Julius Kivimaki start his hacking journey from 13-Year-Old, now he become Europe's most wanted hacker dgtl
Cyber Crime
১৩ বছরে হ্যাকিং শুরু, ২৪ বছরে ইউরোপের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’! অদ্ভুত কায়দায় প্রতারণা করতেন জুলিয়াস
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৪ ১০:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ছোট থেকেই কম্পিউটার-মোবাইলের মতো ডিভাইসগুলির প্রতি তাঁর আসক্তি নিয়ে চিন্তিত ছিল পরিবার। ইন্টারনেট দুনিয়ায় তাঁর অবাধ আনাগোনাও ছিল চিন্তার অন্যতম কারণ। সেই আসক্তি ধীরে ধীরে তাঁকে ঠেলে দেয় অপরাধ জগতের দিকে। ইন্টারনেটের কালো দুনিয়ায় হাত পাকিয়ে ফেলেন ছোটবেলাতেই। সেই হ্যাকারই ইউরোপের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধীদের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছেন।
০২১৬
জুলিয়াস কিভিমাকি। ফিনল্যান্ডের বাসিন্দা এই জুলিয়াসকে সম্প্রতি কারাদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মানুষের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা নিতেন জুলিয়াস।
০৩১৬
জুলিয়াসের নজরে ছিলেন সাইকোথেরাপি নিতে আসা রোগীরা। অভিযোগ, থেরাপি নেওয়া প্রায় ৩৩ হাজার মানুষের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে ব্ল্যাকমেল করেছেন জুলিয়াস।
০৪১৬
১৩ বছর বয়সে হ্যাকিংয়ে হাতেখড়ি জুলিয়াসের। তার পর টানা ১১ বছর ধরে সাইবারথেরাপিদের নিশানা করে আসছেন তিনি। সাইবার অপরাধের জগতে জুলিয়াসের উত্থান ধূমকেতুর মতো।
০৫১৬
৬ মে ফিনল্যান্ডের ওয়েস্টার্ন ইউশিমার জেলা আদালত জুলিয়াসকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডের সাজা শোনায়। আদালত জানায়, এমন অপরাধ বিরল। দোষীকে ছ’বছর তিন মাসের কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে।
০৬১৬
সংবাদমাধ্যম বিবিসি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত জুলিয়াসের প্রতারণার শিকার হয়েছেন ৩৩ হাজার জন। তাঁদের মধ্যে হয় কেউ থেরাপি নিচ্ছেন কিংবা কারও থেরাপি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। থেরাপির সময় রোগীরা যে সব ব্যক্তিগত তথ্য ভাগ করে নিতেন, সেটাই ইন্টারনেট থেকে চুরি করতেন জুলিয়াস।
০৭১৬
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়, হ্যাকিং জগতে জুলিয়াস খুবই পরিচিত নাম। ফিনল্যান্ডের বাসিন্দা হলেও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবাধ বিচরণ ছিল জুলিয়াসের।
০৮১৬
ফ্রান্স থেকে জুলিয়াসকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে তাঁকে ফিনল্যান্ডে পাঠানো হয়। গত বছরের অক্টোবরে ওয়েস্টার্ন ইউশিমার জেলা আদালতে জুলিয়াসের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। সোমবার সেই মামলায় রায় ঘোষণা করে আদালত।
০৯১৬
ফিনল্যান্ডের একটি ব্যক্তিগত সাইবারথেরাপি পরিষেবা হল ‘ভাস্তামো’। জুলিয়াস সেই পরিষেবার উপরই সাইবার হামলা চালান। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে ‘ভাস্তামো’ হ্যাক হয়। তার নেপথ্যে জুলিয়াস ছিলেন বলে জানতে পারেন গোয়েন্দারা।
১০১৬
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে হ্যাক করলেও ২০২০ সালে ‘ভাস্তামো’র কাছ থেকে টাকা চান জুলিয়াস। দাবি করা অর্থের পরিমাণ ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা।
১১১৬
জুলিয়াসের দাবি ছিল, বিটকয়েনের মাধ্যমে টাকা প্রদান করার। কিন্তু ‘ভাস্তামো’ সেই টাকা দিতে অস্বীকার করে। তার পরই প্রতারণার নতুন কৌশল অবলম্বন করেন জুলিয়াস।
১২১৬
যে সব ভুক্তভোগী থেরাপি নিতে এসেছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা ধরে ধরে মেল পাঠাতে শুরু করেন জুলিয়াস। দাবি করা হয়, যদি টাকা না দেন কেউ তবে তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে দেওয়া হবে। প্রত্যেকের কাছে ২০০ ইউরো দাবি করা হয়েছিল। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার টাকার বেশি।
১৩১৬
বছর তিনেক আগে এই প্রতারণা চক্রকে ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় ইউরোপে। আত্মহত্যার ঘটনারও খবর মেলে। পুলিশ তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজতে শুরু করে। অবশেষে ফ্রান্সে সন্ধান পাওয়া যায় জুলিয়াসের।
১৪১৬
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ জুলিয়াসের গোপন ডেরায় হানা দেয়। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাঁকে ফিনল্যান্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
১৫১৬
যদিও আদালতে বিচার চলাকালীন জুলিয়াস বার বার দাবি করেছেন তিনি এমন কোনও অপরাধের সঙ্গে তিনি ষুক্ত নন। তবে বিচারক তাঁর দাবি মানতে নারাজ ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, ‘‘শুনানি চলাকালীন আদালতে পেশ করা বিভিন্ন নথি থেকে স্পষ্ট এই অপরাধের সঙ্গে অভিযুক্তের যোগ রয়েছে। তিনিই এই অপরাধ সংগঠিত করেছেন।’’
১৬১৬
জুলিয়াসের কীর্তি নিয়ে শুধু ইউরোপ নয়, গোটা বিশ্বই ভাবিত। কী ভাবে জুলিয়াস ১১ বছর ধরে এই অপরাধ করে আসছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শৈশবেই জুলিয়াসের অপরাধ জগতে পা দেওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই।