India takes lead on financial relief in global south summit dgtl
South Global Summit
বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে চিনের ঋণ-জাল, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলিকে বাঁচাতে রক্ষকের ভূমিকা নিচ্ছে ভারত
আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিকে একছাতার তলায় আনতে বদ্ধপরিকর ভারত।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৪ ১৫:১৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও এক বার গ্লোবাল সাউথের দেশগুলিকে একজোট হওয়ার ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অর্থনৈতিক ও প্রতিকূলতার মোকাবিলায় সবাইকে একত্রিত হয়ে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন তৃতীয় ‘ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ সামিট’-এর ভার্চুয়াল সম্মেলনে।
০২২১
গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রনেতাদের বার্তা দিয়ে মোদী বলেছেন, খাদ্য ও শক্তি নিরাপত্তা সমস্যা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সব সময়ই অগ্রণী ভূমিকা নিতে প্রস্তুত ভারত।
০৩২১
গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত দেশ হিসাবে মোট ১২৩টি দেশ ভার্চুয়াল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করলেও উল্লেখযোগ্য ভাবে অনুপস্থিতি লক্ষ করা গিয়েছে চিন ও পড়শি পাকিস্তানের।
০৪২১
গ্লোবাল সাউথ সামিটের আয়োজক দেশ হিসাবে ভারতের চিন ও পড়শি পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ না জানানোর কথা জানিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ভার্চুয়াল সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস।
০৫২১
আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিকে একছাতার তলায় আনতে বদ্ধপরিকর ভারত।
০৬২১
২০২৩ সালের গোড়া থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ‘ভয়েস অফ গ্লোবাল সামিট’-এর আয়োজন করে আসছে ভারত। এটি তৃতীয় সম্মেলন।
০৭২১
চিনকে ঠেকাতে ঠিক কী অর্থনৈতিক কৌশল নেওয়ার পথে হাঁটতে চাইছে ভারত? ভারতের পড়শি দেশগুলির সঙ্গে চিনের সখ্য কমাতে কতটা কার্যকরী হবে সেই কৌশল?
০৮২১
মানবকেন্দ্রিক, বহুমাত্রিক এবং বিভিন্ন উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে সমবেত পদক্ষেপের কথা বলেন তিনি। তাই গ্লোবাল সাউথের দেশগুলির উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে একগুচ্ছ আর্থিক তহবিল গড়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
০৯২১
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, এই গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিতে সর্বজনীন ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য সামাজিক প্রভাব তহবিলে (সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফান্ড) ভারত প্রাথমিক ভাবে প্রায় ২০৯ কোটি টাকার অনুদান দেবে।
১০২১
আর এই উন্নয়ন তহবিলের অর্থ বরাদ্দের নামে ভারত কখনও গরিব দেশগুলির ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেবে না। বরং দেশগুলির উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
১১২১
মোদীর এই বক্তব্যকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে এ ভাবেই চিনের আর্থিক ফাঁদের কবল থেকে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলিকে বার করে এনে তাদের সঙ্গে সম্পর্কও মসৃণ করার চেষ্টা চালাবে ভারত।
১২২১
গ্লোবাল সাউথের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন ইউনূসও।
১৩২১
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্লোবাল সাউথের সব ক’টি দেশই আর্থিক ভাবে অনগ্রসর দেশের তালিকাভুক্ত। আর্থিক ভাবে দুর্বল দেশগুলিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অছিলায় ঋণের ফাঁদে ফেলছে চিন।
১৪২১
তথ্য বলছে, ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে চিন মোট ১৬৫টি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত দেশকে ঋণ দিয়েছে। চিনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে রাশিয়া। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভেনেজুয়েলা।
১৫২১
কার্যত গোটা দক্ষিণ এশিয়াকেই ঋণের ফাঁদে ফেলে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে রেখেছে চিন। যে সব দেশ আগে থেকেই চিনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সঙ্কটে ছিল এবং নতুন অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে, তাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে (বেল আউট) চিন নতুন করে ঋণ দিয়েছে।
১৬২১
চিনের কাছ থেকে বেল আউট হিসাবে ঋণ নেওয়া দক্ষিণ এশিয়া দু’টি শীর্ষ দেশ হল পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বরাবরই দরাজ হস্ত চিনের।
১৭২১
পিছিয়ে পড়া দেশগুলির পুনর্গঠন ও উন্নয়নের অজুহাতে তারা ঋণ দেয় এবং চুক্তিতে প্রলুব্ধ করে। এমনটাই অভিযোগ তুলেছে পশ্চিমি দেশগুলি।
১৮২১
চিনের দেওয়া বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এখন বিশ্বের জিডিপির ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে, এমনকি কেউ কেউ মনে করছেন, আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ) প্রতিদ্বন্দ্বীর ভূমিকায় নামতে চলেছে চিন।
১৯২১
আর্থিক ভাবে দুর্বল দেশগুলিকে তাদের পরিশোধের ক্ষমতার বাইরে ঋণ দিয়ে ফাঁদে ফেলে চিন। পরে যখন ঋণ মেটাতে না পেরে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, তখনই চিনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় দেশগুলি।
২০২১
ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং নেপালের মতো দেশগুলি চিন ঋণ-ফাঁদ কূটনীতির কাছে নতিস্বীকার করেছে এমনটাই বলছে তথ্য।
২১২১
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি মোদীর কথায় উঠে এসেছে সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রসঙ্গও। সমাজের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ। এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে একটি সমবেত পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।