Lookback 2022: the scams and incidents that rocked West Bengal throughout this year dgtl
Lookback 2022
পার্থ-অর্পিতা এবং কোটি কোটি টাকার নোট! ২০২২ সালে রাজ্যে সব চেয়ে সাড়া জাগানো ঘটনা কি এটাই?
হাওড়ার আমতার ছাত্র নেতা আনিস খানের মৃতদেহ পাওয়া যায় তাঁরই বাড়ির উঠোনে। গভীর রাতে পুলিশের পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েক জন আনিসের বাড়িতে ঢোকেন বলে অভিযোগ।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৮
চোখের সামনে তাড়া তাড়া নোট স্তূপের মতো পড়ে আছে। তার কোণ থেকে উঁকি দিচ্ছে দু'টি-একটি সরকারি খাম, কয়েকটি শিক্ষা দফতরের নামাঙ্কিতও! এই দৃশ্যই কি সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছিল বাংলাকে, না কি গত এক বছরে এমন অনেক ঝাঁকুনি দেওয়া ঘটনা বা দৃশ্য এতটাই বিস্ময় জাগিয়েছে? বছরের শেষ দিনে এক বার ফিরে দেখা যাক ২০২২ সালকে।
০২২৮
১৫ ফেব্রুয়ারি, গীতশ্রী সুরলোকে: বাংলা গানে স্বর্ণযুগের শিল্পীদের শেষ তারাও নিভে গেলেন। ৯০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বাংলা গানে আধুনিকতার প্রতীক ছিলেন সন্ধ্যা। তাঁর গানে বাংলার বহু অভিনেত্রীর ছবি সমৃদ্ধ হয়েছিল। তবে গান গাওয়া বন্ধও করেছিলেন বহু দিন। মৃত্যুর দিন কুড়ি আগে তাঁকে কেন্দ্রের তরফে পদ্মশ্রী দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, সেই প্রস্তাব মর্যাদা-সহ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শিল্পী। ১৯৪৫ সাল থেকে তাঁর গান গাওয়ার শুরু। সাত দশকেরও বেশি দীর্ঘ কর্মজীবন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কেন্দ্রের স্বীকৃতিতে সম্ভবত অপমানিতই বোধ করেছিলেন তিনি। বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এর মধ্যেই শৌচাগারে পড়ে গিয়ে চোট পান শিল্পী। তার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
০৩২৮
১৮ ফেব্রুয়ারি, আনিস খানের মৃত্যু, পুলিশই খুনি? না কি আত্মহত্যা!: হাওড়ার আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃতদেহ পাওয়া যায় তাঁরই বাড়ির উঠোনে। গভীর রাতে পুলিশের পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েক জন আনিসের বাড়িতে ঢোকেন বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে এক জন পুলিশের পোশাকও পরেছিলেন। আনিসের খোঁজে উপরেও উঠেছিলেন তাঁদের মধ্যে দু’জন। তার পরেই ছাদ থেকে আনিস নীচে পড়ে যান। অভিযোগ, পুলিশই আনিসকে ছাদে নিয়ে যায়। শারীরিক অত্যাচারের পর তিন তলা থেকে ছুড়ে ফেলে দেয় মাটিতে। ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করে পরিবার। রাজ্য সরকার তদন্তের দায়িত্ব দেয় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-কে। প্রতিবাদে আমতা থানা ঘেরাও করেন আনিসের পরিজনেরা। শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। আমতা থানার দুই পুলিশকর্মী গ্রেফতার হন। ঘটনার দিন রাতে আনিসের বাড়িতে যাওয়ার কথা স্বীকারও করেন। তবে কার নির্দেশে তাঁরা গিয়েছিলেন, সেই উত্তর এখনও মেলেনি।
০৪২৮
২ মার্চ, পুরভোটে সবুজ সুনামি: ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য বিজেপির ফের মুখ পুড়ল পুরভোটে। রাজ্যের ১০৪টি পুরসভার নির্বাচনে সেই অর্থে কোথাও হালে পানি পায়নি তারা। ৬৩ শতাংশেরও বেশি ভোটে সহজেই জয় পায় তৃণমূল। ১০৮টি পুরসভার মধ্যে মাত্র ছ’টি ছিল তৃণমূলের নাগালের বাইরে। দার্জিলিং, তাহেরপুর, এগরা, বেলডাঙা, ঝালদা ও চাঁপদানি— বাকি সর্বত্রই সবুজের জোয়ার। তুলনায় ভাল ফল করে বামেরা। বিধানসভায় শূন্য হয়ে যাওয়া বাম শিবির ভোট শতাংশের নিরিখে পুরভোটে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে প্রায় ১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে। বিজেপি পায় প্রায় ১৩ শতাংশ ভোট।
০৫২৮
