ভিলার জানলা খুললেই নজরে পড়ে আল্পসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মঁ ব্লাঁ-র স্বর্গীয় দৃশ্য। সুইৎজ়ারল্যান্ডের ক্যান্টন অফ ভ’র জিনজিনস গ্রামে সেটিই সবচেয়ে বড় বাড়ি। তবে একে বাড়ি বলা চলে কি?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
জেনিভাশেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ১০:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
দেশ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে নিজের ‘তাজমহল’ তৈরি করেছিলেন। তবে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর বছর দশেক আগে সেখান থেকে পাড়ি দেন সুইৎজ়ারল্যান্ডে। সম্প্রতি সেখানেই একটি প্রাসাদোপম ভিলা কিনেছেন এক ভারতীয় দম্পতি।
০২১৮
সুইৎজ়ারল্যান্ডের রাজধানী জেনিভা থেকে গাড়ি করে মিনিট পনেরো এগোলেই চোখে পড়ে দেশি দম্পতির ওই বিশালাকার ভিলা।
০৩১৮
ভিলাটির খুঁটিনাটি নিয়ে আজকাল নানা খবরাখবরও প্রকাশিত হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। হবে না-ই বা কেন? সেটির মালিক যে পঙ্কজ এবং রাধিকা ওসওয়াল। দেশ-বিদেশে যাঁদের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ছড়িয়ে রয়েছে।
০৪১৮
আল্পসের কোলে ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৫৫৬ বর্গফুট এলাকার ভিলা কেনার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আরও এক বার শিরোনামে ওসওয়ালরা। সে ভিলার খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে দম্পতির উপরেও নতুন করে আবার নজর পড়েছে।
০৫১৮
ভিলার জানলা খুললেই নজরে পড়ে আল্পসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মঁ ব্লাঁ-র স্বর্গীয় দৃশ্য। সুইৎজ়ারল্যান্ডের ক্যান্টন অফ ভ’র জিনজিনস গ্রামে সেটিই সবচেয়ে বড় বাড়ি। তবে একে বাড়ি বলা চলে কি?
০৬১৮
সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিশ্বের দামি বাড়িগুলির তালিকায় প্রথম দশে রয়েছে ওসওয়ালদের এই ভিলা। এটি কিনতে নাকি খরচ হয়েছে ১,৬৪৯ কোটি টাকা।
০৭১৮
সম্প্রতি এটি কেনার পর পঙ্কজেরা এর নাম দিয়েছেন ‘ভিলা ভারি’। ওসওয়াল দম্পতির দুই মেয়ে, বসুন্ধরা এবং রিধির নামের প্রথম দু’টি ইংরেজি অক্ষর জুড়ে তৈরি তাঁরা জন্ম দিয়েছেন ‘ভারি’ শব্দটির।
০৮১৮
ওসওয়ালদের আগে এই ভিলাটির মালিকানা ছিল ক্রিস্টিনা ওনাসিসের হাতে। যিনি আবার শিপিং সাম্রাজ্যের মালিক গ্রিসের অ্যারিস্টটল ওনাসিসের মেয়ে।
০৯১৮
ক্রিস্টিনার কাছ থেকে ভিলাটির মালিকানা বদল হওয়ার পর এর ভোল বদলে দিয়েছেন পঙ্কজেরা। একে সাজানোর জন্য বহাল করেছেন নামজাদা অন্দরসজ্জা শিল্পী জেফ্রি উইলকিসকে। ওবেরয়দের রাজভিলা বা উদয়ভিলাগুলি থেকে শুরু করে দেশের একাধিক লীলা প্যালেস হোটেলে যাঁর দক্ষতা এবং শৈল্পিক ভাবনার ছোঁয়া দেখা গিয়েছে।
১০১৮
‘ভিলা ভারি’র অন্দরসজ্জা কেমন? সংবাদমাধ্যমের কাছে উইলকিস খোলসা করেছেন, দেশীয় দম্পতির অনুরোধ মেনে এতে ভারতীয় ঐতিহ্যের ছাপ রাখতে চেয়েছেন তিনি। তাতে আধুনিক সময়ের নানা ধাঁচের মিশেল রয়েছে।
১১১৮
উঁচু ছাদ, দামি আসবাবপত্র থেকে শুরু করে ভিলার অন্দরে-বাইরে একাধিক ফোয়ারা— এ সবই রয়েছে তাতে। অন্দরে রয়েছে সূক্ষ্ম তারের কারুকাজ। যা সাধারণত গয়নার গায়ে দেখা যায়।
১২১৮
এ হেন প্রাসাদের মালিকের পঙ্কজ দেশ-বিদেশে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ছড়িয়ে রেখেছেন। ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দম্পতির নিট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০০ কোটি ডলারের বেশি।
১৩১৮
পৈতৃক সূত্রে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য হাতে এসেছে পঙ্কজের। বাবা ছিলেন ওসওয়াল অ্যাগ্রো মিলস এবং ওসওয়াল গ্রিনটেক-এর মালিক অভয়কুমার ওসওয়াল। মণিপাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতকের পড়াশোনার পর ব্যবসায় পা রাখেন পঙ্কজ।
১৪১৮
২০১৬ সালে অভয়ের মৃত্যুর পর নানা ক্ষেত্রে ব্যবসা ছড়িয়ে দেন পঙ্কজ এবং রাধিকা। পেট্রোকেমিক্যালস, রিয়েল এস্টেট, সার থেকে খনিশিল্প— নানা ক্ষেত্রেই পা রেখেছেন তাঁরা।
১৫১৮
এ দেশের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা থেকে সুইৎজ়ারল্যান্ডেও ব্যবসা বাড়িয়েছেন পঙ্কজেরা। তরল অ্যামোনিয়া, ইথানল উৎপাদন থেকে বক্সাইট খনির মালিকানা, সবেতেই নিজের সাম্রাজ্য ছড়িয়েছেন।
১৬১৮
অস্ট্রেলিয়ায় পঙ্কজদের সংস্থা হল বিশ্বের অন্যতম বড় তরল অ্যামোনিয়া উৎপাদনকারী সংস্থা। আফ্রিকায় তাঁর গড়া খনি সংস্থার কাছে রয়েছে ৮৪.৪ কোটি টন বক্সাইটের মালিকানা।
১৭১৮
২০১৩ সালে দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ার পা়ড়ি দিয়েছিলেন পঙ্কজেরা। সেখানেই গড়ে তুলছিলেন নিজেদের বাড়ি— ‘তাজমহল’। তবে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে বসবাসের সময় তাঁদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
১৮১৮
অস্ট্রেলিয়ার থাকাকালীন পঙ্কজদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ওঠে, ১৫ কোটি ডলার প্রতারণা করে নিজেদের জন্য গাড়ি, বাড়ি, ইয়ট কেনার। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সে মামলা চলেছিল। পরে সে দেশ ছেড়ে দেন পঙ্কজেরা। গত ১০ বছর ধরে সুইৎজ়ারল্যান্ডে বসবাস করছেন তাঁরা।