Jatin Paranjpe, a former India cricketer who built own business career after injury setback dgtl
Jatin Paranjpe
ব্যাট হাতে হারান পাকিস্তানকে, চোটে কেরিয়ার শেষ হওয়া সচিনের সতীর্থ এখন নামী ব্যবসায়ী
প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তিনি যে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করতে পারেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর কেরিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই। তবে পর পর চোট তাঁকে ভারতীয় দল থেকে ছিটকে দেয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩ ০৮:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
টিম ইন্ডিয়ার হয়ে টেস্ট খেলেননি। জাতীয় দলের জার্সিতে মোটে ৪টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছিলেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তিনি যে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করতে পারেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কেরিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই। তার পর লাগাতার চোট তাঁকে ভারতীয় দল থেকে ছিটকে দেয়। চোটের জেরে আন্তর্জাতিক কেরিয়ার পাখা না মেললেও আজ ৭২ কোটি টাকা অর্থমূল্যের সংস্থার মালিক যতীন পরাঞ্জপে।
০২২০
আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে আবার প্রমাণের সুযোগ না পেলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে জাত চিনিয়েছিলেন মুম্বইয়ের যতীন। মিডল অর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফস্পিনও ভালই করতেন।
০৩২০
মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জিতে অভিষেক ঘটেছিল ১৯৯১-’৯২ মরসুমে। ৬২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৩,৯৬৪ রান করেছেন। রয়েছে ১টি দ্বিশতরানও। ২১৮ রানের সেই ইনিংসই যতীনের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
০৪২০
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩টি শতরানের মালিক যতীনের গড় ছিল ৪৬.০৯। সঙ্গে ১৫টি অর্ধশতরান। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটের ৫ দিনের ম্যাচগুলিতে হাত ঘোরানোর বিশেষ সুযোগ পাননি যতীন।
০৫২০
ঘরোয়া ক্রিকেটের এক দিনের ম্যাচগুলিতে অবশ্য ব্যাটের পাশাপাশি অফস্পিনেও নিজেকে বার বার প্রমাণ করেছেন সচিন-সৌরভদের এই সতীর্থ। ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটে যতীনের ব্যাট থেকে বেরিয়েছে ১,০৪০ রান। ৪৪ ম্যাচে তাঁর সর্বোচ্চ অপরাজিত ১১৬। রয়েছে ২টি শতরানের সঙ্গে ৩টি অর্ধশতরানও। গড় ৩৫.৬৬।
০৬২০
যতীনের বাবা বাসু পঞ্জারপেও ক্রিকেটার ছিলেন। ষাটের দশকে রঞ্জিতে চুটিয়ে খেলেছিলেন তিনি। তবে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল। অবসরের পরে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে কোচিং করাতেন বাসু। কোচ হিসাবে সুনীল গাওস্কর, দিলীপ বেঙ্গসরকর থেকে সচিন তেন্ডুলকরের জীবনে ক্রিকেটীয় প্রভাব ফেলেছিলেন তিনি।
০৭২০
রঞ্জিতে অভিষেকের বছর সাতেক পরে ভারতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন যতীন। তার আগে ১৯৯৭-’৯৮ মরসুমে ৬০৬ রানের পাহাড় গড়েছিলেন তিনি।
০৮২০
ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফরম্যান্সের পর আর মুখ ফেরাতে পারেননি জাতীয় দলের নির্বাচকেরা। ১৯৯৮ সালে কানাডার টরন্টোতে সাহারা কাপের দলে নির্বাচিত হয়েছিলেন যতীন।
০৯২০
এক দিনের সেই টুর্নামেন্টে টিম ইন্ডিয়ায় ডাক পেয়েই ২২ গজে অভিষেক হয়েছিল যতীনের। দ্বিতীয় ম্যাচেই নজর কেড়েছিলেন তিনি। ব্যাট হাতে দলকে জিততে সাহায্য করেন তিনি। যদিও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচ অমর হয়ে আছে ব্যাটে, বলে সৌরভের পারফরম্যান্সের জন্য।
১০২০
ওই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে মইন খানের পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ১৮৯ রান। জেতার জন্য ১৯০ রানের লক্ষ্যে নেমেছিল মহম্মদ আজ়হারউদ্দিনের ভারত।
১১২০
আকিব জাভেদ, আজ়হার মেহমুদদের মতো পাক জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে ভালই শুরু করেছিল ভারত। তবে ব্যক্তিগত ৫৪ রানের মাথায় চোটের জন্য অবসর নিতে বাধ্য হন সৌরভ।
১২২০
সৌরভের ওপেনিং সঙ্গী ছিলেন নভজ্যোত সিংহ সিধু। ৪৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে ফিরেছিলেন তিনি। একে একে আজহার (২৭), রাহুল দ্রাবিড় (৪) এবং হৃষীকেশ কানিতকর (১৭) রানে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন।
১৩২০
৬ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে আনকোরা যতীন। সে ম্যাচে ২৩ বলে অপরাজিত ২৩ রান করে পাকিস্তানের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। ২টি চারের সঙ্গে ১টি বিশাল ছয়ও ছিল তাঁর সংগ্রহে।
১৪২০
পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল ভারত। তার পর ৪টি ম্যাচেই টানা হারের মুখে দেখতে হয়েছিল। ওই সিরিজ়ে যতীন আরও ২টি ম্যাচে খেলেছিলেন। তবে তার একটিতে গোড়ালির চোট পেয়ে ফিরতে বাধ্য হন তিনি। পরে বাংলাদেশ এবং কেনিয়ার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সিরিজ়ে আর এক বার সুযোগ পেলেও প্রথম একাদশে ফিরতে পারেননি যতীন।
১৫২০
পরের মরসুমে অর্থাৎ ১৯৯৯-২০০০ সালের রঞ্জিতে যেন জ্বলে উঠেছিলেন যতীন। ৫০.১৫ গড়ে ৬৫২ রান করেছিলেন তিনি। তার মধ্যে ছিল ১৮৫ রানের ইনিংসও। তবে তাতেও টলেননি নির্বাচকেরা।
১৬২০
ভারতীয় দল আর ডাক না পেলেও ক্রিকেটের মাঠের বাইরে নিজের কেরিয়ার গড়তে শুরু করেন যতীন। তাতেও জড়িয়েছিল ক্রিকেট।
১৭২০
বাঁহাতি স্টাইলিশ ব্যাটারের সামনে অন্য সুযোগ এসে পড়ে। ‘অস্ট্রেলিয়ান স্পোর্টিং ফ্রন্টিয়ার্স’ নামে এক স্পোর্টস ম্যানেজ়মেন্ট সংস্থার ডাকে তাতে যোগ দেন যতীন। সেখানেই বছর দু’য়েক এই ক্ষেত্রের খুঁটিনাটি শিখতে শুরু করেন।
১৮২০
অস্ট্রেলীয় সংস্থা ছেড়ে এর পর নিজের ব্যবসা শুরু করেন যতীন। ‘স্পোর্টসওয়ান ইন্ডিয়া’ নামে একটি ইভেন্ট এবং মার্কেটিং সংস্থার মালিকের জীবন তত দিনে নতুন মোড় নিয়েছিল।
১৯২০
‘নাইকে’র মতো বহুজাতিক সংস্থাও যতীনের ব্যবসায়িক বুদ্ধি যাচাই করেছিল। ওই সংস্থার হয়ে তাদের ইউরোপীয় ফুটবলের ক্ষেত্রে প্রবেশ ঘটে তাঁর। সে জন্য ৩ বছর নেদারল্যান্ডসেও বসবাস করতে হয়েছিল যতীনকে। ২০১৭ সালে আরও একটি সংস্থা খোলেন যতীন। এ বার ক্রিকেট, ফুটবল ছাপিয়ে ব্যাডমিন্টন এবং বাস্কেটবলের মতো খেলায় ব্যবসার সুযোগ খুঁজতে শুরু করেছিলেন তিনি।
২০২০
সংবাদমাধ্যমের দাবি, আজ ৭২ কোটির ব্যবসা যতীনের সংস্থার। সেই সঙ্গে অবশ্যই চুটিয়ে সংসারও করছেন তিনি। বলিউডের এককালের নায়িকা সোনালি বেন্দ্রের বোন গান্ধলীকে বিয়ে করেছেন। ছেলেমেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে ঘর এবং ব্যবসা, দুই-ই সামলাচ্ছেন যতীন।