২১ মার্চ, বগটুই গণহত্যা: বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ এনেছিল বিরোধীরা। তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে বগটুই গণহত্যা। পুরভোটের ফল প্রকাশের ১৯ দিনের মাথায় বোমা মেরে খুন করা হয় বীরভূমের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখকে। সেই খুনের বদলা নিতে ওই একই রাতে বগটুই গ্রামের ১০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ। ২২ মার্চ সকালে ওই এলাকায় ৮ জনের পোড়া দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ ওঠে পুড়িয়ে এবং কুপিয়ে মারা হয়েছে ৭ জনকে। পরে গুরুতর জখম আরও ৩ জনের মৃত্যু হয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে। এই ঘটনায় বীরভূমে শাসক দলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হন বিরোধীরা। রামপুরহাটে গিয়ে আক্রান্ত পরিবারগুলির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
০৬২৮
৪ এপ্রিল, হাঁসখালি ধর্ষণ: জন্মদিনের পার্টি উপলক্ষে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ করা হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে। তার কয়েক ঘণ্টার পরেই শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয় তার। নদিয়ার হাঁসখালির এই ঘটনায় অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেতার পুত্রের বিরুদ্ধে। প্রমাণ লোপাটের জন্য ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া ওই নাবালিকাকে দাহ করে আগুন নিভিয়ে ছাই সরিয়ে ফেলার অভিযোগও ওঠে। পরে পরিবারটিকে মুখ বন্ধ রাখার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে শেষ পর্যন্ত ওই নাবালিকার মা থানায় বিষয়টি জানাতে প্রকাশ্যে আসে ঘটনাটি। দল থেকে বহিষ্কার করা হয় ওই তৃণমূল নেতাকে। গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্তকেও। তবে এই ঘটনায় তদন্তকারী সিবিআই চার্জশিট দিলেও চার্জ গঠন করেনি এখনও।
০৭২৮
২ মে, খুনি প্রেমিক: বহরমপুরের এক কলেজছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে ভর সন্ধ্যায় কুপিয়ে খুন করলেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক। হস্টেলের বাইরে ডেকে রাস্তায় ফেলে সুতপাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয় রাস্তার সিসি ক্যামেরায়। সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিয়ো দেখে শিউরে ওঠেন মানুষ। কারণ তাতে দেখা যায়, অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম সুতপা মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরেও তাঁকে কুপিয়ে চলেছেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত। মাটিতে পড়ে থাকা সুতপার শরীর সামান্য নড়ে উঠতে আবার শুরু হয় কোপ। এক সময়ের ভালবাসার সম্পর্ককে এই পর্যায়ে পৌঁছতে দেখে চমকে যায় বাংলা।
০৮২৮
১৫ মে, অভিনেত্রীর আত্মহত্যা!: গড়ফার ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় টলিউডের অভিনেত্রী পল্লবী দে-র দেহ। তাঁর গলায় জড়ানো ছিল বিছানার চাদর। পল্লবীর আচমকা মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছিল সকলকে। হাওড়ার মেয়ে। টলিউডে কাজ করতে এসে পর পর কাজ পেয়েও কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য। পল্লবীর পরিবারের দাবি ছিল, তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করতেই পারে না। তবে পরিবার অভিযোগ করে, অভিনেত্রীর প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীর ভূমিকা থাকতে পারে এই ঘটনায়। গড়ফার ফ্ল্যাটে প্রেমিকের সঙ্গে একত্রবাস করতেন পল্লবী। ধনী পরিবারের সন্তান সাগ্নিকের একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে থাকার প্রমাণও মেলে। বিয়ে, বিচ্ছেদ, ত্রিকোণ প্রেম, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, খুনের সন্দেহ— সব মিলিয়ে পল্লবীর মৃত্যুরহস্যের জল গড়ায় বহু দূর।
০৯২৮
৩১ মে, কলকাতায় মৃত্যু কেকে-র: কলকাতার নজরুল মঞ্চে একটি কলেজের অনুষ্ঠানের গান গাইতে এসে মৃত্যু হয় হিন্দি সিনেমার নেপথ্যগায়ক কেকে-র। অনুষ্ঠানের শেষে অসুস্থ বোধ করেন শিল্পী। হোটেলে ফিরে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আকস্মিক এই ঘটনায় মুষড়ে পড়েন কেকে-র ভক্তেরা। অভিযোগ ওঠে নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষ এমনকি প্রশাসনের ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধেও। নিয়ম ভেঙে প্রেক্ষাগৃহে অতিরিক্ত দর্শকের উপস্থিতি এবং যথাযথ বাতানুকূল ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ আনা হয়। তবে কেকে-র পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। রবীন্দ্র সদনে শায়িত শিল্পীর মরদেহ মুম্বই থেকে এসে নিয়ে যান তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানেরা। অন্য দিকে, অনুষ্ঠানের আগে কেকে-কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বাংলার গায়ক রূপঙ্কর বাগচী তীব্র সমালোচনার শিকার হন কেকে-র মৃত্যুর পর।
১০২৮
৪ জুন, রেণুর কব্জি কাটলেন স্বামী: নার্সের চাকরিতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কেতু গ্রামের রেণু খাতুন। তিনি যাতে কাজ না করতে পারেন, সে জন্য ঘুমের মধ্যে রেণুর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি কেটে নেন স্বামী। এ কাজে তাঁর সঙ্গীও ছিলেন এক জন। পুলিশ রেণুর স্বামীকে গ্রেফতার করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতার নির্দেশে নার্সিং প্রশিক্ষণ স্কুলে চাকরিও পান রেণু। তবে এই ঘটনায় বাকি অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যান।
১১২৮
৬ জুন, মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় খুন: ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জি রোডে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অদূরেই খুন হন এক গুজরাতি দম্পতি। ভরদুপুরে অশোক শাহ নামের এক প্রৌঢ় ব্যবসায়ীকে তাঁর বাড়িতে ঢুকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়। তাঁর স্ত্রী রশ্মিতাকে খুন করা হয় গুলি করে। ডাকাতির প্রমাণও পাওয়া যায় বাড়িতে। তবে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ার এই ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
১২২৮
৭ জুন, গোয়ায় গ্রেফতার রোদ্দূর: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগে গোয়া থেকে গ্রেফতার হন রোদ্দূর রায়। তৃণমূলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ফেসবুক লাইভে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সম্পর্কে রোদ্দূর কিছু বাজারচলতি অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেছিলেন বলে জানানো হয়েছিল সেই অভিযোগে।
১৩২৮
১০ জুন, গুলি চলল পার্ক সার্কাসে: ভরদুপুরে কলকাতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল দু’জনের। পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড় থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে বেকবাগানে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের আউট পোস্টে কর্মরত এক নিরাপত্তারক্ষী আচমকাই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক পথচারী তরুণীর। জানা যায়, ওই দিনই বিয়ের পাকা দেখার কথা ছিল তাঁর। পরে ওই নিরাপত্তাকর্মীও নিজে গলায় গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হন।
১৪২৮
২৫ জুন, হাসপাতালেই আত্মঘাতী রোগী: মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসের আট তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু হল রোগীর। সুজিত অধিকারী নামে ওই রোগী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে দাবি করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালের কার্নিশে তাঁকে বসে থাকতে দেখার পর হাতে যথেষ্ট সময় থাকলেও কেন বাঁচানো গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
১৫২৮
২ জুলাই, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অনুপ্রবেশ: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন এক আগন্তুক। মমতার জন্য থাকা কড়া নিরাপত্তার নজর এড়িয়ে তাঁর বাড়ির চত্বরেই লুকিয়েছিলেন ২ জুলাই রাত দেড়টা থেকে ৩ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত— প্রায় ৭ ঘণ্টা। তাঁর কাছে একটি লোহার রড পাওয়া যায়। মোবাইল ফোনে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির বিভিন্ন অংশের ছবিও পায় পুলিশ। মোবাইলে ১১টি সিমকার্ড ব্যবহারের প্রমাণও মেলে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে ওই আগন্তুকের নাম হাফিজুল মোল্লা। বাড়ি হাসনাবাদের নারায়ণপুর গ্রামে। যদিও হাফিজুলের পরিবার দাবি করে, তিনি মানসিক ভারসম্যহীন।
১৬২৮
৪ জুলাই, তরুণ মজুমদারের মৃত্যু: মাটির কাছাকাছি সিনেমা বানানো পরিচালকদের অন্যতম তিনি। সহজ সরল ভাষায় গল্প বলা ছিল তাঁর সিনেমার বৈশিষ্ট্য। সেই তরুণ মজুমদার প্রয়াত হলেন ৯১ বছর বয়সে। কিডনি এবং হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় দীর্ঘ দিন ধরেই ভুগছিলেন প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিচালক। তাঁর শেষ ইচ্ছে মেনে দেহ দান করা হয় গবেষণার স্বার্থে। শেষ শয্যায় বাম-মনস্ক পরিচালকের বুকে রাখা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলি, শরীর মুড়ে দেওয়া হয় শ্রমিক আন্দোলনের লাল পতাকায়।
১৭২৮
২৩ জুলাই, মন্ত্রী পার্থ গ্রেফতার, সঙ্গী ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতাও রাজ্যে: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের আবহে গ্রেফতার হন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে বেশ কিছু দলিল উদ্ধার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পরে অর্পিতার বাড়িতে গিয়ে খোঁজ মেলে ২১ কোটি নগদ টাকার। জেরার পর টাকার উৎস জানাতে না পারায় গ্রেফতার করা হয় দু’জনকেই। মন্ত্রিত্ব হারান পার্থ। খুলে যায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির এক অজানা অধ্যায়।
১৮২৮
৩০ জুলাই, শাড়ি কিনতে ৪৯ লক্ষ!: হাওড়ার পাঁচলায় ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে ৪৯ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশকে তাঁরা জানান শাড়ি কেনার জন্য টাকা নিয়ে এসেছেন। কিন্তু সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। তিন বিধায়ককে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। প্রকাশ্যে আসে ঝাড়খণ্ড সরকার ফেলার জন্য বিধায়ক ‘বেচাকেনা’র তত্ত্বও।
১৯২৮
১০ অগস্ট, সিবিআই-অশান্তি শান্তিপ্রসাদের, সঙ্গী চেয়ারম্যান অশোকও: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির জল যত গড়াতে থাকে, ততই প্রকাশ্যে আসে একের পর এক নাম। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এবং এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক সাহাকে। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বাগ কমিটির রিপোর্টে দু’জনেরই নাম ছিল। বস্তুত দুর্নীতিতে শান্তিপ্রসাদের বড় ভূমিকা ছিল বলেও জানানো হয় রিপোর্টে।
২০২৮
১১ অগস্ট, কেষ্টর জেল যাত্রা: তাঁকে গ্রেফতার করা হবে, না কি হবে না! গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে কখনও সিবিআই-ইডির তলব এড়িয়ে, কখনও নিজে থেকেই তাঁদের দফতরে হাজির হয়ে এই প্রশ্নের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অবশেষে ১১ অগস্ট অনুব্রতকে তাঁর বোলপুরের বাড়ি ঘেরাও করে নাটকীয় ভাবে গ্রেফতার করে সিবিআই। আপাতত সেই মামলাতেই জেলে রয়েছেন অনুব্রত।
২১২৮
৬ সেপ্টেম্বর, বাগুইআটির জোড়া খুন: ঘটনাটি ঘটে ২২ অগস্ট। দশম শ্রেণির দুই ছাত্রকে বাইক কিনে দেওয়ার নাম করে হাইওয়েতে নিয়ে গিয়ে চলন্ত গাড়িতে খুন করে তাঁদেরই পরিচিত এক গাড়ির দালাল। গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করার পর দু’টি দেহ আলাদা আলাদা জায়গায় নয়নজুলিতে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। ১৩ দিন সেই দেহ দু’টি বসিরহাটের মর্গে পড়ে থাকার পর ৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্যে আসে খুনের ঘটনা। তিন দিনের মাথায় বাগুইআটি জোড়া খুন কাণ্ডের মূলচক্রী সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২২২৮
