Know Vinod Channa the trainer who reduced Anant Ambanis weight 108 kg in Just 18 months dgtl
Vinod Channa
দু’বেলা খাবার জুটত না, অম্বানী-তনয়ের ১০৮ কেজি ওজন কমানো বিনোদ এখন নিজেই তারকা!
মুকেশ-নীতার কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত অম্বানীর চেহারার আমূল রূপান্তর ঘটিয়েছিলেন বিনোদ। চোখের সামনে দেশের মানুষ দেখেছিল পৃথুলবপু অনন্তকে সুঠাম হয়ে যেতে। চোখে দেখেও সেই রূপান্তর বিশ্বাস করতে পারেননি অনেকে। আর এই ‘অবিশ্বাস্য’ ঘটনাই বিনোদকে এক ধাক্কায় পৌঁছে দিয়েছিল খ্যাতির শীর্ষে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ১২:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
না খেতে পেয়ে অপুষ্টিতে ভুগতেন এককালে! এখন তিনিই দেশের বড় বড় তারকার সঠিক পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখেন।
০২২২
নাম বিনোদ চান্না। দেশের অন্যতম তারকা ফিটনেস প্রশিক্ষক তিনি। তবে তাঁর খ্যাতির নেপথ্যে ভূমিকা রয়েছে ভারতের সবচেয়ে ধনী পরিবারের।
০৩২২
মুকেশ অম্বানীর স্ত্রী নীতা অম্বানীর ফিটনেসের দায়িত্বে রয়েছেন বিনোদ। ৬০ বছর বয়সের নীতার ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কথা নয়।
০৪২২
আইপিএলের দল নিয়ে হিল্লিদিল্লি করে বেড়াচ্ছেন। অম্বানী গোষ্ঠীর নানা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে তার কাজও করছেন। এমনকি, পুত্রবধূদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মঞ্চে নাচেনও। তবে বিনোদের খ্যাতির নেপথ্যে নীতা নন, রয়েছেন অন্য এক অম্বানী।
০৫২২
মুকেশ-নীতার কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত অম্বানীর চেহারার আমূল রূপান্তর ঘটিয়েছিলেন বিনোদ। চোখের সামনে দেশের মানুষ দেখেছিল পৃথুলবপু অনন্তকে সুঠাম হয়ে যেতে। চোখে দেখেও সেই রূপান্তর বিশ্বাস করতে পারেননি অনেকে। আর এই অবিশ্বাস্য ঘটনাই বিনোদকে এক ধাক্কায় পৌঁছে দিয়েছিল খ্যাতির শীর্ষে।
০৬২২
দেড় বছরে অনন্তের ১০৮ কেজি ওজন ঝরিয়েছিলেন বিনোদ। কাজটা সহজ ছিল না একেবারেই।
০৭২২
এক সাক্ষাৎকারে বিনোদ জানিয়েছিলেন, অনন্তের সঙ্গে যখন তিনি তাঁর কাজ শুরু করেন তখন তাঁর ওজন ছিল ১৭০ কেজির কাছকাছি। সেখান থেকে অম্বানী-পুত্রকে প্রায় ৬০ কেজিতে নামিয়ে আনেন তিনি।
০৮২২
বিনোদ জানিয়েছেন, অনন্ত খেতে ভালবাসেন। ভাজাভুজি আর ফাস্টফুডের ভক্ত। খানও বেশি। তবে বিনোদ সেই অভ্যাস সম্পূর্ণ বদলে তাঁর স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস তৈরি করেছিলেন। তৈরি করে দিয়েছিলেন বিশেষ ডায়েট চার্ট। কড়া শরীরচর্চার রুটিনও। অনন্তও সহযোগিতা করেছিলেন।
০৯২২
টানা ১৮ মাস সেই রুটিন মানার ফল পান অনন্ত। অম্বানী-তনয়কে দেখে মুগ্ধ হন সবাই। বাড়তে থাকে বিনোদের জনপ্রিয়তা। এখন তাঁর ‘ক্লায়েন্ট’দের তালিকা তারকাখচিত।
১০২২
শিল্পপতি কুমারমঙ্গলম বিড়লা, অনন্যা বিড়লা থেকে শুরু করে শিল্পা শেট্টি কুন্দ্রা, জন আব্রাহাম, অর্জুন রামপালের মতো বহু সুগঠিত চেহারার বলিউড সেলিব্রিটির ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক এই বিনোদ।
১১২২
তারকা হয়ে উঠেছেন বিনোদ নিজেও। শোনা যায় এখন তাঁর তত্ত্বাবধানে স্রেফ ১২ দিন শরীরচর্চা করতে চাইলে দিতে হয় দেড় লক্ষ টাকা। তার পরেও তাঁর সময় পাওয়া যায় না।
১২২২
অথচ বিনোদ নিজে উঠে এসেছেন অভাবী পরিবার থেকে। এমনও দিন গিয়েছে, যখন দু’বেলা ঠিক করে খেতেও পেতেন না তিনি। অপুষ্টিতে ভুগতেন। রোগা চেহারার জন্য ঠাট্টাও শুনেছেন বিস্তর।
১৩২২
অপুষ্টিতে ভোগায় মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তার উপর ছিল আত্মীয়দের নিরন্তর মুখঝামটা। চাকরি না করার জন্য ছোট ভাইও অপমান করতে ছাড়েননি বিনোদকে। এ সব শুনে একসময়ে খেতেও ইচ্ছা করত না বিনোদের।
১৪২২
বিনোদ জানিয়েছেন, অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে এক দিন বেরিয়ে যান কাজের সন্ধানে। প্রথমে হোটেলের ঘর পরিষ্কার করার কাজ করেন। পারিশ্রমিক উপযুক্ত না হওয়ায় চাকরি নেন বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষীর। কিন্তু এক দিন বস্কেই স্যালুট ঠুকতে ভুলে যান। চাকরি যায়।
১৫২২
কর্পোরেট অফিসে পিয়নের চাকরিও নেন বিনোদ। কিন্তু বুঝতে পারছিলেন, এই সব কাজ তাঁর জন্য নয়। শেষে মন দেন শরীরচর্চায়।
১৬২২
কিন্তু শরীরচর্চা করার ‘জ্বালানি’ আসবে কোথা থেকে? ভাল করে তো খাবারই জোটে না। সরঞ্জামই বা পাবেন কোথায়। জমানো টাকায় সাধারণ পুষ্টিকর খাবার খেয়েই শুরু করেন কাজ। শরীরচর্চার জন্য আধুনিক জিমে না গিয়ে যোগ দেন পাড়ার শরীরচর্চা কেন্দ্রে।
১৭২২
এ ভাবেই ধীরে ধীরে এগোতে এগোতে এক দিন মহারাষ্ট্রের সৌষ্ঠব প্রতিযোগিতায় প্রথম হন বিনোদ। উৎসাহিত বিনোদ আর পিছু ফিরে তাকাননি। তত দিনে জিমের প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করতে শুরু করেছেন তিনি। নিজের শরীরচর্চার জন্য নিজের উদ্যোগে ডায়েট নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন বিনোদ। সেই জ্ঞান উপকারেও লাগছিল।
১৮২২
বিনোদ ঠিক করেন তিনি ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করবেন। মুম্বইয়ে টিভি এবং সিনেমার তারকাদের জন্য এই পেশার চল আছে। বিনোদ সেই বাজার ধরতেই চলে আসেন অন্ধেরি এবং বান্দ্রার কাছাকাছি এলাকায়। সেখানেই থাকতে শুরু করেন।
১৯২২
ছোটখাটো টিভি তারকাদের সঙ্গে কাজ করতে করতেই খ্যাতি ছড়াতে থাকে বিনোদের। এক দিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলিউড তারকা রীতেশ দেশমুখ। সেই সময় তিনি ‘হাউসফুল’ ছবির জন্য কাজ শুরু করেছেন। বিনোদের থেকে ফিটনেস ট্রেনিং নেওয়া শুরু করেন রীতেশ। সেই প্রথম বড় তারকার সঙ্গে কাজ করা শুরু বিনোদের। এর পরে একে একে ‘হাউসফুল’-এর একাধিক তারকা বিনোদের কাছে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ নেন জন অ্যাব্রাহাম। তবে বিনোদের জীবনের সেরা মুহূর্ত অমিতাভ বচ্চনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া।
২০২২
বিনোদ জানিয়েছেন, বিগ বিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় বিনোদকে ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করেছিলেন অমিতাভ। শুনে চমকে গিয়েছিলেন বিনোদ। অমিতাভ বলেছিলেন, যে হেতু এখানে তিনি শিক্ষা নিচ্ছেন এবং বিনোদ শিক্ষক, তাই ‘স্যর’ বলা উচিত।
২১২২
এর পরে ধীরে ধীরে তারকাদেরই ফিটনেস প্রশিক্ষক হয়ে ওঠেন বিনোদ। অম্বানী পরিবার থেকে তাঁর তলব আসে বছর কয়েক আগে। প্রথমে নীতাকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন তিনি। পরে তাঁকে অনন্তের ওজন কমানোর দায়িত্ব দেন নীতা।
২২২২
অনন্তের এই রূপান্তরের পর তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব জুড়ে। তবে তাঁর এই উত্থানের নেপথ্যে গোড়ার দিনগুলির কথা কখনও ভুলবেন না তিনি।