Kuldhara, the abandoned village of Rajasthan remained a mystery dgtl
Kuldhara
Kuldhara: ৩০০ বছর ধরে জনশূন্য, গ্রামবাসীদের অভিশাপেই কি ‘ভুতুড়ে’ রাজস্থানের এই গ্রাম?
লোকমুখে প্রচলিত, এক রাতেই জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল রাজস্থানের এই বর্ধিষ্ণু গ্রামটি!
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৯:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অসংখ্য ঘরবাড়ি। তবে কোনওটাতেই লোকজনের দেখা নেই। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে কুলধারা! লোকমুখে প্রচলিত, এক রাতেই জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল রাজস্থানের এই বর্ধিষ্ণু গ্রামটি।
ছবি: সংগৃহীত।
০২১৬
অনেকের দাবি, জনমানবহীন কুলধারায় ঘুরে বেড়ায় অতৃপ্ত আত্মা! সেখানে বসতি গড়ার চেষ্টা করলেও নানা ভৌতিক কাণ্ডকারখানার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনও দাবি স্থানীয়দের।
প্রতীকী ছবি।
০৩১৬
মরুরাজ্যে সোনার কেল্লার শহর জয়সলমের থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পশ্চিমে এগোলেই দেখা মেলে কুলধারার। এককালে তা পালীবাল ব্রাহ্মণদের বসতি বলে পরিচিত ছিল। তবে আজ আর তাঁদের উত্তরসূরিদের দেখা পাওয়া যায় না।
ছবি: সংগৃহীত।
০৪১৬
কুলধারায় দেখা মেলে না কোনও মানুষের। তবে জায়গাটি যাতে বেহাত হয়ে না যায়, সে বন্দোবস্তও করেছে সরকার। ইদানীং তা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর অধীনে রয়েছে। টিকিট কেটে পর্যটকদের ঢোকার বন্দোবস্ত করেছে এএসআই।
ছবি: সংগৃহীত।
০৫১৬
অথচ এককালে জমজমাট ছিল কুলধারা। কেন এ হাল হল গ্রামটির? এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। অনেকের মতে, রাজরাজড়ার যুগে জয়সলমেরের প্রধানমন্ত্রী সালিম সিংহের কুনজর পড়েছিল গ্রামপ্রধানের মেয়ের দিকে। জোর করে তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সালিম। সে জন্য গ্রামবাসীদের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৬
সালিম নাকি যা চান, তা-ই হাসিল করে নেন। জনশ্রুতি, গ্রামপ্রধানের মেয়েকে তাঁর হাতে তুলে না দিলে ফল ভাল হবে না বলে সতর্কও করেন তিনি। এর অন্যথা হলে গ্রামবাসীদের খাজনা বাড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৬
বিপদ বুঝে তড়িঘড়ি ৮৫টি গ্রামের পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পালীবাল ব্রাহ্মণেরা। সেখানেই নাকি সিদ্ধান্ত হয়, গ্রামপ্রধানের মেয়েকে সালিমের থেকে বাঁচাতে রাতারাতি গ্রাম ছেড়ে পালাবেন বাসিন্দারা। তা-ই করেছিল কুলধারা।
প্রতীকী ছবি।
০৮১৬
এক রাতেই ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল গ্রাম। ইতিউতি কয়েকটি গাছ ছাড়া প্রাণের চিহ্ন নেই এ গ্রামে। তবে কৌতূহলী পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৬
সালিম এবং গ্রামপ্রধানের মেয়ের কাহিনিতে অনেকে আবার প্রেমের অনুষঙ্গও খুঁজে পেয়েছেন। তাঁদের দাবি, গ্রামপ্রধানের মেয়ের প্রেমে পড়েই তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সালিম। তবে তাতে নারাজ ছিলেন গ্রামবাসীরা। গ্রাম ছাড়ার আগে পরিবারের সম্মানরক্ষায় ওই মেয়েটিকে খুন করেন তাঁরা।
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৬
অন্য এক দলের মত, গ্রামবাসীদের থেকে এত চড়া খাজনা আদায় করতেন সালিম যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। তবে সালিমের সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও করতে পারেননি। তাই উপায় না দেখে কুলধারা ছেড়ে অন্য জায়গায় বসতি গড়েন গ্রামবাসীরা।
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৬
রহস্যের টানে কুলধারায় বহু পর্যটকই পা রাখেন। তাঁরা জানিয়েছেন, কুলধারায় সার সার ঘরবাড়ি এখনও প্রায় অক্ষত। কয়েকটি ঘরবাড়ির চাল উড়ে গেলেও মাটির দেওয়াল পড়ে যায়নি। তবে অনেকের সেখানে অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়েছে বলে দাবি।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৬
স্থানীয়দের দাবি, আজও গ্রামপ্রধানের মেয়ের অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায় কুলধারায়। যদিও এ নিয়ে তর্ক আজও অব্যাহত।
প্রতীকী ছবি।
১৩১৬
তবে লোককথা ছাড়াও ইতিহাসে কুলধারার উল্লেখ রয়েছে। ত্রয়োদশ শতকে রাজস্থানের পালী শহর থেকে জয়সলমের এলাকায় কুলধারা গ্রামে বসতি গড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। ১৮১৫ সালে তা জনশূন্য হয়ে যায় বলে দাবি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪১৬
১৮৯৯ সালে লক্ষ্মী চন্দের লেখা ‘তারিখ-ই-জয়সলমের’ বইটিতে কুলধারার বিষয়ে নানা তথ্য পাওয়া যায়। তাতে লেখা রয়েছে, এ গ্রামে কড়হান নামে এক পালীবাল ব্রাহ্মণ প্রথম বসবাস করতে শুরু করেছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৬
মূলত জোধপুরের পালীবাল সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণেরাই এ গ্রামে বসবাস করতেন। কৃষিকাজের পাশাপাশি ব্যবসাবাণিজ্যের মাধ্যমে আয় করতেন তাঁরা।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৬
কুলধারায় অন্তত ৪১০টি ঘরবাড়ির প্রায় ভগ্নপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনটি সমাধিক্ষেত্রও পাওয়া গিয়েছে। রয়েছে একাধিক কুয়ো। তবে তা থেকে জল ভরার লোকজন নেই। ৩০০ বছর আগেকার সেই বর্ধিষ্ণু গ্রাম থেকে রাতারাতিই নাকি লোকজন গায়েব হয়ে যায়। কেন? তা নিয়ে জনশ্রুতির অভাব নেই!