লখিমপুর খেরি জেলার মহেবাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা এক যুবতীর দাবি, তাঁর ১৪ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন লিভ ইন পার্টনার।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ১৪:৫০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
বছরখানেক পর আবারও শিরোনামে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি। এ বার অবশ্য কোনও মন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকদের গাড়ির ধাক্কা মারার অভিযোগ নয়। বরং লিভ ইন পার্টনারকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে তাঁর যৌনাঙ্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেখানকার এক যুবতীর বিরুদ্ধে।
০২১৫
লখিমপুর খেরি জেলার মহেবাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ওই যুবতীর দাবি, তাঁর ১৪ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন লিভ ইন পার্টনার। সে কারণেই এমনটা করতে বাধ্য হয়েছেন। এবং এ নিয়ে তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই।
০৩১৫
পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। আপাতত লখনউয়ের এক হাসপাতালে তাঁকে রেফার করা হয়েছে। সেখানেই ওই যুবক চিকিৎসাধীন।
০৪১৫
৩২ বছরের ওই যুবকের বিরুদ্ধে অবশ্য ধর্ষণের চেষ্টা নয়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে লখিমপুর থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট (পকসো)-এর ধারাও।
০৫১৫
সংবাদমাধ্যমে লখিমপুর খেরির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক চন্দ্রশেখর সিংহ বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে লখনউয়ের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’’
০৬১৫
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার নিজের মেয়েকে ঘরে রেখে কাজে গিয়েছিলেন ওই যুবতী। অভিযোগ, তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন যুবতীর লিভ ইন পার্টনার। কাজ সেরে ঘরে ফিরে এসে এসে যুবকের ‘কুকর্ম’ হাতেনাতে ধরে ফেলেন তিনি।
০৭১৫
যুবতীর দাবি, নিজের মেয়েকে ধর্ষণে বাধা দিতে গেলে তাঁকেও আক্রমণ করেন তাঁর পার্টনার। পুলিশের কাছে বয়ানে যুবতী বলেন, ‘‘ফার্মে কাজ করতে বাইরে গিয়েছিলাম। ভাগ্য ভাল যে ঠিক সময়ে ফিরে এসেছিলাম। ঘরে ঢুকে ওকে (লিভ ইন পার্টনারকে) একেবারে হাতেনাতে ধরে ফেলি। আমাকেও মারতে আসে। ছুটে গিয়ে রান্নাঘর থেকে একটি ছুরি নিয়ে ওর যৌনাঙ্গ কেটে ফেলি। ওকে উচিত শিক্ষা দিতেই এমন করেছি। যা করেছি, তাতে কোনও আক্ষেপ নেই।’’
০৮১৫
পুলিশ জানিয়েছে, মদ্যপ স্বামীর অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পেতেই বছর দুয়েক আগে মেয়েকে নিয়ে ওই যুবকের সঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন ৩৬ বছরের ওই তরুণী।
০৯১৫
লখিমপুর খেরির এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নিলেও তা নিয়ে সে ভাবে দেশ জুড়ে হইচই শুরু হয়নি। যে উত্তাল পরিস্থিতি হয়েছিল বছরখানেক আগে।
১০১৫
গত বছরের ৩ অক্টোবরে কৃষক আন্দোলনের অঙ্গ হিসাবে লখিমপুরের বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের বহু কৃষক। অভিযোগ, সে সময় কৃষকদের লক্ষ্য করে ওই জমায়েতে গাড়ি চালিয়ে দেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্র টেনি। ওই ঘটনায় চার জন কৃষক মারা গিয়েছিলেন।
১১১৫
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লখিমপুর খেরি। ওই ঘটনার পর হিংসার জেরে মারা গিয়েছিলেন দুই বিজেপি নেতা, এক গাড়িচালক এবং এক জন সাংবাদিক। লখিমপুর-কাণ্ডের রেশ ছড়ায় দেশের নানা প্রান্তে। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ দেশের একাধিক রাজ্যে মন্ত্রীর ছেলেকে গ্রেফতারির দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ।
১২১৫
যে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মতো লখিমপুরেও কৃষকদের আন্দোলন চলছিল, তা গত নভেম্বরে প্রত্যাহার করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার আগে অবশ্য বিস্তর টানাপড়েনের পর জেলে যেতে হয়েছিল আশিসকে।
১৩১৫
আশিস এবং তাঁর এক সঙ্গীর বিরুদ্ধে কৃষকদের লক্ষ্য করে গুলিচালনার অভিযোগও উঠেছিল, যদিও মন্ত্রী অজয়ের দাবি, ঘটনার সময় ওই গাড়িতে ছিলেন না আশিস। গত ৯ অক্টোবর আশিসকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কয়েক দিন পরেই উদ্ধার করা হয় তাঁর বন্দুক।
১৪১৫
চার মাস ধরে লখিমপুর খেরির জেলে বন্দি থাকার পর ১০ ফেব্রুয়ারি আশিসকে জামিন দিয়েছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্টের লখনউ বেঞ্চ।
১৫১৫
আশিসের জামিনে মুক্তির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান লখিমপুরে মৃত কৃষকদের পরিবার। গত ১৮ এপ্রিল ইলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, আশিসকে জামিন দেওয়া যাবে না। এর পর আত্মসমর্পণ করে জেলে যান আশিস।