Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
infertility

পুরুষের বন্ধ্যত্ব ঠিক হত ছাগলের অণ্ডকোষ লাগিয়ে! গোটা আমেরিকাকে বোকা বানান এই চিকিৎসক

‘পুরুষ’ তৈরি করতে বন্ধ্যা পুরুষদের অণ্ডকোষের থলিতে ছাগলের অণ্ডকোষ পুরে দিতেন ব্রিঙ্কলি। তাঁর দাবি ছিল, এটিই ছিল বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের অমোঘ উপায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২ ১০:৩৭
Share: Save:
০১ ২০
চিকিৎসক জন ব্রিঙ্কলি। কিন্তু তাঁকে ঠিক চিকিৎসক বলা যায় কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। কারণ ডাক্তারির কোনও ডিগ্রি তাঁর কাছে ছিল না, তবুও রমরমিয়ে বহু বছর চিকিৎসার ‘ব্যবসা’ চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। অনেক অস্ত্রোপচারও করেছেন বৈধতা না থাকা সত্ত্বেও। অনেকের মতো তিনি পৃথিবীর অন্যতম ‘কন আর্টিস্ট’ অর্থাৎ প্রতারক। সারা বিশ্ব তাঁকে চিনেছিল ‘গোট গ্ল্যান্ড ডক্টর’ নামে।

চিকিৎসক জন ব্রিঙ্কলি। কিন্তু তাঁকে ঠিক চিকিৎসক বলা যায় কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। কারণ ডাক্তারির কোনও ডিগ্রি তাঁর কাছে ছিল না, তবুও রমরমিয়ে বহু বছর চিকিৎসার ‘ব্যবসা’ চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। অনেক অস্ত্রোপচারও করেছেন বৈধতা না থাকা সত্ত্বেও। অনেকের মতো তিনি পৃথিবীর অন্যতম ‘কন আর্টিস্ট’ অর্থাৎ প্রতারক। সারা বিশ্ব তাঁকে চিনেছিল ‘গোট গ্ল্যান্ড ডক্টর’ নামে।

০২ ২০
কী ভাবে পসার জমিয়েছিলেন ব্রিঙ্কলি? পুরুষদের এমন এক সমস্যা তিনি প্রতিকার করবেন বলে দাবি করেছিলন, যে সমস্যা চিরাচরিত। বন্ধ্যত্ব। চিকিৎসা করে পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের দাবি করেছিলেন তিনি। আর তার থেকেই তাঁর যত যশ, যত প্রতিপত্তি।

কী ভাবে পসার জমিয়েছিলেন ব্রিঙ্কলি? পুরুষদের এমন এক সমস্যা তিনি প্রতিকার করবেন বলে দাবি করেছিলন, যে সমস্যা চিরাচরিত। বন্ধ্যত্ব। চিকিৎসা করে পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের দাবি করেছিলেন তিনি। আর তার থেকেই তাঁর যত যশ, যত প্রতিপত্তি।

০৩ ২০
কোয়াক চিকিৎসক ব্রিঙ্কলি ১৯২০ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা চালিয়ে যান।

কোয়াক চিকিৎসক ব্রিঙ্কলি ১৯২০ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা চালিয়ে যান।

০৪ ২০
কিন্তু যে পদ্ধতিতে ব্রিঙ্কলি বন্ধ্যত্ব নিরাময় করতেন, তা ছিল আজব এবং সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। আর তাঁর এই পদ্ধতির জন্যই তিনি দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন।

কিন্তু যে পদ্ধতিতে ব্রিঙ্কলি বন্ধ্যত্ব নিরাময় করতেন, তা ছিল আজব এবং সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। আর তাঁর এই পদ্ধতির জন্যই তিনি দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন।

০৫ ২০
‘পুরুষ’ তৈরি করতে বন্ধ্যা পুরুষদের অণ্ডকোষের থলিতে ছাগলের অণ্ডকোষ পুরে দিতেন ব্রিঙ্কলি। তাঁর দাবি ছিল, এটি বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের অমোঘ উপায়।

‘পুরুষ’ তৈরি করতে বন্ধ্যা পুরুষদের অণ্ডকোষের থলিতে ছাগলের অণ্ডকোষ পুরে দিতেন ব্রিঙ্কলি। তাঁর দাবি ছিল, এটি বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের অমোঘ উপায়।

০৬ ২০
তবে অস্ত্রোপচার করার সময় ছাগলের অণ্ডকোষগুলি মানুষের অণ্ডকোষের থলিতে পুরে তা কোনও গ্রন্থির সঙ্গে তিনি জুড়তেন না। কেবল থলিতে ছাগলের অণ্ডকোষগুলি ভরে সেই জায়গা সেলাই করে দিতেন।

তবে অস্ত্রোপচার করার সময় ছাগলের অণ্ডকোষগুলি মানুষের অণ্ডকোষের থলিতে পুরে তা কোনও গ্রন্থির সঙ্গে তিনি জুড়তেন না। কেবল থলিতে ছাগলের অণ্ডকোষগুলি ভরে সেই জায়গা সেলাই করে দিতেন।

০৭ ২০
যে সব পুরুষের বীর্য শক্তিশালী ছিল না বা যাঁদের শুক্রাণু সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য উপযোগী ছিল না, তাঁরা দলে দলে চিকিৎসা করাতে ব্রিঙ্কলির দ্বারস্থ হতেন।

যে সব পুরুষের বীর্য শক্তিশালী ছিল না বা যাঁদের শুক্রাণু সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য উপযোগী ছিল না, তাঁরা দলে দলে চিকিৎসা করাতে ব্রিঙ্কলির দ্বারস্থ হতেন।

০৮ ২০
১৯১৭ থেকে ১৯৩০-এর মধ্যে পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিরাময় করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন তিনি। নিজের নামে একাধিক হাসপাতালও তিনি চালু করেছিলেন।

১৯১৭ থেকে ১৯৩০-এর মধ্যে পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিরাময় করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন তিনি। নিজের নামে একাধিক হাসপাতালও তিনি চালু করেছিলেন।

০৯ ২০
এর মধ্যেই তিনি দাবি করেন, ছাগলের অণ্ডকোষ প্রতিস্থাপন করার পর এক জনের সন্তান হয়েছে। ওই বাচ্চার সঙ্গে ছবি তুলে তিনি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দেন।

এর মধ্যেই তিনি দাবি করেন, ছাগলের অণ্ডকোষ প্রতিস্থাপন করার পর এক জনের সন্তান হয়েছে। ওই বাচ্চার সঙ্গে ছবি তুলে তিনি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দেন।

১০ ২০
এর পর দেশে-বিদেশে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ওই বাচ্চাটির আদপেও ওই কারণে জন্ম হয়নি। পুরো বিষয়টিই মিথ্যা ছিল।

এর পর দেশে-বিদেশে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ওই বাচ্চাটির আদপেও ওই কারণে জন্ম হয়নি। পুরো বিষয়টিই মিথ্যা ছিল।

১১ ২০
ব্রঙ্কলি এ-ও প্রচার করেছিলেন যে, ছাগলের অণ্ডকোষ দিয়ে ডিমেনশিয়া থেকে এমফিসেমার মতো ২৭টি জটিল রোগ নিরাময় করা সম্ভব। তাই সব ক্ষেত্রেই ছাগলের অণ্ডকোষ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন ব্রঙ্কলি।

ব্রঙ্কলি এ-ও প্রচার করেছিলেন যে, ছাগলের অণ্ডকোষ দিয়ে ডিমেনশিয়া থেকে এমফিসেমার মতো ২৭টি জটিল রোগ নিরাময় করা সম্ভব। তাই সব ক্ষেত্রেই ছাগলের অণ্ডকোষ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন ব্রঙ্কলি।

১২ ২০
নিজের ধারণা প্রচারের জন্য আমেরিকার কানসাসে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন একটি রেডিয়ো স্টেশন চালু করেন ব্রঙ্কলি। এই রেডিয়ো স্টেশনের নাম ছিল ‘কেএফকেবি’। এই রেডিয়ো স্টেশনের মাধ্যমে বিনোদনের ছলে সারা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। এর ফলে আরও বাড়তে থাকে তাঁর পসার।

নিজের ধারণা প্রচারের জন্য আমেরিকার কানসাসে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন একটি রেডিয়ো স্টেশন চালু করেন ব্রঙ্কলি। এই রেডিয়ো স্টেশনের নাম ছিল ‘কেএফকেবি’। এই রেডিয়ো স্টেশনের মাধ্যমে বিনোদনের ছলে সারা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। এর ফলে আরও বাড়তে থাকে তাঁর পসার।

১৩ ২০
প্রচারের রমরমার কারণে ব্রঙ্কলি খুব শীঘ্রই ‘আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমএ)’ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ব্রঙ্কলির চিকিৎসা পদ্ধতির বিষয়ে জানতে তাঁর ক্লিনিকে গুপ্তচর পাঠায় এএমএ।

প্রচারের রমরমার কারণে ব্রঙ্কলি খুব শীঘ্রই ‘আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমএ)’ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ব্রঙ্কলির চিকিৎসা পদ্ধতির বিষয়ে জানতে তাঁর ক্লিনিকে গুপ্তচর পাঠায় এএমএ।

১৪ ২০
ওই গুপ্তচর দেখেন ব্রঙ্কলি এক মহিলাকে টিউমার নিরাময়ের ওষুধ হিসাবে ছাগলের অণ্ডকোষ দিচ্ছেন। এর পরই ব্রঙ্কলিকে নিয়ে খোঁজখবর করতে শুরু করে এএমএ।

ওই গুপ্তচর দেখেন ব্রঙ্কলি এক মহিলাকে টিউমার নিরাময়ের ওষুধ হিসাবে ছাগলের অণ্ডকোষ দিচ্ছেন। এর পরই ব্রঙ্কলিকে নিয়ে খোঁজখবর করতে শুরু করে এএমএ।

১৫ ২০
এএমএ দেখে, ব্রঙ্কলির আসলে চিকিৎসক হওয়ার কোনও প্রশিক্ষণ বা ডিগ্রি নেই। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

এএমএ দেখে, ব্রঙ্কলির আসলে চিকিৎসক হওয়ার কোনও প্রশিক্ষণ বা ডিগ্রি নেই। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

১৬ ২০
আরও খোঁজ লাগিয়ে দেখা যায়, ছাগলের অণ্ডকোষ লাগিয়ে সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা, অনেক রোগীই এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণে ভুগছিলেন। মারাও গিয়েছিলেন অনেকে।

আরও খোঁজ লাগিয়ে দেখা যায়, ছাগলের অণ্ডকোষ লাগিয়ে সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা, অনেক রোগীই এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণে ভুগছিলেন। মারাও গিয়েছিলেন অনেকে।

১৭ ২০
তদন্ত চালিয়ে দেখা যায় ১৯৩০ থেকে ১৯৪১ সালের মধ্যে ব্রঙ্কলির চিকিৎসায় ১২ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এর পরই একাধিক মামলা করা হয় ব্রঙ্কলির বিরুদ্ধে।

তদন্ত চালিয়ে দেখা যায় ১৯৩০ থেকে ১৯৪১ সালের মধ্যে ব্রঙ্কলির চিকিৎসায় ১২ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এর পরই একাধিক মামলা করা হয় ব্রঙ্কলির বিরুদ্ধে।

১৮ ২০
এত কিছুর পরেও আমেরিকার একাংশ ব্রঙ্কলির চিকিৎসা পদ্ধতির পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন।

এত কিছুর পরেও আমেরিকার একাংশ ব্রঙ্কলির চিকিৎসা পদ্ধতির পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন।

১৯ ২০
ব্রঙ্কলির চিকিৎসা করার এবং রেডিয়ো স্টেশনের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। তাঁর বহু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

ব্রঙ্কলির চিকিৎসা করার এবং রেডিয়ো স্টেশনের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। তাঁর বহু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

২০ ২০
মৃত্যুর আগে একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগেছিলেন ব্রঙ্কলি। তিনি তিন বার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। বাদ যায় একটি পা-ও। ১৯৪২ সালের ২৬ মে টেক্সাসের সান আন্তোনিওতে তিনি মারা যান। তবে নিজের চিকিৎসায় কিন্তু অণ্ডকোষের ব্যবহার করেননি তিনি।

মৃত্যুর আগে একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগেছিলেন ব্রঙ্কলি। তিনি তিন বার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। বাদ যায় একটি পা-ও। ১৯৪২ সালের ২৬ মে টেক্সাসের সান আন্তোনিওতে তিনি মারা যান। তবে নিজের চিকিৎসায় কিন্তু অণ্ডকোষের ব্যবহার করেননি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy