ISRO’s rubidium atomic clock will determine smartphone & computers of India dgtl
ISRO’s rubidium atomic clock
ভারতের কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের সময় ঠিক করবে ইসরোর পরমাণু ঘড়ি! কেন পাঠানো হল মহাকাশে?
কার্গিল যুদ্ধের সময় আমেরিকার সরকার ভারতকে ‘জিপিএস’ বা ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম’ ব্যবহার করতে দিতে অস্বীকার করার পরে এই পরমাণু ঘড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ ০৮:০২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
খুব শীঘ্রই ভারতীয় কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের সময় নিয়ন্ত্রণ করবে ইসরোর ‘রুবিডিয়াম পারমাণবিক ঘড়ি’! অর্থাৎ, ‘রুবিডিয়াম পারমাণবিক ঘড়ি’র সময় অনুযায়ী আপনা-আপনি ভারতীয় কম্পিউটারগুলির সময় নির্ধারিত হবে।
০২১৮
গত বছর একটি ২জি নেভিগেশন উপগ্রহের মাধ্যমে নিজেদের তৈরি ‘রুবিডিয়াম পারমাণবিক ঘড়ি’ মহাকাশে পাঠিয়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
০৩১৮
বর্তমানে ভারতীয় কম্পিউটারগুলির সময় আমেরিকার নেটওয়ার্ক টাইম প্রোটোকলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।
০৪১৮
এর আগে মাত্র চারটি মহাকাশ সংস্থার কাছে নিজেদের তৈরি পরমাণু ঘড়ি ছিল। ইসরো সেই তালিকায় পঞ্চম।
০৫১৮
ভারতের আঞ্চলিক দিকনির্ণায়ক উপগ্রহ ব্যবস্থা ‘ইন্ডিয়ান রিজিয়োনাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (আইআরএনএসএস)’ বা ‘নাবিক’-এ ব্যবহারের জন্য ওই পরমাণু তৈরি করেছে ইসরো।
০৬১৮
কার্গিল যুদ্ধের সময় আমেরিকার সরকার ভারতকে ‘জিপিএস’ বা ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম’ ব্যবহার করতে দিতে অস্বীকার করার পরে এই পরমাণু ঘড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
০৭১৮
২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ‘নাবিক’-এর অংশ হিসাবে ন’টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। আমেরিকান জিপিএস ব্যবস্থার বিকল্প হিসাবে ‘নাবিক’-এর সূচনা করেছিল ভারত। ১৫ বছর আগে ১,৪২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল।
০৮১৮
ভারতীয় উপমহাদেশের স্থলভাগ এবং ভারতীয় উপকূল ছাড়িয়ে ১,৫০০ কিলোমিটার জলভাগের অবস্থান নির্ধারণ করবে ‘নাবিক’।
০৯১৮
২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ‘নাবিক’ প্রকল্পের আওতায় যে ন’টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, তার প্রত্যেকটিতে একটি করে রুবিডিয়াম ঘড়ি রয়েছে। তবে সেগুলির প্রত্যেকটিই আমদানি করা।
১০১৮
দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি রুবিডিয়াম ঘড়িটি গত বছরের মে মাসে দশম এবং সর্বশেষ দিকনির্ণায়ক উপগ্রহের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে।
১১১৮
কিন্তু কী এই পরমাণু ঘড়ি? পরমাণু ঘড়ি হল এমন একটি ঘড়ি, যা সবচেয়ে সুনির্দিষ্ট সময় দেখায়। এক সেকেন্ডের একশো কোটি ভাগের সময়কেও নিখুঁত ভাবে দেখাতে পারে পরমাণু ঘড়িগুলি।
১২১৮
ঘড়িতে ব্যবহৃত পরমাণুর বিশেষ কম্পাঙ্ক দেখে সময় বার করে রুবিডিয়াম ঘড়ি। পরমাণু এবং ইলেকট্রন বিভিন্ন মাত্রার শক্তি বহন করে। যখন একটি ইলেকট্রন উত্তেজিত হয় বা আরও শক্তি বৃদ্ধি করে, তখন এটি ভিন্ন কক্ষপথে স্থানান্তরিত হয়। পরমাণু ঘড়িতে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে এটি করা হয়।
১৩১৮
কিন্তু কেন দিকনির্ণায়ক উপগ্রহে পারমাণবিক ঘড়ি প্রয়োজন? দিকনির্ণায়ক উপগ্রহগুলি দিক এবং দূরত্ব নির্ধারণ করে। সেই দূরত্ব নির্ভুল ভাবে নির্ধারণ করতে পরমাণু ঘড়ির প্রয়োজন।
১৪১৮
বিভিন্ন কক্ষপথে এবং বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন উপগ্রহের মধ্যে সময়ের পার্থক্য পৃথিবীর অবস্থান নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। সেই কারণেও নির্ভুল সময় পরিমাপের প্রয়োজন রয়েছে।
১৫১৮
দিকনির্ণায়ক এই উপগ্রহগুলি স্ফটিক ঘড়িও বহন করে, যা সাধারণ সময় বলার জন্য ব্যবহার করা গেলেও পরমাণু ঘড়ির মতো নির্ভুল তথ্য তারা দেয় না।
১৬১৮
সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত পরমাণু ঘড়িগুলিতে সিজ়িয়াম পরমাণু ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ইসরোর পরমাণু ঘড়িতে রুবিডিয়াম পরমাণু ব্যবহার করা হয়েছে।
১৭১৮
এর আগে ইসরোর উপগ্রহগুলিতে ইউরোপীয় সংস্থা ‘অ্যাস্ট্রিয়াম’ থেকে আমদানি করা পরমাণু ঘড়ি ব্যবহার করা হত। ‘নাবিক’-এর প্রথম সাতটি উপগ্রহের প্রতিটিতে তিনটি করে রুবিডিয়াম ঘড়ি ছিল।
১৮১৮
পরে দেখা যায়, ২১টি পরমাণু ঘড়ির মধ্যে ন’টি ত্রুটি ছিল। ফলে পরের দু’টি উপগ্রহে চারটি করে পরমাণু ঘড়ি পাঠানো হয়েছিল। দশমটিতে নিজেদের তৈরি রুবিডিয়াম ঘড়ি পাঠিয়েছে ভারত।