১০ সেপ্টেম্বর, ‘খেলা’চ্ছলে ১৭ কোটি গার্ডেনরিচে: পরিবহণ ব্যবসায়ীর ছেলে আমির খানের বাড়ি থেকে ১৭ কোটি ৯ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল ইডি। অনলাইন গেমিং অ্যাপ বানিয়ে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসেছিলেন আমির। সরকারের নজর এড়িয়ে টাকা লেনদেনের জন্য ১৬২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। ইডি জানিয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে খিদিরপুর, একবালপুর ও মেটিয়াবুরুজ এলাকার শ’দেড়েক যুবককে নিয়ে প্রতারণা চক্র তৈরি করেন আমির।
২৩২৮
৫ অক্টোবর, বিসর্জনে বিপর্যয়: দশমীর রাতে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনের মুহূর্তে মালবাজারের মাল নদীতে আচমকা জলস্রোতে ভেসে যান বহু মানুষ। ১০টিরও বেশি ট্রাকে চড়ে তাঁরা এসেছিলেন বিভিন্ন প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায়। প্রতিমা নিরঞ্জন যখন পুরোদমে চলছে তখন আচমকা ধেয়ে আসে হড়পা বান। স্রোতের ধাক্কায় ভেসে যায় ট্রাকও। ৮ জনের মৃত্যু হয়। জখম হয় অনেকে।
২৪২৮
১১ অক্টোবর, হেফাজতে মানিক: টেট দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করল ইডি। সিজিও কমপ্লেক্সে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি এবং জেরায় অসহযোগিতার অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয় পলাশিপাড়ার বিধায়ককে।
২৫২৮
২০ নভেম্বর, হেরে গেলেন ঐন্দ্রিলা: দু’বার ক্যানসারকে টেক্কা দিয়েও শেষটায় হার মানলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। ২০ নভেম্বর, দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন টলিউড অভিনেত্রী। ১ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ ঐন্দ্রিলাকে ভর্তি করানো হয়েছিল হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে ঐন্দ্রিলার। তার পর কোমায় চলে যান তিনি। রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। আর জ্ঞান ফেরেনি তাঁর।
২৬২৮
১৭ নভেম্বর, পশ্চিমবঙ্গে নতুন রাজ্যপাল: রাজ্যের নতুন রাজ্যপাল হিসাবে সি ভি আনন্দ বোসের নাম ঘোষণা করল কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পছন্দের মানুষ হিসাবে পরিচিত বোস। মোদী তাঁকে ডাকেন ‘ম্যান অফ আইডিয়াজ’ বলে। তবে কেরলের মানুষ বোস তাঁর পদবিটি নিয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের নাম থেকে অনুপ্রেরণায়।
২৭২৮
১২ ডিসেম্বর, গোয়েন্দা হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যু: সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু হল বগটুই গণহত্যার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের। বড়শাল গ্রামের যে পঞ্চায়েত উপপ্রধানের খুন থেকে বগটুই কাণ্ডের সূত্রপাত, সেই ভাদু শেখের ঘনিষ্ঠ ছিলেন লালন। তবে বগটুইয়ের ঘটনার পরই নিখোঁজ হয়ে যায় সে। ৩ ডিসেম্বর তাঁকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার ৯ দিনের মাথায় লালনের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের শৌচাগার থেকে।
২৮২৮
৩০ ডিসেম্বর, বাংলায় বন্দে ভারত: বাংলায় শুরু হল দেশের দ্রুততম ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সফর। মাতৃবিয়োগের কারণে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ট্রেনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। হাওড়া স্টেশনে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় বন্দে ভারতের যাত্রা। উদ্বোধনের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলার রাজ্যপাল বোস। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও।