John Goodenough, who won Nobel Prize for chemistry in 2019, will be remembered for his contributions to the development of the lithium-ion battery dgtl
মোবাইল, বৈদ্যুতিক গাড়ির ‘হৃৎপিণ্ড’ আবিষ্কার করে ৯৭ বছরে নোবেল! ১০১-এ থামল বিজ্ঞানীর জীবন
আধুনিক জীবনযাপনে প্রযুক্তির ব্যবহারে ‘বৈপ্লবিক’ বদল ঘটিয়েছে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। যার আবিষ্কারে সম্মিলিত প্রয়াস রয়েছে তিন বিজ্ঞানীর। তাঁদেরই এক জন হলেন জন ব্যানিস্টার গুডএনাফ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ১৫:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ ছাড়া আজকাল অনেকেরই জীবন অচল। সেগুলি আবার অচল হয়ে যায় ব্যাটারিহীন হলে। আধুনিক জীবনযাপনে প্রযুক্তির ব্যবহারে ‘বৈপ্লবিক’ বদল ঘটিয়েছে এ ধরনের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। যার আবিষ্কারে সম্মিলিত প্রয়াস রয়েছে তিন বিজ্ঞানীর। তাঁদেরই এক জন হলেন জন ব্যানিস্টার গুডএনাফ।
০২১৮
জীবনের ইনিংসে আগেই শতরান করেছিলেন তিনি। তবে ১০১ করার ঠিক এক মাস আগে রবিবার, ২৫ জুন প্রয়াত হলেন গুডএনাফ। টেক্সাসের অস্টিনে এক বৃদ্ধাশ্রমে মৃত্যু হয় তাঁর। আমেরিকার টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এ খবর জানানো হয়েছে।
০৩১৮
সদ্যপ্রয়াত আমেরিকার এই বিজ্ঞানীর দখলে একটি ‘রেকর্ড’ও রয়েছে। ৯৭ বছর বয়সে সবচেয়ে বেশি বয়সি হিসাবে নোবেল পেয়েছিলেন তিনি।
০৪১৮
নোবেল পদক হাতে পেয়ে রসিকতা করে বলেছিলেন, ‘‘৯৭ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকুন। আপনিও অনেক কিছু করতে পারবেন।’’ সেই সঙ্গে যোগ করেছিলেন, ‘‘ভাগ্যিস আমায় ৬৫ বছরে অবসর নিতে হয়নি!’’ বস্তুত, ৯০ পার করেও অধ্যাপনায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
০৫১৮
২০১৯ সালের রসায়নে নোবেলপ্রাপ্তিতে গুডএনাফের সঙ্গী ছিলেন ব্রিটেনে জন্মানো আমেরিকার আরও এক বিজ্ঞানী এম স্ট্যানসি হুইটিংহ্যাম এবং জাপানের আকিরা ইয়োশিনো। তবে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরি এবং তার গঠনে প্রযুক্তিগত উন্নতির ক্ষেত্রে অন্যতম পথিকৃৎ হিসাবে তাঁর নাম স্মরণীয়।
০৬১৮
ব্যক্তিজীবনেই লম্বা ইনিংস খেলেছেন গুডএনাফ। স্ত্রী আইরিন ওয়াইজ়ম্যানের মৃত্যু হয়েছিল ২০১৬ সালে। সেই সঙ্গে ৭০ বছরের দাম্পত্যের ইতি পড়েছিল। দম্পতির কোনও সন্তান ছিল না।
০৭১৮
আমজনতার কাছে বিশেষ পরিচিত না হলেও প্রযুক্তির দুনিয়ার আমূল পরিবর্তন এনেছে গুডএনাফের গবেষণা। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, বৈদ্যুতিন গাড়ি, পেসমেকার— তারহীন ‘পোর্টেবল রিচার্জ’-এর ক্ষেত্রে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির যাবতীয় ব্যবহারে তাঁর অবদান রয়েছে।
০৮১৮
নোবেল জয়ের পর হুইটিংহ্যাম এক বার বলেছিলেন, এ আবিষ্কার যে দুনিয়াকে আমূল বদলে দেবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি। এ মন্তব্যে সায় মেলান গুডএনাফ।
০৯১৮
সে সময় গুডএনাফ বলেছিলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম, এটি (লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি) একটা বেশ কাজের জিনিস হবে। তবে স্বপ্নেও ভাবিনি যে বৈদ্যুতিন জগৎ থেকে সব কিছুতে এটি বিপ্লব এনে দেবে।’’
১০১৮
সত্তরের দশকে লিথিয়ামের মতো হালকা ধাতু নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন হুইটিংহ্যাম। সে সময় এটির মাধ্যমে যে ব্যাটারি তৈরি করেন, তাতে ২ ভোল্টের শক্তি মিলত। আশির দশকে সেই ব্যাটারির গঠনে আরও মাজাঘষা করেছিলেন গুডএনাফ।
১১১৮
ব্যাটারির ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন গুডএনাফ। কোবাল্ট অক্সাইড এবং ক্যাথোড ব্যবহার করে এটি ৪ ভোল্টের ক্ষমতাসম্পন্ন করে তোলেন। তবে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য বিশুদ্ধ লিথিয়ামের ওই ব্যাটারি বিপজ্জনক হতে পারত।
১২১৮
ইয়োশিনোর গবেষণায় দু’জনের তৈরি ব্যাটারি আরও উন্নত হয়েছিল। বিশুদ্ধ লিথিয়ামের বদলে ব্যাটারিতে লিথিয়াম-আয়নের সাহায্যে সুরক্ষিত পথ বেছে নেন তিনি। তিন জনের প্রচেষ্টায় তৈরি হল হালকা, দ্রুত গতিতে চার্জ দেওয়া যায় এমন ব্যাটারি। ১৯৯১ সালে সেটি বাজারে এসেছিল।
১৩১৮
গুডএনাফের প্রয়াণে তাঁর ব্যক্তিজীবনও শিরোনামে এসেছে। ১৯২২ সালের ২৫ জুলাই জার্মানির জেনায় জন্ম তাঁর। তবে ছোটবেলা কেটেছে আমেরিকার। সেখানেই পড়াশোনা।
১৪১৮
তাঁর বাবা আরউইন র্যামসডেল গুডএনাফ ছিলেন হার্ভার্ড ডিভিনিটি স্কুলের পিএচইডি-র ডিগ্রিধারী। পরে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেন। সংসারের কাজে ব্যস্ত থাকতেন মা।
১৫১৮
স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আবহবিদ হিসাবে আমেরিকার সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন গুডএনাফ। যুদ্ধের পর শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। ১৯৫২ সালে পদার্থবিদ্যায় পিএচইডি লাভ করেন।
১৬১৮
শিকাগোতে গবেষণা করার সময় হবু জীবনসঙ্গী আইরিনের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল গুডএনাফের। সে সময় ইতিহাসের ছাত্রী ছিলেন এই কানাডীয় কন্যা। ১৯৫১ সালে একসঙ্গে পথচলা শুরু তাঁদের।
১৭১৮
লিথিয়াম ব্যাটারি নিয়ে গবেষণার সময় ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনঅর্গানিক কেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরির প্রধান ছিলেন গুডএনাফ। সত্তরের দশকে সেখানে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। ১৮৮৬ সালে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। নোবেলপ্রাপ্তির সময় সেখানেই কর্মরত ছিলেন।
১৮১৮
গবেষণার পাশাপাশি লেখক এবং সহ-লেখক হিসাবে সাতটি বই লেখেন গুডএনাফ। পাশাপাশি, অসংখ্য পত্রপত্রিকায় গবেষণামূলক লেখালেখিতে মেতেছিলেন তিনি।