Know all about India’s haunted mansion, the Charleville Mansion in Shimla dgtl
Charleville Mansion
আড়াল থেকে নজরদারি! বাঙালির প্রিয় শৈলশহরের অট্টালিকায় ঘুরে বেড়ায় ব্রিটিশ অফিসারের ‘প্রেত’
১৯১৩ সালের ঘটনা। সেই সময় রেল বোর্ডের সহকারী সচিব পদে ব্রিটিশ সরকারের তরফে ভিক্টর বেইলিকে নিযুক্ত করা হয়। চাকরি সূত্রে শিমলায় পাঠানো হয় ভিক্টরকে। ১৯১৩ সালে সস্ত্রীক শিমলায় চলে যান ভিক্টর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪ ১৬:১৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
পাহাড়প্রেমীদের কাছে অন্যতম প্রিয় শৈলশহর শিমলা। হিমালয়ের কোলে এই পাহাড়ি শহর যেন বাস্তবের রূপকথা। কিন্তু এই শৈলশহরেই রয়েছে একটি ‘ভূতুড়ে’ অট্টালিকা। সন্ধ্যার পর তার সামনে গেলেই নাকি ছায়ামূর্তি দেখতে পান স্থানীয়েরা।
০২১৭
১৯১৩ সালের ঘটনা। সেই সময় রেল বোর্ডের সহকারী সচিব পদে ব্রিটিশ সরকারের তরফে ভিক্টর বেইলিকে নিযুক্ত করা হয়। চাকরি সূত্রে শিমলায় পাঠানো হয় ভিক্টরকে। ১৯১৩ সালে সস্ত্রীক শিমলায় চলে যান ভিক্টর।
০৩১৭
শিমলায় পৌঁছনোর পর কোথায় থাকবেন তা স্থির করতে পারছিলেন না ভিক্টর এবং তাঁর স্ত্রী। শেষ পর্যন্ত শিমলার ঘন জঙ্গলের মধ্যে চার্লভিলে ম্যানসন নামে একটি সুবৃহৎ অট্টালিকা পছন্দ হয় বেইলি দম্পতির।
০৪১৭
খোঁজ নিয়ে বেইলি দম্পতি জানতে পারেন, এই অট্টালিকায় আগে যিনি ভাড়া থাকতেন তিনি অলৌকিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সেই ভয়ে অট্টালিকা ছেড়ে চলে যান তিনি। এই ঘটনা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ায় আর কেউই সেই অট্টালিকায় থাকতে চাননি। তার পর থেকে জঙ্গলের ভিতর এই সুবৃহৎ অট্টালিকার ভাড়াও কমে যায়।
০৫১৭
কম ভাড়া দিয়ে চার্লভিলে ম্যানসনের মতো এত বড় অট্টালিকায় থাকার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি ভিক্টর এবং তাঁর স্ত্রী। পাকাপাকি ভাবে সেখানেই থাকতে শুরু করেন তাঁরা।
০৬১৭
অট্টালিকায় থাকাকালীন নানা ধরনের কাহিনি কানে আসতে থাকে ভিক্টরদের। ভিক্টরদের আগে ওই অট্টালিকায় যিনি থাকতেন তিনি নাকি উপরের ঘর থেকে নানা রকম আওয়াজ শুনতে পেতেন। এক দিন বাইরে থেকে সেই ঘর বন্ধ করে দেন তিনি। পরের দিন সকালে উঠে দেখেন সেই ঘরের লন্ডভন্ড অবস্থা। অথচ ঘরের দরজা-জানলা সমস্তই আটকানো ছিল বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর আর এক মুহূর্তও সেখানে থাকেননি তিনি। অট্টালিকা ছেড়ে চলে যান।
০৭১৭
অট্টালিকা সংক্রান্ত নানা রকমের ‘ভৌতিক’ কাহিনি শুনলেও ভিক্টর এবং তাঁর স্ত্রী কোনও দিন কোনও রকম ‘ব্যাখ্যাহীন’ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হননি। এক বছর দু’জনে শান্তিতে বাস করেছেন সেই অট্টালিকায়। কিন্তু তাঁদের পরিচারিকা এক অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হন।
০৮১৭
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ভিক্টর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজ করতে বাইরে গিয়েছিলেন। বেইলি দম্পতির ফেরার অপেক্ষা করছিলেন তাঁদের পরিচারিকা। ঠিক সেই সময় ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা।
০৯১৭
হঠাৎ অট্টালিকার উপরের তলা থেকে নাকি শব্দ শুনতে পান ওই পরিচারিকা। সঙ্গে সঙ্গে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যান তিনি। একটি কালো ছায়ামূর্তিকে হাঁটাচলা করতে দেখতে পান তিনি। চোখের ভুল ভেবে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যান ওই পরিচারিকা।
১০১৭
অট্টালিকার উপরের তলার ঘরগুলির দরজা বন্ধ ছিল বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি। বন্ধ দরজা ভেদ করেই নাকি কালো ছায়ামূর্তিকে ঘরের ভিতর ঢুকে যেতে দেখেন তিনি। ভয় পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে অট্টালিকার মূল ফটকের বাইরে চলে যান তিনি।
১১১৭
ভিক্টর এবং তাঁর স্ত্রী বাড়ি ফিরলে অলৌকিক ঘটনাটির উল্লেখ করেন তাঁদের পরিচারিকা। কিছু দিন পর সেই অট্টালিকা ছেড়ে চলে যান বেইলি দম্পতি।
১২১৭
চার্লভিলে ম্যানসনে বহু বছর আগে থাকতেন চার্লস প্র্যাট নামে ব্রিটেনের এক অফিসার। অট্টালিকার মধ্যেই নাকি আত্মহত্যা করেন চার্লস। স্থানীয়দের অধিকাংশের দাবি, চার্লসের ‘আত্মা’ এখনও ঘুরে বেড়ায় অট্টালিকার ভিতর।
১৩১৭
চার্লসের মৃত্যুর পর কেউ অট্টালিকায় প্রবেশ করার চেষ্টা করলেই নাকি অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হতেন। স্থানীয়দের দাবি, অট্টালিকার সামনে দিয়ে হেঁটে গেলেই নাকি ঠান্ডা লাগতে শুরু করে। মনে হয়, কেউ একদৃষ্টে আড়াল থেকে সব কিছু দেখছে।
১৪১৭
স্থানীয়দের কারও মতে, সেনাদের পোশাক পরিহিত একটি ছায়ামূর্তিও নাকি অট্টালিকার সামনে দেখতে পেয়েছেন তাঁরা। সাধারণ জনগণের জন্য এই অট্টালিকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ব্রিটেনের সাহিত্যিক রুডইয়ার্ড কিপলিং তাঁর লেখা ‘মাই ওন ট্রু ঘোস্ট স্টোরি’ বইয়ে এই প্রাসাদের কথা উল্লেখও করেছেন।
১৫১৭
স্থানীয়দের অধিকাংশের দাবি, ভিক্টর ছেড়ে যাওয়ার পর অট্টালিকায় এক মহিলা থাকতে শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর এক ভারতীয় পরিবারের কাছে অট্টালিকাটি বিক্রি করে দেন ওই মহিলা।
১৬১৭
বর্তমানে চার্লভিলে ম্যানসনের মালিকানা রয়েছে এক ভারতীয়ের কাছে। তিনি অট্টালিকার প্রতিটি ঘর নতুন করে সাজিয়ে তুলেছেন। তবুও এখনও নাকি এই অট্টালিকা ‘ভূতুড়ে’।
১৭১৭
অট্টালিকার সামনে দিয়ে হাঁটাচলা করলে এখনও ছায়ামূর্তি দেখতে পান বলে দাবি করেছেন স্থানীয়দের একাংশ। অট্টালিকার ভিতর থেকে নাকি এখনও নানা ধরনের শব্দ ভেসে আসে। তাই সন্ধ্যার পর এই অট্টালিকা এড়িয়ে চলেন স্থানীয়েরা। তবে এই ঘটনার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়দেরই একাংশ। এ সবই লোকমুখে ছড়ানো কাহিনি বলে দাবি করেন তাঁরা।