কী ভাবে ভারতীয় নোটে কার ছবি ব্যবহার করা হবে তা বেছে নেওয়া হল। আরবিআইয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ‘ঔপনিবেশিক ভারত থেকে স্বাধীন ভারতে মুদ্রার রূপান্তর এবং ব্যবস্থাপনা যুক্তিসঙ্গত ভাবে হয়েছিল। মসৃণ ছিল সেই প্রক্রিয়া।’
০৭১৭
আরবিআইয়ের ওয়েবসাইটেই লেখা রয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে বেরিয়ে ভারত স্বাধীন হয়েছিল। তবে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি। এর অন্তর্বর্তিকালীন সময়ে, চালু নোটগুলিকেই ছাপাতে থাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ভারত সরকার ১ টাকার নোটের নতুন নকশা প্রকাশ করে ১৯৪৯ সালে।’’
০৮১৭
আরবিআইয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, নতুন নোটের নকশা তৈরির ভাবনাচিন্তার প্রাথমিক ধাপেই সেই নোটে ব্রিটেনের রাজার পরিবর্তে গান্ধীর প্রতিকৃতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু এই নিয়ে চূড়ান্ত বিশ্লেষণের সময় ঠিক হয়, গান্ধীর ছবির পরিবর্তে সম্রাট অশোকের স্থাপন করা সারনাথের ‘লায়ন ক্যাপিটাল’ ব্যবহার হবে।
০৯১৭
স্বাধীনতার পর বহু বছর ধরে, সেই নোটগুলিই ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং অগ্রগতি উদ্যাপনের প্রতীক হয়ে ওঠে।
১০১৭
পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকের নোটগুলিতে বাঘ এবং হরিণের ছবি ব্যবহার শুরু হয়। শুরু হয় হিরাকুদ বাঁধ, আর্যভট্ট উপগ্রহ এবং বৃহদীশ্বর মন্দিরের ছবির ব্যবহারও।
১১১৭
১৯৬৯ সালে, গান্ধীর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে তাঁর ছবি প্রথম জায়গা পায় ভারতীয় মুদ্রায়। সেই নকশায় সেবাগ্রাম আশ্রমের সামনে গান্ধীর বসে থাকার ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল।
১২১৭
১৯৮৭ সালে তৎকালীন রাজীব গান্ধী সরকার প্রথম ৫০০ টাকা মূল্যের নোট চালু করেছিল ভারতে। সেই নোটে গান্ধীর ছবি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
১৩১৭
১৯৯৬ সালে আরবিআই গান্ধী সিরিজের নোট চালু করে। সেই নোটে ‘ওয়াটারমার্ক’ এবং উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যও যোগ করা হয়। এটি ভারতের মুদ্রার ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হিসাবে চিহ্নিত, কারণ এর পরেই ভারতের সমস্ত নোটে স্থায়ী মুখ হয়ে ওঠেন গান্ধী।
১৪১৭
সাম্প্রতিক সময়ে, ভারতীয় নোটে গান্ধীর ছবির বদলে জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসু, বল্লভভাই পটেল, এমনকি লক্ষ্মী এবং গণেশের ছবি ব্যবহারের বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের তরফে দাবি উঠেছে।
১৫১৭
ভারতীয় নোটে অন্য কারও ছবি প্রতিস্থাপন করা হবে কি না, সে প্রশ্নের উত্তরে ২০১৬ সালে তৎকালীন অর্থ প্রতিমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বলেছিলেন, ‘‘ইউপিএ সরকারের আমলে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল যারা ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ভারতীয় নোটে মহাত্মা গান্ধীর ছবি পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই।’’
১৬১৭
২০২২ সালে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) সমৃদ্ধি আনতে ভারতীয় নোটে লক্ষ্মী এবং গণেশের ছবি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিল। তাতে দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিতর্কের মুখে পড়ে দিল্লির ক্ষমতাসীন দল।
১৭১৭
বছর দুয়েক আগে, ডিজিটাল রুপির নকশায় গান্ধীর ছবি না ব্যবহার করায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধী। টুইট (বর্তমানে এক্স) করে ডিজিটাল মুদ্রার নকশায় গান্ধীকে ‘উপেক্ষা’ করার অভিযোগ তুলে আরবিআই এবং সরকারকে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি।