How Joe Biden can be replaced as party nominee in US Presidential Election by the democrats dgtl
US Presidential Election 2024
ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী কি বদলে যাবেন শেষ মুহূর্তে? তিন উপায়ে সরানো যাবে বাইডেনকে, কলকাঠি নাড়ছেন এক প্রাক্তনী
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে ডেমোক্র্যাটেরা বাইডেনকে সামনে রেখে এগোচ্ছিলেন। ট্রাম্পের সঙ্গে ফের তাঁর লড়াই দেখতে চলেছে বিশ্ব। কিন্তু ছন্দপতন ঘটেছে প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪ ০৮:০২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
তাঁর বয়স ৮১ বছর। নির্বাচনে জিতলে আরও চার বছর তাঁকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পৌঁছে যাবেন ৮৬ বছরে। এমনিতেই তিনি আমেরিকার ইতিহাসের প্রবীণতম প্রেসিডেন্ট। জিতে দ্বিতীয় পর্ব সম্পন্ন করতে পারলে নজির তৈরি হবে।
০২২৩
নানা সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে সাতপাঁচ ভেবেই এ বারেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে ডেমোক্র্যাটেরা বাইডেনকে তুলে ধরেছিলেন। আবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর লড়াই দেখতে চলেছে বিশ্ব। কিন্তু ছন্দপতন ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার।
০৩২৩
বাইডেন এবং ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বিতর্ক সভায় (প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট) মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেখানে বাইডেনের আচরণ, তাঁর ভাষণ ডেমোক্র্যাটদের মুখ পুড়িয়েছে বলা যায়। এমনকি, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও তা নিয়ে হাসাহাসি চলছে। ভেসে আসছে বিদ্রুপ।
০৪২৩
প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে অসংলগ্নতা দেখা গিয়েছে বাইডেনের মধ্যে। বার বার তিনি কথার খেই হারিয়ে ফেলেছেন। কথা জড়িয়ে গিয়েছে তাঁর। যা নিয়ে ট্রাম্পও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। এর পরেই ওয়াশিংটন থেকে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে বাইডেনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে।
০৫২৩
রিপোর্টে দাবি, বাইডেন সারা দিনে ছ’ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারেন না। বিকেলে ৪টের পর নাকি চোখে ভাল দেখতেও পান না। প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের পর শারীরিক বাধ্যবাধকতার কথা বাইডেন নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন।
০৬২৩
উত্তর ক্যারোলিনায় একটি ভাষণে তিনি বলেছেন, তিনি আগের মতো তর্ক করতে পারেন না। আগের মতো হাঁটতে পারেন না, আগের মতো স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেন না। তবে প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার ক্ষমতা তাঁর রয়েছে বলেই জানিয়েছিলেন বাইডেন।
০৭২৩
তবে বাইডেনের উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। বুধবার নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি নতুন রিপোর্টে দাবি, বাইডেন ভোটে লড়বেন কি না, তা নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছেন। প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের পর ডেমোক্র্যাটেরা তাঁর উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। ঘনিষ্ঠমহলে নাকি বাইডেন এ-ও বলেছেন, নিজের ভাবমূর্তি হয়তো তিনি আর উদ্ধার করতে পারবেন না। সংবাদমাধ্যমে নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি বাইডেনের ওই ঘনিষ্ঠ।
০৮২৩
বাইডেন প্রথম দিকে আত্মবিশ্বাসের কথা জানালেও ডেমোক্র্যাটেরা ভাবতে শুরু করেছেন, কী উপায়ে প্রার্থী বদল করা সম্ভব। আর যদি তা হয়, তবে ডেমোক্র্যাটদের তরফে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী কে হতে পারেন?
০৯২৩
প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের পর প্রার্থিপদ বদলের প্রক্রিয়া বেশ জটিল। অনেকে প্রায় অসম্ভব বলেও মনে করছেন। তবে আমেরিকার নিয়ম বলছে, এখনও বাইডেনকে বদল করা সম্ভব। তিনটি উপায় রয়েছে ডেমোক্র্যাটদের সামনে।
১০২৩
ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির সদস্য এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নির্বাচন সংক্রান্ত বইয়ের লেখক এলাইন কামার্কের মতে, প্রার্থী বদলের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি একটাই। বাইডেন নিজে যদি দৌড় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন, তবে সব অনেক সহজে হয়ে যাবে।
১১২৩
নভেম্বরের আগে বাইডেন সরে দাঁড়ালে ডেমোক্র্যাটেরা নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন মেনে অন্য প্রার্থীকে ট্রাম্পের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারবেন। প্রথম দিকে সেই সম্ভাবনা নেই বলে মনে হলেও তা ক্রমে জোরালো হচ্ছে।
১২২৩
বাইডেন নিজে না সরে দাঁড়ালে অবশ্য প্রার্থিপদ থেকে এই মুহূর্তে তাঁকে সরানো কঠিন। কারণ প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট হয়ে গিয়েছে। এর পর প্রার্থী বদল করার সুযোগ খুব একটা থাকে না। সেই প্রক্রিয়া অনেক জটিল হয়ে ওঠে।
১৩২৩
প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট হয়ে যাওয়ার পরেও অবশ্য বলপূর্বক বাইডেনকে সরাতে পারেন ডেমোক্র্যাটেরা। তাঁর পরিবর্তে যিনি প্রার্থী হতে চান, তাঁকে অন্তত ৬০০ জন ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধির স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে হবে।
১৪২৩
আমেরিকার প্রতি প্রদেশ থেকে অন্তত ৫০ জন ডেমোক্র্যাটের স্বাক্ষর প্রয়োজন হবে ওই প্রার্থীর। যা মোট ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধির অন্তত ১৩ শতাংশ। কিন্তু ৯৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি বাইডেনের আজ্ঞাবহ। তাঁদের সমর্থন পাওয়া সহজ হবে না।
১৫২৩
ডেমোক্র্যাটদের প্রতিনিধি বলতে বিভিন্ন নেতা এবং নির্বাচিত আধিকারিকের কথা বলা হচ্ছে। আমেরিকায় তাঁদের সংখ্যা ৭০০-র বেশি। ডেমোক্র্যাটদের নিয়ম অনুযায়ী, তাঁরা চাইলে নিজেদের মত বদল করতে পারেন।
১৬২৩
বাইডেনকে প্রার্থিপদ থেকে সরানোর তৃতীয় উপায় হল, ডেমোক্র্যাটদের নিয়ম বদল। তাঁরা চাইলে যে কোনও মুহূর্তে পার্টির নিয়ম বদলে ফেলতে পারেন। বাইডেনকে নিতান্তই বদলাতে হলে শেষ অস্ত্র হিসাবে তা ব্যবহার করা হতে পারে।
১৭২৩
প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে বাইডেনের প্রদর্শনে আশাহত হয়ে ডেমোক্র্যাটেরা অনেকেই তাঁর বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছেন বলে খবর। তবে অনেকেই আবার বলছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়তে চলেছেন বাইডেনই। তাঁকে সরানোর জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে ডেমোক্র্যাটেরা সহজে যাবেন না।
১৮২৩
যদি বাইডেনকে একান্তই সরাতে হয়, তাঁর জায়গায় ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন কমলা হ্যারিস। তিনি এই মুহূর্তে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা বাইডেনের বিকল্প হিসাবে প্রথম পছন্দ হতে পারেন ডেমোক্র্যাটদের।
১৯২৩
এ ছাড়াও যে নামগুলি বাইডেনের বিকল্প হিসাবে উঠে এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম হল ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসম, ইলিনয়িসের গভর্নর জেবি প্রিৎজ়কার এবং মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার। তাঁরা প্রত্যেকেই এখনও পর্যন্ত বাইডেনের পক্ষেই রয়েছেন।
২০২৩
বাইডেনের শারীরিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা না করেই কেন ডেমোক্র্যাটেরা আবার তাঁকেই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আমেরিকার বিভিন্ন মহলে। এতে ট্রাম্পের সুবিধা হয়েছে বলেও মত অনেকের।
২১২৩
কয়েকটি রিপোর্টে দাবি, বাইডেনকে সরাতে নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে খবর। যদিও প্রকাশ্যে বাইডেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
২২২৩
অনেকে মনে করছেন, স্ত্রী মিশেল ওবামাকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরতে চান বারাক। বাইডেনের সম্ভাব্য বিকল্পদের তালিকায় তাঁর নামও প্রথম দিকেই রয়েছে। এমনকি, আমেরিকার কিছু সমীক্ষা দাবি করছে, ট্রাম্পকে ১১ পয়েন্টে হারিয়ে দিতে পারেন মিশেল।
২৩২৩
প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ডেমোক্র্যাটদের ঘরে, তার জট কী ভাবে খোলা হয়, শেষ পর্যন্ত তাঁরা বাইডেনেই আস্থা রাখেন কি না এবং সর্বোপরি আমেরিকার মানুষ আগামী নভেম্বরে কী রায় দেয়, সেটাই দেখার।