India’s economy may boost and more Remittance may come from Foreign Migrants dgtl
Indian Economy
পশ্চিম এশিয়ায় পাকিস্তানি শ্রমিকদের চাহিদা কমায় পোয়াবারো ভারতের! ফুলে উঠতে পারে অর্থনীতি
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, পাকিস্তানি শ্রমিকদের চাহিদা পশ্চিম এশিয়ায় যত কমছে, ততই বাড়ছে ভারতীয় এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদা। তবে ভারতীয়েরা শৃঙ্খলাপরায়ণ হওয়ায় তাঁদের চাহিদাই বেশি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ১০:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
পাকিস্তানের অদক্ষ শ্রমিকদের কাজ দিতে চাইছে না সৌদি আরবের মতো পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি! এমনকি, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি ইসলামাবাদকে চিঠি পাঠিয়ে নাগরিকদের ‘সহবত’ শেখানোর উপদেশও দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে সৌদি আরব— কেউই নাকি চায় না যে, পাকিস্তান সরকার তাদের দেশে কর্মী পাঠাক।
০২১৯
একসময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিম এশীয় দেশগুলির সম্পর্ক ভাল ছিল। অনেক পাকিস্তানি সেখানে গিয়ে কাজ করতেন। পাকিস্তানে বিদেশি টাকাও ঢুকত দেদার। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে।
০৩১৯
রিপোর্টে উঠে এসেছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে প্রবাসীদের দ্বারা হওয়া অপরাধের প্রায় ৫০ শতাংশের নেপথ্যে রয়েছেন সে দেশে থাকা পাকিস্তানিরা।
০৪১৯
রিপোর্ট এ-ও বলছে, পাকিস্তানিরা তীর্থযাত্রার নামে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে যাচ্ছেন এবং সেখানে গিয়ে ভিক্ষা করা শুরু করছেন। ভিক্ষার টাকা জমিয়ে কেউ ফিরে আসছেন, তো কেউ সেখানেই রয়ে যাচ্ছেন পাকাপাকি ভাবে।
০৫১৯
অনেকে আবার দুবাইয়ে গিয়ে মহিলাদের আপত্তিকর ভিডিয়ো তুলতে গিয়ে দেশের নাম ডোবাচ্ছেন। কাতারে আবার পাক শ্রমিকেরা হেলমেট পরে কাজ করতে অস্বীকার করেছেন। সব মিলিয়ে পাকিস্তানি শ্রমিক এবং কর্মীদের নিয়ে জেরবার হচ্ছে আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতারের প্রশাসন।
০৬১৯
এই পরিস্থিতি প্রতিবেশী পাকিস্তানের জন্য দুঃসংবাদ হলেও, তা পোয়াবারো হতে পারে ভারতের জন্য। আরও ফুলেফেঁপে উঠতে পারে ভারতীয় অর্থনীতি। বাড়তে পারে ভারতে বিদেশি টাকা ঢোকার পরিমাণও। কিন্তু কী ভাবে?
০৭১৯
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, পাকিস্তানি শ্রমিকদের চাহিদা পশ্চিম এশিয়ায় যত কমছে, ততই বাড়ছে ভারতীয় এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদা। তবে ভারতীয়েরা শৃঙ্খলাপরায়ণ হওয়ায় তাঁদের চাহিদাই বেশি।
০৮১৯
পশ্চিম এশীয় দেশগুলিতে ভারতীয় শ্রমিকদের চাহিদা বাড়লে ভারতে বেকারত্বের পরিমাণ কিছুটা লাঘব হতে পারে বলেও বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন। পাশাপাশি, ভারতের হাতে বিদেশ থেকে আসা অর্থের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
০৯১৯
অনেক ভারতীয়ই বছরের পর বছর কর্মসূত্রে বিদেশে পড়ে থাকেন। বিদেশি মুদ্রায় উপার্জন করেন। ভারত থেকে কর্মসূত্রে যাঁরা বিদেশে যান এবং সেখানে অস্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করেন, তাঁদের বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের হাত ধরে দেশে আসে বিদেশি মুদ্রা। উন্নত হয় দেশের অর্থনীতি।
১০১৯
যে সমস্ত ভারতীয় কর্মসূত্রে বিদেশে গিয়েছেন এবং বছরের পর বছর ধরে ভারতের নাগরিক হিসাবেই বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করছেন, দেশে তাঁদের প্রেরিত অর্থকে বলা হয় ‘রেমিট্যান্স’। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।
১১১৯
ভারতে আত্মীয়স্বজন, নিকটজনদের জন্য বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে থাকেন সেখানে কর্মরতেরা। নিজেরা দেশে ফিরলেও তাঁদের সঙ্গে আসে বিদেশ থেকে অর্জিত অর্থ। ভরে ওঠে দেশের ভান্ডার।
১২১৯
রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছরে বিদেশ থেকে দেশীয় নাগরিকদের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের নিরিখে অন্য অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত। এমনকি, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সেই তালিকায় ভারতই শীর্ষে।
১৩১৯
অর্থাৎ, ওই দু’বছর বিদেশ থেকে ভারতীয় নাগরিকদের মাধ্যমে দেশের ভান্ডারে যত টাকা এসেছে, তা অন্য কোনও দেশের ভান্ডারে যায়নি। এর পরেই রয়েছে মেক্সিকো, চিন, ফিলিপিন্সের মতো দেশগুলি। ভারতের পড়শি পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ এই তালিকায় পিছিয়ে।
১৪১৯
২০২৩ সালে ১২ হাজার কোটি ডলার রেমিট্যান্স হিসাবে ভারতে ঢুকেছিল।
১৫১৯
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ‘রেমিট্যান্স’-এর নিরিখে এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিই। অন্য মহাদেশের কোনও কোনও দেশ এই তালিকায় থাকলেও সংখ্যায় দক্ষিণ এশীয় দেশই বেশি। তবে দেশ ছেড়ে কাজের খোঁজে কোথায় যান ভারতীয়েরা?
১৬১৯
পরিসংখ্যান বলছে, ভারতীয় কর্মীদের চাহিদা সর্বত্রই। সে পশ্চিম এশীয় দেশ হোক কিংবা ইউরোপের কোনও দেশ।
১৭১৯
যদিও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, ওমান, কাতার, কুয়েত, বাহরিনের মতো দেশগুলিতেই ভারত পরিযায়ী শ্রমিকদের চাহিদা বেশি। ভারতীয় শ্রমিকেরাও ওই দেশগুলিতেই কাজ করতে যেতে বেশি আগ্রহী। কারণ, শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বেই ‘রেমিট্যান্স’-এর সবচেয়ে বড় ভান্ডার আরব দেশগুলি।
১৮১৯
যে কোনও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এই ‘রেমিট্যান্স’। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির উন্নতি হয়। আবার দেশে ‘রেমিট্যান্স’ আনার ক্ষেত্রে ভারতীয় শ্রমিকদের জুড়ি মেলা ভার। অন্য দেশের শ্রমিকদের মতো বিদেশে কাজ করতে গিয়ে বেশি খরচ না করে উপার্জিত টাকার বেশির ভাগটাই ভারতীয়েরা দেশে পাঠান।
১৯১৯
তাই এখন পশ্চিম এশীয় দেশগুলিতে পাকিস্তানি শ্রমিকদের চাহিদা কমার ফলে যদি ভারতীয় শ্রমিকদের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পায়, তা হলে তার সুপ্রভাব পড়তে পারে ভারতীয় অর্থনীতিতে।