জাপানি শব্দ কামিকাজ়ের অর্থ হল ‘ঐশ্বরিক বাতাস’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আত্মঘাতী জাপানি যুদ্ধবিমানের পাইলটদের বলা হত কামিকাজ়ে। বর্তমানে আত্মঘাতী হামলা চালাতে সক্ষম ড্রোনগুলির দুনিয়া জুড়ে এই ধরনের নামকরণ করা হয়েছে। চিন, রাশিয়া, ইজ়রায়েল থেকে শুরু করে ইরান ও তুরস্কের মতো দেশের হাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে এই ‘কমিকাজ়ে’ ড্রোন।
ভারতীয় সেনার অস্ত্রাগারে জায়গা পাওয়া খড়্গ আত্মঘাতী ড্রোনটির শক্তি যে চিন ও পাকিস্তানের রাতের ঘুম উড়িয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। কম ওজনের উচ্চ গতির এই মানববিহীন উড়ুক্কু যানটিতে রয়েছে জিপিএস নেভিগেশন সিস্টেম এবং অত্যন্ত শক্তিশালী ক্যামেরা। রণাঙ্গন থেকে অনেক দূরে বসে এই দুয়ের সাহায্যে শত্রুকে চিহ্নিত করে তার উপর নিখুঁত নিশানায় হামলা করতে পারবে সেনা।
মহড়া শেষে ভারতীয় সেনার ‘ড্রোন ফৌজি’দের সঙ্গে কথা বলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল পুষ্কর। এই সৈনিকমণ্ডলীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘খড়্গ কর্পস্’। লেফটেন্যান্ট জেনারেল পুষ্কর তাঁদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। যে কোনও ফ্রন্টে চিন ও পাকিস্তানের আক্রমণ প্রতিহত করে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানতে তাঁরা সক্ষম বলে জানিয়েছেন সেনার ওই শীর্ষ অফিসার।
১৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমে সক্ষম নাগাস্ত্র ১-এর সাহায্যে দু’কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারবে সেনা। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল শত্রুরা জায়গা বদল করলে বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে একে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ড্রোনটির আরও উন্নত সংস্করণ তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নাগপুরের সংস্থা। এ বছরের জুনে বরাত পাওয়া ৪৮০টির মধ্যে ১২০টি ড্রোন ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দিয়েছে ইকোনমিক এক্সপ্লোসিভ লিমিটেড।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বহুল পরিমাণে খড়্গের মতো কামিকাজ়ে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি ও কনভয়ে এই ধরনের আত্মঘাতী উড়ুক্কু যান দিয়ে হামলা চালিয়েছে দু’পক্ষই। পাশাপাশি, বায়ুসেনার ঘাঁটি, তেলের ডিপো এবং হাতিয়ারের গুদাম অহরহ উড়িয়েছে খড়্গ-সম ড্রোন।
২০২০ সালে আর্মেনিয়া ও আজ়ারবাইজানের মধ্যে নাগোরনো কারাবাখের অধিকার নিয়ে চলা যুদ্ধে প্রথম বার বহু পরিমাণে ড্রোনের ব্যবহার লক্ক্ষ করেছিল গোটা বিশ্ব। মানববিহীন উড়ুক্কু যানগুলিই একরকম এর ভাগ্য গড়ে দিয়েছিল। ওই সংঘাতের দিকে কড়া নজর রেখেছিলেন ভারতের ফৌজি অফিসারেরা। পরবর্তী বছরগুলিতে ড্রোন-শক্তি বৃদ্ধির দিকে নজর দেন তাঁরা।
বর্তমানে ভারতীয় সেনার হাতে বিভিন্ন ধরনের ড্রোন রয়েছে। সেগুলির কোনওটি আত্মঘাতী, কোনওটি আবার শুধুই নজরদারির কাজে ব্যবহার করার জন্য। এই তালিকায় রয়েছে শিল্প সংস্থা টাটার তৈরি অ্যাডভান্স লয়েটারিং সিস্টেম ‘এএলএস-৫০’, ইজ়রায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ়ের ‘স্পাইক ফায়ারফ্লাই’ এবং পোলিশ সংস্থা ওয়ারমেটের ‘এলবিট স্কাইস্ট্রাইকার’।
এ ছাড়া আমেরিকা থেকে ৩০টি অত্যাধুনিক ‘এম কিউ-৯ রিপার’ (অন্য নাম প্রিডেটর বি) ড্রোন কিনছে নয়াদিল্লি। এগুলি অবশ্য আত্মঘাতী মানববিহীন উড়ুক্কু যান নয়। সংশ্লিষ্ট ড্রোনগুলি থেকে ‘হেলফায়ার’ ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে আক্রমণ শানানো যায়। এই ড্রোন ব্যবহার করে ইরানি কম্যান্ডার কাসেম সুলেমানি এবং আল কায়দার শীর্ষনেতা আবু বকর অল জওয়াহিরিকে নিকেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy