How Light Combat Helicopter Prachand works in high altitude dgtl
Prachand Light Combat Helicopter
চিনা ড্রোন বা পাকিস্তানি ট্যাঙ্ক, নানা রোগের এক দাওয়াই ‘প্রচণ্ড’ এল বায়ুসেনার সমর-সম্ভারে
জানা গিয়েছে, ৯৫টি প্রচণ্ড হেলিকপ্টার ভারতীয় সেনার হাতে যাচ্ছে। তার মধ্যে কয়েকটি ইতিমধ্যেই কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে। ৬৫টি প্রচণ্ড পাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২২ ১৪:৩৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর পরাক্রম এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গেল ‘প্রচণ্ডে’র অন্তর্ভুক্তিতে। সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ‘লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার’ হিমালয়ের উচ্চতাতেও অনায়াসে শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করার ক্ষমতা রাখে। পাকিস্তানের ট্যাঙ্ক কিংবা চিনের ড্রোন— প্রচণ্ডের পরাক্রমের সামনে থরহরি কম্প সব!
০২১৫
এই ‘লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার’ বা এলসিএইচ তৈরি হয়েছে সরকারি হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড বা ‘হ্যাল’-এর কারখানায়। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল এমন হেলিকপ্টার তৈরি করা, যা হিমালয়ের উচ্চতায় শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করতে পারবে।
০৩১৫
সোমবার, মহাষ্টমীর দিন রাজস্থানের জোধপুরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপস্থিতিতে এই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ হেলিকপ্টার বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। হাজির ছিলেন ‘চিফ অফ এয়ার স্টাফ’ এয়ার চিফ মার্শাল ভিআর চৌধরি।
০৪১৫
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানান, এই হেলিকপ্টারটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রচণ্ড’। রাজনাথ বলেন, ‘‘আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিশ্বের সামনে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে উৎকর্ষ আবার প্রমাণিত হল।’’
০৫১৫
প্রচণ্ডকে বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ার কর্মসূচিতে সোমবার জোধপুরে রাজনাথ বলেন, ‘‘আমাদের একটি আক্রমণে সক্ষম হেলিকপ্টার প্রয়োজন ছিল। ১৯৯৯-এর কার্গিল যুদ্ধের সময় সেই অভাব অনুভূত হয়েছিল। প্রচণ্ড দু’দশকের নিরন্তর গবেষণার ফল। সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের নিরিখে আজকের দিনটি মাইলফলক হিসেবে থেকে যাবে।’’
০৬১৫
এই লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারটি আগামী বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতীয় সেনা এবং ভারতীয় বায়ুসেনার মাথার অন্যতম সেরা পালক হয়ে থাকবে— এমনটাই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। অনায়াস দক্ষতার সঙ্গে কাজ শেষ করায় প্রচণ্ডের ক্ষমতা প্রশ্নাতীত।
০৭১৫
ভারতীয় সেনা এবং ভারতীয় বায়ুসেনার চাহিদা অনুযায়ী প্রচণ্ড সমস্ত মাপকাঠিতে সংশয়াতীত সাফল্য অর্জন করেছে। প্রচণ্ডের ওজন ৫.৮ টন। রয়েছে দু’টি ইঞ্জিন। ইতিমধ্যেই হেলিকপ্টার থেকে বিভিন্ন অস্ত্র অব্যর্থ নিশানায় লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করায় সাফল্য অর্জন করেছে।
০৮১৫
ভারতের কাছে আছে আমেরিকায় তৈরি ‘অ্যাপাচে’ চপারও। যা আকারে প্রচণ্ডের চেয়ে অনেকটাই বড়। কিন্তু নির্দিষ্ট উদ্দেশে তৈরি প্রচণ্ড হিমালয়ের উচ্চতাতেও অনায়াসে লক্ষ্যবস্তুর উপর নিখুঁত আঘাত হানতে সক্ষম। ভারবহনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ভারতের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ হেলিকপ্টারটি তৈরি।
০৯১৫
লাদাখে পরীক্ষামূলক ভাবে এই চপার উড়ে বেড়িয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন চিনা ড্রোনকে যেমন অনায়াস দক্ষতায় আঘাত হানতে পারছে, তেমনই মাটির উপর দিয়ে চলা ট্যাঙ্ককেও ছিন্নভিন্ন করে দিতে সমর্থ প্রচণ্ড। কারণ এতে রয়েছে, ‘এয়ার টু সারফেস অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিউনিশনস’।
১০১৫
এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ৯৫টি প্রচণ্ড ভারতীয় সেনার হাতে যাচ্ছে। তার মধ্যে কয়েকটি ইতিমধ্যেই কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে। ৬৫টি প্রচণ্ড হেলিকপ্টার পাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা।
১১১৫
এই প্রকল্পে ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য প্রাথমিক বরাদ্দ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। হেলিকপ্টারটির ক্রমান্বয়ে আধুনিকীকরণের জন্যও বিরাট অঙ্কের অর্থ ধরা রয়েছে। যা আগামী দিনে খরচ করা হবে।
১২১৫
হিমালয়ের উচ্চতায় অনায়াস দক্ষতায় শত্রুনিধনের পাশাপাশি প্রচণ্ড হেলিকপ্টার শত্রুপক্ষের বাঙ্কার উড়িয়ে দিতেও পারদর্শী। এ ছাড়াও জঙ্গল এলাকায় সেনা অভিযান চালানো এবং শহরাঞ্চলে গেরিলা মোকাবিলার কাজেও দক্ষ প্রচণ্ড। এই হেলিকপ্টার পদাতিক বাহিনীকেও নিরাপত্তা দিতে সক্ষম।
১৩১৫
প্রচণ্ড হেলিকপ্টারে ৭০ মিলিমিটারের ১২-১২ রকেটের দু’টি প্যাড লাগানো আছে। এ ছাড়াও হেলিকপ্টারের ‘নোজ’ বা একেবারে সামনের অংশে একটি ২০ মিলিমিটারের বন্দুক লাগানো আছে। এই বন্দুক ১১০ ডিগ্রির মধ্যে যে কোনও নিশানায় গুলি চালাতে সক্ষম।
১৪১৫
প্রচণ্ড হেলিকপ্টারে ফ্রান্স থেকে বিশেষ ভাবে আনানো ‘মিস্ট্রাল’ এয়ার টু এয়ার বা আকাশ থেকে আকাশে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র এবং আকাশ থেকে মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র মজুত আছে।
১৫১৫
এই হেলিকপ্টারটি এতটাই আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যে, পাইলট বা হেলিকপ্টার চালক ককপিটে বসেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এ জন্য দূরভাষের মাধ্যমে মাটির সঙ্গে যোগাযোগ রাখারও কোনও প্রয়োজন হবে না।