India wants to promote rupees in International Trade against US dollar dgtl
Special Rupee Vostro Account India
‘হাত’ লম্বা হচ্ছে টাকার, ডলারের দুর্বলতার সুযোগে মাথা তুলতে পারবে ভারতের ‘রুপি’?
আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার বিমুখতার সুযোগ নিতে চাইছে ভারত। কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বাইরে টাকার প্রসার ঘটাতে আগ্রহী। সেই সংক্রান্ত একাধিক পদক্ষেপও করা হয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৩ ০৭:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বাজারে আমেরিকান ডলারের একচ্ছত্র আধিপত্য। ডলারেই অধিকাংশ পণ্যের কেনাবেচা হয়ে থাকে। সেই কারণেই ফুলেফেঁপে ওঠে আমেরিকার অর্থনীতি।
০২১৮
আমেরিকা বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি। তার অন্যতম কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের মুদ্রা বা ডলারের সীমাহীন গুরুত্ব। ডলার ছাড়া দেশের বাইরে ব্যবসা করা যায় না বললেই চলে।
০৩১৮
তবে ইদানীং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ‘ডি-ডলারাইজেশন’ বা ডলার বিমুখতার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোনও কোনও দেশ ডলারের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে।
০৪১৮
অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনে ডলারের বিকল্প হিসাবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে উঠে আসছে চিনের ইউয়ান কিংবা রাশিয়ার রুবেল। তবে খুব একটা পিছিয়ে নেই ভারতের টাকাও।
০৫১৮
আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার বিমুখতার সুযোগ নিতে চাইছে ভারতও। কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বাইরে টাকার প্রসার ঘটাতে আগ্রহী। সেই সংক্রান্ত একাধিক পদক্ষেপও করা হয়েছে।
০৬১৮
ইকনমিক টাইমসের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) বিদেশের বাজারে ভারতের টাকার প্রচার করার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে অনুরোধ করেছে।
০৭১৮
আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সংগঠনগুলির কাছে ভারতের টাকা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম ‘স্পেশাল রুপি ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট’ বা এসআরভিএ। এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই বিশ্বের বাজারে আরও পরিচিত হবে ভারতের টাকা।
০৮১৮
এসআরভিএ কী? এটি একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, যা বিদেশি ব্যাঙ্কের জন্য দেশীয় ব্যাঙ্কের দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। দেশীয় টাকাতেই এই ব্যাঙ্কে অর্থ সংরক্ষিত থাকে।
০৯১৮
গত বছরের ২২ জুলাই ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) এসআরভিএ-র মাধ্যমে ভারতের টাকায় বিদেশে বাণিজ্যের বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।
১০১৮
বিদেশে টাকার প্রচার এবং আগ্রহ বৃদ্ধির জন্যই ‘স্পেশাল রুপি ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট’-এর বন্দোবস্ত করেছে আরবিআই। এর মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্য ভারতীয় মুদ্রায় করা সম্ভব।
১১১৮
আরবিআইয়ের তত্ত্বাবধানে বিদেশের অনেক ব্যাঙ্কই ভারতের ব্যাঙ্কে ইতিমধ্যেই ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছে। ভারতের টাকায় বাণিজ্যও শুরু হয়েছে। তবে তার পরিমাণ এখনও বেশ কম।
১২১৮
রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, বোৎসোয়ানা, জার্মানি, ব্রিটেন, ফিজি, গায়ানা, ইজ়রায়েল, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, মরিশাস, মায়ানমার, নিউ জ়িল্যান্ড, ওমান, তানজ়ানিয়া, উগান্ডার মতো মোট ১৮টি দেশকে ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট খোলার সম্মতি দিয়েছে আরবিআই।
১৩১৮
এই দেশগুলি নিজ নিজ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলারে আগ্রহ হারাচ্ছে। ডলারের বিকল্প হিসাবে তারা ভারতীয় টাকায় উৎসাহ প্রকাশ করেছে।
১৪১৮
ইদানীং ডলারের পরিবর্তে চিন, রাশিয়া, জাপান, সৌদি আরবের মুদ্রায় আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে। ভারত এখন তার নিজস্ব টাকায় ৪৪টির বেশি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করে।
১৫১৮
ডলার বিমুখতা এবং সেই সুযোগে ভারতের টাকার মাথা তোলার চেষ্টার অন্যতম কারণ কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। পূর্ব ইউরোপে এই যুদ্ধের কারণেই অন্য দেশের মুদ্রার কদর কিছুটা হলেও বেড়েছে।
১৬১৮
যুদ্ধের কারণে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলি রাশিয়ার উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যও নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। ডলারে বাণিজ্য করতে না পেরে তাই অন্য দেশগুলি বিকল্পের সন্ধান করেছে।
১৭১৮
নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার সঙ্গে বর্তমানে ডলারে বাণিজ্য সম্ভব নয়। তাই রাশিয়ার মুদ্রা ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি চিনের ইউয়ান, সৌদি আরবের ডিরহামও এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
১৮১৮
ভারতের টাকা যদি আন্তর্জাতিক বাজারে নিজের জায়গা করে নিতে পারে, তবে দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে তা সুখবর বয়ে আনতে পারে। অন্য দেশ ভারতের টাকার মাধ্যমে বাণিজ্য করলে টাকার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে টাকার দামও।