India’s relationship with Israel has been strong since years dgtl
India Israel Relationship
ইজ়রায়েলের অস্ত্রেই পাকিস্তানকে ঘায়েল করেছে ভারত, সেই থেকে অটুট দুই দেশের বন্ধুত্ব
হামাসের সঙ্গে ইজ়রায়েলের যুদ্ধে ভারত ইজ়রায়েলকেই সমর্থন করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু প্রথম দিকে ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক এত ঘনিষ্ঠ ছিল না।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ইজ়রায়েলে প্যালেস্তেনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর পশ্চিম এশিয়ার দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলিও ইজ়রায়েলকে সমর্থন করেছে।
০২২০
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইজ়রায়েলকে সমর্থন করে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, কঠিন সময়ে ভারত ইজ়রায়েলের পাশে আছে।
০৩২০
মোদীর এই অবস্থান আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এই প্রথম ভারত কোনও রাখঢাক না করে সরাসরি ইজ়রায়েলকে সমর্থন করল।
০৪২০
ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইন ইস্যুতে অতীতে বরাবর নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকেছে ভারত। বরং প্যালেস্তাইনের প্রতি সমর্থনই তারা বজায় রেখেছিল দীর্ঘ দিন পর্যন্ত।
০৫২০
ভারতে একটা বড় অংশের মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। পশ্চিম এশিয়ার একমাত্র ইহুদি দেশকে সমর্থন করে ভারতীয় মুসলিমদের চটাতে চায়নি নয়াদিল্লি।
০৬২০
তা ছাড়া, পশ্চিম এশিয়ায় আরবীয় মালভূমির অন্য দেশগুলিও ভারতের নজরে ছিল। ওই এলাকার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে। অপরিশোধিত তেল কেনার জন্য ওই দেশগুলির উপর নির্ভরশীল ভারত।
০৭২০
ইজ়রায়েলকে সমর্থন করলে আরবীয় দেশগুলির বিরাগভাজন হতে হবে ভারতকে, এই ভেবেই সরাসরি সে ভাবে ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ায়নি নয়াদিল্লি। এই বিতর্কে তাদের অবস্থান বরাবর ছিল নিরপেক্ষ।
০৮২০
প্রকাশ্যে সমর্থন না করলেও নব্বইয়ের দশক থেকেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে ভারত এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে। ইজ়রায়েল বিভিন্ন ইস্যুতে প্রকাশ্যেই ভারত সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে।
০৯২০
যদিও একেবারে প্রথম দিকে প্যালেস্তাইনকে ভেঙে ইজ়রায়েল নামে ইহুদিদের নতুন রাষ্ট্র গঠনে ভারতের সমর্থন ছিল না। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতাই করেছিল সদ্য স্বাধীন ভারতের সরকার।
১০২০
মহাত্মা গান্ধী এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে প্যালেস্তাইনের ইহুদিদের প্রতিও তারা সহানুভূতিশীল ছিলেন।
১১২০
১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইজ়রায়েল গঠিত হয়। পরে ১৯৫০ সালে ভারত ইজ়রায়েলের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
১২২০
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারত এবং ইজ়রায়েলের সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হতে শুরু করে। বাণিজ্যিক লেনদেনের পাশাপাশি ভারতকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে ইজ়রায়েল।
১৩২০
ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সঙ্গী ইজ়রায়েল। দুই দেশের মধ্যে প্রতি বছর কয়েকশো কোটি টাকার পণ্য লেনদেন হয়ে থাকে।
১৪২০
১৯৭১ হোক বা ১৯৯৯, পাকিস্তানের সঙ্গে যে কোনও যুদ্ধে ভারতকে অস্ত্রশস্ত্র জুগিয়েছে ইজ়রায়েল। সেখান থেকে আসা অস্ত্রের সাহায্যে একাধিক যুদ্ধে জয় পেয়েছেন ভারতীয় জওয়ানেরা।
১৫২০
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় বায়ুসেনার এমন অস্ত্রের প্রয়োজন ছিল, যা দিয়ে উঁচু পাহাড়ের খাঁজে গুহা বা বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকা শত্রুকে খুঁজে খুঁজে মারা যায়। ইজ়রায়েল থেকে আসা অস্ত্রের সাহায্যে তা সম্ভব হয়।
১৬২০
ভারত এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে ঘোষিত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ১৯৯২ সালে। ইজ়রায়েলের শহর তেল আভিভে দূতাবাস খোলে ভারত। একই সঙ্গে ইজ়রায়েলও নয়াদিল্লিতে তাদের দূতাবাস খোলে।
১৭২০
ইজ়রায়েলের অস্ত্রশস্ত্রের সবচেয়ে বড় খরিদ্দার ভারত। এ দেশে প্রতি বছর যত অস্ত্র আমদানি করা হয়, তার একটা বড় অংশ আসে ইজ়রায়েল থেকে।
১৮২০
রাশিয়ার কাছ থেকেও অস্ত্র কেনে ভারত। রাশিয়ার পর ইজ়রায়েল ভারতের বৃহত্তম অস্ত্রের জোগানদার। ভারতের অস্ত্র আমদানির উপর পশ্চিম এশিয়ার দেশটির অর্থনীতি নির্ভর করে।
১৯২০
২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রথম বার ইজ়রায়েলে যান। ইজ়রায়েলের সমুদ্রসৈকতে একই গাড়িতে ঘুরতে দেখা যায় মোদী এবং নেতানিয়াহুকে। সেই ছবি বিশ্বের কাছে দুই দেশের সুসম্পর্কের বার্তা দিয়েছিল।
২০২০
তবে এ বারের মতো এত সরাসরি ভারত আগে কখনও ইজ়রায়েলকে সমর্থন করেনি। পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধে কোনও পক্ষ নেওয়া ভারতের রীতি ছিল না। চেনা অবস্থান থেকে এ বার বেরিয়ে এসেছেন মোদী।