কালকা-শিমলা রেলপথে সবচেয়ে দীর্ঘ সুড়ঙ্গ ‘টানেল ৩৩’ পর্যটকদের জন্য একটি দ্রষ্টব্য স্থানও বটে। তবে শিমলার এই সুড়ঙ্গের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘ভৌতিক’ কাহিনি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৪ ০৯:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
হিমাচল প্রদেশের সোলান জেলায় একটি ছোট্ট পাহাড়ি স্টেশন বোরাগ। সেই স্টেশনের কাছেই রয়েছে ‘টানেল ৩৩’। কালকা-শিমলা রেলপথের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গ হিসাবে উল্লেখযোগ্য এই ‘টানেল ৩৩’। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১৪৪ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এই সুড়ঙ্গটি পর্যটকদের জন্য একটি দ্রষ্টব্য স্থানও বটে। শিমলার এই সুড়ঙ্গের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘ভৌতিক কাহিনিও’।
০২১৫
কালকা-শিমলা রেলপথে ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনের উপর দিয়ে চলাচল করে টয় ট্রেন। এই রেলপথে রয়েছে ছো়ট-বড় মোট ৮৮৯ সেতু। রয়েছে ১০২টি সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গগুলির মধ্যে দীর্ঘতম ‘টানেল ৩৩’। ট্রেনে প্রায় আড়াই মিনিট সময় লাগে এই সুড়ঙ্গ পার করতে। স্থানীয়দের মতে, এই সুড়ঙ্গের ভিতরেই নাকি ঘুরে বেড়ায় এক ইঞ্জিনিয়ারের ‘প্রেতাত্মা’।
০৩১৫
১৮৯৮ সালের ঘটনা। কর্নেল বারোগের উপর একটি সুড়ঙ্গ তৈরির দায়িত্ব দেয় ব্রিটিশ সরকার। বারোগ ছিলেন পেশায় রেল ইঞ্জিনিয়ার। কী ভাবে পাহাড়ি এলাকায় সুড়ঙ্গ তৈরি করবেন তার পরিকল্পনা করতে শুরু করেন বারোগ।
০৪১৫
সুড়ঙ্গ তৈরির জন্য ব্রিটেন থেকে শিমলা চলে আসেন বারোগ। সঙ্গে ছিল তাঁর সর্ব ক্ষণের সঙ্গী, তাঁর পোষ্য কুকুর। বারোগ যেখানেই যেতেন, তাঁর সঙ্গে থাকত কুকুরটি।
০৫১৫
শিমলায় পৌঁছনোর পর বারোগের উপর চাপ বৃদ্ধি করতে শুরু করে ব্রিটিশ সরকার। নির্ধারিত সময়েই কাজটি শেষ করা বাধ্যতামূলক বলে বারোগকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
০৬১৫
এত কম সময়ের মধ্যে কী ভাবে সুড়ঙ্গ তৈরি করবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না বারোগ। তবুও একটি উপায় বার করেছিলেন তিনি।
০৭১৫
অধিক সংখ্যক শ্রমিক জোগাড় করে দু’দিক থেকে সুড়ঙ্গ কাটার নির্দেশ দেন বারোগ। তিনি ভেবেছিলেন দু’দিক থেকে সুড়ঙ্গ কাটলে কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হবে। পরিকল্পনামাফিক কাজ শুরু করে দেন তিনি।
০৮১৫
কিন্তু বারোগের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষও করতে পারেননি তিনি। সময়ে কাজ শেষ করতে পারেননি বলে বারোগকে উপহাস করেছিলেন ব্রিটিশ সরকারের আধিকারিকেরা।
০৯১৫
এমনকি কাজ শেষ না করার অপরাধে বারোগের কাছে জরিমানাও আদায় করা হয়। এই ঘটনায় নাকি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
১০১৫
স্থানীয়দের দাবি, অসম্পূর্ণ সুড়ঙ্গের ভিতরে আত্মহত্যা করেন বারোগ। সুড়ঙ্গের ভিতরে গিয়ে গুলি করে নিজেকে শেষ করেন তিনি।
১১১৫
গুলি চালানোর সময় বারোগের সঙ্গে নাকি ছিল তাঁর পোষ্যও। বারোগকে ওই অবস্থায় দেখে নাকি কুকুরটি চিৎকার করে ডাকছিল। কিন্তু তার চিৎকার কারও কানে পৌঁছয়নি।
১২১৫
বারোগকে শ্রদ্ধা জানাতে সুড়ঙ্গের পাশে একটি জায়গায় তাঁর দেহ কবর দেওয়া হয়। বারোগের নামানুসারে সেখানকার স্টেশনের নামকরণও করা হয়।
১৩১৫
বারোগের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে ব্রিটিশ সরকারের তরফে শিমলায় পাঠানো হয় এইচএস হার্লিংটনকে। মূল সুড়ঙ্গ থেকে এক কিলোমিটার দূরে সুড়ঙ্গ তৈরি করতে শুরু করেন তিনি। তাঁর পরিকল্পনা সফলও হয়।
১৪১৫
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, অন্ধকার হলেই নাকি সুড়ঙ্গের ভিতর বারোগের ‘প্রেতাত্মা’ ঘুরতে দেখা যায়। কখনও সুড়ঙ্গের মুখে কালো ছায়া দেখা যায়, কখনও বা সুড়ঙ্গের ভিতর থেকে কথা বলার শব্দ শোনা যায় বলে দাবি স্থানীয়দের।
১৫১৫
সন্ধ্যার পর সুড়ঙ্গের সামনে দিয়ে নাকি চলাফেরা করতেও ভয় পান স্থানীয়েরা। তবে অনেকে আবার এই ঘটনাকে অসত্য বলেও দাবি করেন। তাঁদের মতে এটি মনগড়া কাহিনি ছাড়া আর কিছুই নয়।